নয়াদিল্লির সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গ দাতা, ছবি - সংগৃহীত।
নয়াদিল্লিতে ৩০ মাস বয়সী এক শিশু দিব্যাংশী খেলতে খেলতে হঠাৎই বাড়ির তিন তলা থেকে পড়ে যায়। গুরুতর জখম ওই শিশুটিকে তৎক্ষণাৎ নিয়ে যাওয়া হয় অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এ। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, ইতিমধ্যেই দিব্যাংশীর মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটেছে। শোকে পাথর হয়ে যান বাবা-মা। তবু তার মধ্যেই চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে দিব্যাংশীর হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গ দানের মতো মহৎ কাজে এগিয়ে আসেন তাঁরা। তাঁদের এই সিদ্ধান্তেই এই মুহূর্তে দিব্যাংশী সবচেয়ে কমবয়সী শিশু অঙ্গদাতাদের এক জন। AIIMS এবং কার্ডিওথোরাসিক সার্জনদের একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি দল তার অঙ্গগুলি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেছে। এই ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে AIIMS-এর ট্রমা সেন্টারে আরও তিনটি মৃতদেহের অঙ্গদান হয়েছে।
দিব্যাংশীর অঙ্গদান দু’জন শিশুকে নতুন জীবন দেবে। অঙ্গ প্রাপকদের মধ্যে এক জন হিসেবে চেন্নাইয়ের চার মাস বয়সী এক শিশুর নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত, যে জন্মগত হার্টের সমস্যার কারণে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই চালাচ্ছে।
AIIMS-এর অর্গ্যান রিট্রিভাল ব্যাঙ্কিং অর্গানাইজেশন (ORBO) টিম দিল্লি থেকে চেন্নাইয়ের এমজিএম হেলথকেয়ারে পুনরুদ্ধার করা হৃৎপিণ্ড পরিবহণের জন্য একটি গ্রিন করিডর তৈরি করেছিল। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দিব্যাংশীর দু’টি কিডনি অন্য এক শিশুর দেহে প্রতিস্থাপন করা হবে। তার কর্নিয়াগুলিকে AIIMS-এ রাখা হয়েছে।
নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক দীপক গুপ্ত জানান, দিব্যাংশী এখনও পর্যন্ত AIIMS ট্রমা সেন্টারে হার্ট দান করা কনিষ্ঠতম শিশু। তিনি বলেন, “ভারতে ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে শীর্ষে উঁচু থেকে পড়ে যাওয়া। আমরা গত বছর ‘নিরাপদ বারান্দা, নিরাপদ শিশু’ নামে একটি ক্যাম্পেন শুরু করেছিলাম, যাতে এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা যায়। কিন্তু এই ধরনের ঘটনা এখনও শহরে অব্যাহত।’’
এই ঘটনার একদিন আগে, ১৬ নভেম্বর নয়ডায় সড়ক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয় ৪৮ বছর বয়সী শশী। চিকিত্সার পর চিকিৎসকরা জানান শশীর মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটেছে।
শশীর উদ্ধার করা কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গ ও টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে হাসপাতালে বরাদ্দ করা হয়েছিল। একটি কিডনি আরআর হাসপাতালে বরাদ্দ করা হয়েছিল, অন্যটি AIIMS -এ বরাদ্দ করা হয়েছিল।
ট্রমা সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক কামরান ফারুক বলেন, “এই বছর AIIMS ট্রমা সেন্টারে এটি ১২তম অঙ্গদান। বিগত কয়েক বছরে এই কেন্দ্রে ব্রেন ডেথ রোগীদের থেকে অঙ্গদান এবং প্রতিস্থাপনের পরিমাণ বেড়েছে।’’ গত বছর থেকে যোগ করলে দেখা যাবে, মোট ১৬ জন অঙ্গদাতা দিল্লি-এনসিআরের বিভিন্ন অংশে ৪০টিরও বেশি রোগীকে নতুন জীবন দিয়েছেন অঙ্গদানের মাধ্যমে।
ORBO, AIIMS-এর প্রফেসর ইনচার্জ চিকিৎসক আরতি ভিজ, প্রিয়জন মৃত্যুর শোকের মধ্যেও অঙ্গদান করার মতো এই মহৎ দান নিয়ে পরিবারের নিঃস্বার্থ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন।
অন্যকে নতুন জীবন দিন। এগিয়ে আসুন এবং অঙ্গীকার করুন অঙ্গদানের। ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কে — bit.ly/47a6kLV
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy