অঙ্গদান নিয়ে সচেতনতার প্রভাব বেঙ্গালুরুতে বেশ লক্ষণীয়। গত ১০ বছরে কর্নাটকে অঙ্গ এবং টিস্যু দানের সংখ্যা ৬.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্নাটকের স্টেট অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের (SOTTO) তথ্য অনুসারে, রাজ্যে অঙ্গ ও টিস্যু দানের সংখ্যা ২০১৩ সালে ছিল ১০২। ২০২৩ সালের প্রথম ১০ মাস পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬৫-তে। ২০২৩-এর প্রথম ১০ মাসে কর্নাটকে মোট ৪১৭টি অঙ্গ দান করা হয়েছে।
দান করা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে রয়েছে ২৩৩টি কিডনি, ১২১টি লিভার, ২৮টি হার্ট এবং ১৭টি ফুসফুস। তালিকায় হাত ছিল না। ২০০৭ সালের পর থেকে এই রাজ্যে ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে মাত্র একটি করে দু’টি হাত দানের নজির দেখা গিয়েছে।
এ বছর দান করা অন্যান্য অঙ্গের মধ্যে রয়েছে তিনটি ছোট অন্ত্র, চারটি হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস, দু’টি কিডনি ও অগ্ন্যাশয় এবং ন’টি লিভার ও কিডনি। কর্নাটকে এ বছর ৩৪৮টি টিস্যু দান করা হয়েছে। তার মধ্যে ৭৩টি হার্ট ভালভ, ১৯টি ত্বক এবং ২৫৬টি কর্নিয়া দান করা হয়েছে।
এ ছাড়াও ১৫৩টি মৃতদেহ থেকে অঙ্গ ও টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়েছেন কর্নাটকের স্টেট অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের কর্মকর্তারা। কর্নাটকের স্টেট অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের তথ্য অনুযায়ী, মৃতদেহের অঙ্গদানের সংখ্যা ১০ বছরে প্রায় সাড়ে সাত গুণ বেড়েছে। ২০১৩ সালে এই অঙ্গদানের সংখ্যা ছিল ১৮। সেই সংখ্যা বেড়ে ২০২৩ সালের ১০ মাসে হয়েছে ১৫৩ জন।
কর্নাটক স্টেট অর্গান অ্যান্ড টিস্যু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজেশনের রাজ্য যুগ্ম পরিচালক (চিকিৎসা) এবং সদস্য-সচিব চিকিৎসক রাজানি এম বলেন, “অঙ্গদানের ক্ষেত্রে তেলঙ্গানার পরে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কর্নাটক। এ বছর অঙ্গদানে আমরা অনেকটাই সাফল্য অর্জন করেছি।’’
মৃতদেহের অঙ্গদানের নিরিখে তামিলনাড়ু ১৩৯টি অঙ্গদান করে তৃতীয় স্থানে। রয়েছে। ১৬৫টি অঙ্গ দানের সূত্রে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে তেলঙ্গানা।
চিকিৎসক রাজানি জানান, অঙ্গ ও টিস্যু দান বাড়াতে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির দিকে আলোকপাত করা জরুরি। অঙ্গ ও টিস্যু দানের পাশাপাশি ব্রেন ডেথ এবং অঙ্গ দান সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
এইচপিবি-এর প্রধান পরামর্শদাতা এবং অ্যাস্টর হাসপাতালের যকৃৎ প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচারের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক সোনাল আস্থানা জানান, তেলঙ্গানা এবং কর্নাটকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সংখ্যা গত ৩-৪ বছরে নিয়মিত ভাবে বেড়ে চলেছে।
ভারতে প্রতি বছর দেড় লক্ষেরও বেশি মানুষ পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। এই ধরনের পথ দুর্ঘটনার শিকার হয়ে প্রায় দুই- তৃতীয়াংশ মানুষেরই ব্রেন ডেথ হয়ে যায়। এর পরেও এ দেশে অঙ্গদানের সংখ্যা গড়ে ১০০০ জন। চিকিৎসক আস্থানা বলেন, “ব্রেন ডেথ হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে যদি পাঁচ শতাংশ মানুষের পরিবারও অঙ্গদানে এগিয়ে আসে, তা হলে আমরা অঙ্গদানের চাহিদা এবং জোগানের ব্যবধান মেটাতে সক্ষম হব।’’
অঙ্গদাতাদের রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানে কর্নাটক সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে বলতে গিয়ে চিকিৎসক আস্থানা বলেন, “এটি একটি অভিনব ও সুন্দর পদক্ষেপ। অঙ্গদাতার পরিবারকে যে কোনও ধরনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনি বলে ধরা হবে। কিন্তু অঙ্গদাতাদের পরিবারকে সরকার অবশ্যই এই অনন্য আত্মত্যাগের জন্য সম্মান জানাতে প্রস্তুত। রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে অঙ্গদাতাদের শেষকৃত্য আরও বেশি মানুষকে অঙ্গদানের অঙ্গীকার করতে অনুপ্রাণিত করতে পারে।”
অন্যকে নতুন জীবন দিন। এগিয়ে আসুন এবং অঙ্গীকার করুন অঙ্গদানের। ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কে — bit.ly/47a6kLV
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy