অঙ্গদানের অঙ্গীকার করুন
Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Organ Donation Awareness In Mumbai

দুই দশকে এই প্রথমবার মৃত শিশুদের অঙ্গদানে নজির গড়ল মুম্বই

একমাত্র মেয়ের ষষ্ঠ জন্মদিনের তখন বাকি এক সপ্তাহ। উদযাপনের বদলে সেই মেয়েই হারিয়ে গেল চিরতরে। সন্তান শোকে বিহ্বল অবস্থাতেই নাগরানি দম্পতি সন্তানের অঙ্গদানের মতো এক বৃহৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।

সচেতনতা বাড়ুক অঙ্গদানে

সচেতনতা বাড়ুক অঙ্গদানে

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২১:৩৬
Share: Save:

সপ্তাহ কয়েক আগের কথা। জীবনে এমন দিন আসবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি মুম্বইয়ের চেম্বুরের বাসিন্দা দম্পতি অবিনাশ এবং সুষমা নাগরানি। একমাত্র মেয়ের ষষ্ঠ জন্মদিনের তখন বাকি এক সপ্তাহ। উদযাপনের বদলে সেই মেয়েই হারিয়ে গেল চিরতরে। সন্তান শোকে বিহ্বল অবস্থাতেই নাগরানি দম্পতি সন্তানের অঙ্গদানের মতো এক বৃহৎ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হওয়া সত্ত্বেও ওয়াদিয়া হাসপাতালের ডাক্তাররা যখন তাদের সন্তানের অঙ্গদানের বিষয়ে নাগরানি দম্পতিদের সঙ্গে আলোচনা করেন, তখন এই সিদ্ধান্তে মত দেন তাঁরা। মৃত শিশুদের অঙ্গদানের ক্ষেত্রে মুম্বইয়ে দুই দশকের মধ্যে এই প্রথম একই বছরে এটি চতুর্থ উদ্যোগ।

নাগরানি দম্পতির মতো আরও অনেকে নিঃস্বার্থভাবে এই মহৎ উদ্যোগে সামিল হতে এগিয়ে আসায় গত দুই দশকে ১-১৫ বছর বয়সী মৃত শিশুদের থেকে ১৮টি অঙ্গদানের নজির গড়েছে মুম্বই। এই অঙ্গদানের মাধ্যমে ৫৯টি শিশুর জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে, পাশাপাশি মৃত শিশুর অঙ্গদানের এই সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে বহু প্রাপ্তবয়স্কও এ কাজে ব্রতী হয়েছে। মুম্বাইয়ে ১-৩ বছরের শিশুদের অঙ্গদানের এই প্রবণতা দেখে ৩-১২ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রেও এই অঙ্গদানের আগ্রহ দেখা দিয়েছে।

২০০১ সালে ১৮ মাস বয়সী এক শিশুকন্যা ছিল মুম্বইয়ের প্রথম শিশু অঙ্গদাতা। তার কিডনি বোম্বে হাসপাতালে দান করা হয়। শিশুদের অঙ্গদানে তাৎক্ষণিক ভাবে এই মাইলফলক কোনও প্রভাব ফেলেনি। আট বছর পরে ২০০৯ সালে দ্বিতীয় শিশুর অঙ্গদানের সাক্ষী হয় মুম্বই। তার পর থেকে কখনও বছরে এক বার, কখনও বা দু’বছরে এক বার এই ধরনের অঙ্গদানের ধারা তৈরি হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে, ২০১৬ সাল থেকে, কিডনি ছাড়া অন্যান্য অঙ্গদানেও বাবা মায়েদের সম্মতি দেওয়ার নজির বেড়েছে। প্রাথমিক ভাবে কিডনি দানে বেশি জোর থাকলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে হার্ট, লিভার এবং ফুসফুস দান করার ক্ষেত্রেও বাবা-মায়েদের সম্মতি দিতে দেখা গিয়েছে।

জেডটিসিসি-এর সভাপতি চিকিৎসক এস কে মাথুর বলেন, “শিশুদের অঙ্গদান করার ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য ভাবে অগ্রগতি ঘটেছে। একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের এক তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিফলন হল- আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এখন তাদের প্রিয়জনের বয়স নির্বিশেষে অঙ্গ দান করতে ইচ্ছুক।" চিকিৎসক মাথুরের সংযোজন- মুম্বইয়ের ১৮ জন অঙ্গদাতার মধ্যে ১০ জন মেয়ে এবং আট জন ছেলে। শিশুদের অঙ্গদানের সংখ্যাবৃদ্ধির বিষয়টি এখন গোটা দেশেই নজরে আসছে। গত মাসে গুজরাতে চার দিন বয়সী, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিশু এই মুহূর্তে দেশের সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গদাতা।

লীলাবতী হাসপাতালের এক ট্রান্সপ্লান্ট কো-অর্ডিনেটর প্রমোদ শিন্দের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের অঙ্গদানের ক্ষেত্রেও একই ধরনের জটিলতা দেখা যায়। তাঁর অভিজ্ঞতা বলে, সন্তানের মৃত্যুর পরপরই বাবা-মায়ের কাছে সন্তানের অঙ্গদান সম্পর্কে জানতে চাওয়া খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। কারণ প্রত্যেক বাবা-মা তাঁদের সন্তানকে জীবিত দেখতে চান। "আমাদের মেয়ে দৃষ্টির চোখ, হার্ট এবং কিডনি অন্যদের জন্য একটি দ্বিতীয় সুযোগ হয়ে আসুক। এটা ভেবেই অঙ্গদানে এগিয়েছিলাম আমরা। ওর হৃদয় এখন অন্য ব্যক্তির বুকে স্পন্দিত হচ্ছে অদম্য জীবনীশক্তির প্রতীক হয়ে।" মেয়ের অঙ্গদানের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা এ ভাবেই করেছেন অবিনাশ। মেয়ের পরে বাবাও এখন অঙ্গদানের অঙ্গীকার করেছেন।

অন্যকে নতুন জীবন দিন। এগিয়ে আসুন এবং অঙ্গীকার করুন অঙ্গদানের। ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কেbit.ly/47a6kLV

অন্য বিষয়গুলি:

Organ Donation Organ Transplantation Mumbai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy