কানে সারা ক্ষণ কী যেন বাজছে। ছবি- সংগৃহীত
বছর ৫০-এর প্রদীপবাবু পেশায় আইনজীবী। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি আদালতে যেতে পারছেন না। ঘুম থেকে ওঠা মাত্রই তাঁর মনে হচ্ছে দূরে কোথাও যেন শঙ্খ বাজছে। হতেই পারে। তাই এই নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেননি প্রথম দিকে। কিন্তু ঘণ্টা তিনেক পরে কাজে বেরিয়েও সেই একই অবস্থা। সাদা-কালো টিভিতে হঠাৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে একটানা যে তীব্র আওয়াজ হত, তার সঙ্গে যেন অনেকটা মিল রয়েছে। কিছুতেই তার থেকে মুক্তি মিলছে না।
শুধু ওই আইনজীবী নন, এমন সমস্যা অনেকেরই হয়। শঙ্খ না হলেও কখনও কানের মধ্যে একটানা ঘণ্টা বাজে, কখনও বা সাইকেলের বেল। এ সব লক্ষণ নতুন নয়। অনেকে মনে করেন, কানে জল ঢুকে বা ঠান্ডা লেগে এই ধরনের আওয়াজ হতে পারে। কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, সারা ক্ষণ কানে এই ধরনের আওয়াজ শুনতে পেলেও আসলে কিন্তু কোনও আওয়াজ তৈরিই হয় না। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই রোগের নাম ‘টিন্নিটাস’।
এই ‘টিন্নিটাস’-এর আবার দু’টি ভাগ রয়েছে। প্রথমটিতে, রোগীর কানে একনাগাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে বা শঙ্খ বাজতে থাকে। যা বাইরে থেকে চিকিৎসকের কানে পৌঁছয় না। দ্বিতীয়টিতে আবার রোগী এবং চিকিৎসক দু’জনেই টের পান যে, কানের ভিতরে কোনও আওয়াজ হচ্ছে।
নাক, কান এবং গলার চিকিৎসকদের মতে, কানে দীর্ঘ দিন ময়লা জমতে থাকলে, কিংবা দীর্ঘ ক্ষণ কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনলেও এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কানে এই ধরনের আওয়াজ হলে বুঝতে হবে, মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত কানের স্নায়ুগুলিতে কোনও সমস্যা রয়েছে। এই আওয়াজ অবশ্য এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা দিলেও কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে।
নিরাময়ের উপায় কী?
এই ধরনের সমস্যার প্রাথমিক চিকিৎসা হল ব্যায়াম। যে সব ব্যায়াম মুখমণ্ডল এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত, সেগুলিই বিশেষ ভাবে উপকারী। এ ছাড়া, পেশির কিছু ব্যায়ামও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ফল দেয়। কিন্তু পরিস্থিতি যদি জটিল হয়, সে ক্ষেত্রে ‘ম্যাগনেটিক মেথড’-এ চিকিৎসা করা হয়। যদিও এই ধরনের চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যয়বহুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy