দিনের ঠিক নেই। কোনও মাসে হল। আবার কোনও মাসে তার দেখাই পাওয়া গেল না। আবার, ঋতুস্রাব শুরু হল ঠিকই, কিন্তু দিন দুয়েকের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেল। কিছু দিন পর হয়তো ফের শুরু হল। ঋতুচক্রের এমন খামখেয়ালি স্বভাবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হয় অনেক মহিলাকে।
সন্তানধারণ বা অন্য কোনও অসুবিধা না থাকলে সাধারণত ঋতুস্রাব শেষ হওয়ার পর থেকে ২৮ দিনের মাথায় আবার তা শুরু হওয়ার কথা। তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, কারও কারও ক্ষেত্রে সেই ব্যবধান ২১ থেকে ৩৫ দিন পর্যন্তও হতে পারে। কিন্তু এই সময়কালে যদি অস্বাভাবিক কোনও পরিবর্তন আসে সে ক্ষেত্রে চিন্তার কারণ রয়েছে। ঋতুস্রাব শুরু হলে তা ৪ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। অনেকের ক্ষেত্রে এই নিয়মেরও ব্যতিক্রম হয়। স্বাভাবিক ঋতুচক্রে ছন্দপতন নানা কারণে হতে পারে। হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া, হরমোনের হেরফের, মানসিক চাপ, বিপাকজনিত সমস্যা, এমনকি অতিরিক্ত শরীরচর্চা করলেও এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, সঠিক চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়ম করে রোজ যদি মণ্ডূকাসন অভ্যাস করা যায়, তা হলে আসান হতে পারে ঋতুচক্রের নানাবিধ সমস্যা।
সংস্কৃতে ‘মণ্ডূক’ কথাটির অর্থ ব্যাঙ। অর্থাৎ, এই আসন করার সময়ে দেহের ভঙ্গি হবে ব্যাঙের মতো। মণ্ডূকাসন খুব সহজ নয়। তাই ধৈর্য ধরে, একাগ্রতার সঙ্গে ভঙ্গি অভ্যাস করতে হবে।
আরও পড়ুন:
কী ভাবে করবেন?
· প্রথমে বজ্রাসনের ভঙ্গিতে বসুন। অর্থাৎ হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের উপর বসুন।
· এ বার খানিকটা হামাগুড়ি দেওয়ার ভঙ্গিতে ধীরে ধীরে মাটিতে উপুড় হওয়ার চেষ্টা করুন।
· সামনের দিকে হাত দুটো ছড়িয়ে দিন। দুই বাহুর বাইরের অংশ মাটিতে স্পর্শ করবে। দুই হাতের তালু একত্রিত করে মুষ্টিবদ্ধ ভাবে রাখতে হবে।
· দু’টি পা ছড়িয়ে দিন দু’পাশে। এমন ভাবে ছড়াতে হবে, যেন দু’টি হাঁটু মাটি স্পর্শ করে থাকে। কিন্তু দু’টি ঊরু মাটি থেকে খানিকটা উপরে থাকে। খেয়াল করবেন, দেখতে অনেকটা ব্যাঙের মতো লাগবে।
· থুতনি, বুক এবং পেটের উপরিভাগ মাটির সঙ্গে ঠেকিয়ে রাখতে হবে। তবে শুরুতেই সমস্যা হতে পারে। অভ্যাস হয়ে গেলে ধীরে ধীরে এই ভঙ্গিও সহজে করতে পারবেন।
· এই অবস্থানে থাকুন ৩০ সেকেন্ড। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেবেন। আবার ফিরে যাবেন বজ্রাসনে। এই আসন পাঁচ বার অভ্যাস করতে পারেবন।
আরও পড়ুন:
কেন করবেন?
দেহের নিম্নাঙ্গের নমনীয়তা বৃদ্ধি করবে এই আসন। কোমর বা নিতম্বের অস্থিসন্ধির ব্যথায় আরাম দেয় মণ্ডূকাসন। ‘জার্নাল অফ অর্থোপেডিক রিউম্যাটোলজি’-তে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই আসন অভ্যাস করলে পিঠ, কোমরের পেশির ব্যথা নিরাময় হয়। হজম সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনকি ইনসুলিন হরমোনের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও সহায়তা করে মণ্ডূকাসন।
আরও পড়ুন:
সতর্কতা:
পায়ে, হাঁটুতে কিংবা গোড়ালিতে চোট পেয়ে থাকলে এই আসন করবেন না। ‘টেনিস এলবো’ থাকলে বা হাত কমজোরি হলেও এই আসন করা যাবে না। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এই আসন করা একেবারেই নিষিদ্ধ।