সারেগামাপা-র মঞ্চে প্রতিযোগিরা।
গানের রিয়ালিটি শো মানেই অনামী গায়কের পরিচিতি পাওয়ার প্ল্যাটফর্ম। ছেলে হোক বা মেয়ে, স্বরের বিভিন্নতার তরঙ্গদৈর্ঘ্য নিয়েই গায়কির যথাযথ টেকনিক শেখা যায় এই মঞ্চ থেকে। জি বাংলার সারেগামাপা সে রকমই এক প্ল্যাটফর্ম। গত এক বছর ধরে চলা এই শো পৌঁছে গেল ফাইনাল রাউন্ডে। কী ভাবছেন প্রতিযোগীরা?
অন্যতম প্রতিযোগী, গোবরডাঙার অঙ্কিতা ভট্টাচার্য সুরেলা গলায় বললেন, “খুবই ভাল অভিজ্ঞতা হল। অন্য প্রতিযোগীদের সঙ্গে একসঙ্গে থাকা, গ্রুমিং... অনেক কিছু শিখেছি সারেগামাপা-র পুরো জার্নিটা থেকে। এখন তো শুটিং শেষ। খুব মিস করছি।”
নৈহাটির প্রীতম রায় গুনগুন করতে করতে কথা শুরু করলেন, “ফার্স্ট যেটা ম্যাটার করে সেটা হল শিক্ষা। আমার ভয় ছিল শিখতে পারব কি না। আমি কমার্শিয়ালি এতটা ট্রেন্ড ছিলাম না। তবে প্রচুর গান শুনতাম। ক্ল্যাসিকাল মিউজিক নিয়ে ছোট থেকে বড় হয়েছি... পিওর ক্ল্যাসিকাল, খেয়াল। সারেগামাপা-য় আসার পরে কমার্শিয়াল গানবাজনা শিখি। যখন এখানে চান্স পেলাম মনে হয়েছিল অন্য প্রতিযোগীরা এত ভাল গায়, আমি কী করে ওদের পাশে দাঁড়াব? তো প্রত্যেকটা এপিসোড থেকে, সতীর্থদের গায়কী থেকে শিখতে পেরেছি। এ ভাবে শিখতে শিখতে গ্র্যান্ড ফিনালেতে পৌঁছেছি।”
সারেগামাপা-র বিচারকমণ্ডলী।
আর এক প্রতিযোগী গৌরব সরকার বললেন, “অ্যাকচুয়ালি অডিশনের মাধ্যমে উনিশ জন প্রতিযোগীকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। এই উনিশ জনকে নিয়ে মূল পর্ব শুরু হয়। তো আমরা বন্ধুর মতো কাটিয়েছি। শুধু গান বাজনা নয়... একসঙ্গে খাওয়া, ঘুরতে যাওয়া... সব করেছি। একে অপরকে কম্পিটিটর ভাবিনি, পরস্পরকে হেল্প করার চেষ্টা করেছি। এগুলো সবার মধ্যেই ছিল।”
আরও পড়ুন: বাস্তবের ‘গালি বয়’কে চেনেন? ঢাকার বস্তি থেকে উঠে এখন বাংলা র্যাপের ধামাকা
এই অবধি পৌঁছনোর আগে ভয় ছিল? অঙ্কিতার কথায়: “খুব টেনশনে ছিলাম... ওই মঞ্চটায় গিয়ে গান গাইবো, খুব টেনশন হয়ে গিয়েছিল। আমার প্রতি যে ভরসা তার লেভেল অনেক বেড়ে গিয়েছিল তখন। খুব চাপের মধ্যে আনন্দও ছিল যে আমি ফাইনালে উঠেছি এবং এই মঞ্চে গান গাইবো।”
আরও পড়ুন: মজা আর ভয়ের ককটেল ‘বাঞ্ছারামের বাগানবাড়ি’, দেখা যাবে কাল
এ পর্যন্ত কী কী গান গেয়েছেন? প্রীতম জানালেন, “সব ধরনের গান গেয়েছি... সুফি, কাওয়ালি, বাংলা আধুনিক, স্বর্ণযুগের গান, হার্ডকোর বলিউড মিউজিক, অ্যারাবিক গান, ফাস্ট রিদম, স্লো রিদম... সব গান গেয়েছি।”
দুষ্টুমি করেননি? গৌরব হাসলেন, “হ্যাঁ... আমি, স্নিগ্ধজিত, প্রীতম... আমরা রুম পার্টনার ছিলাম। কারও বাড়ি থেকে খাবার এলে ঠিক দেখে নিতাম কোথায় রাখা হল। তারপর দায়িত্ব নিয়ে লুকিয়ে খেয়ে নিতাম... হা হা হা...। আমাকে এখানে সবাই ফুড অ্যাপ বলে। কারণ, কোথায় কী খাবার পাওয়া যায় আমি সন্ধান দিই। ফুড ট্রিপও করেছি, লুকিয়ে। লোকজনকে যখন তখন ঘুম থেকে তুলে দিয়েছি। আমাদের তন্ময়দা (বিশ্বাস, প্রতিযোগী) যেখান সেখানে ঘুমিয়ে পড়ত... স্টুডিওতে, স্টুডিওর কোনও ঘরের সামনে, মাটিতে। তো সে সব ছবি তুলে সারেগামাপা-তে দেখিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে টিম ওয়ার্ক এত ভাল, কম্পিটিশনের যে একটা চাপ থাকে সেটা ফিল করিনি। আমাদের যথেষ্ট যত্ন করে, আদর করে রাখা হয়েছিল।”
আরও পড়ুন: ‘মমতার তোষণ-নীতির জন্য সামাজিক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে’, বিস্ফোরক কেশরীনাথ
কিছু শেখাল এই মঞ্চ? গৌরবের জবাব: “গ্রুমিং পার্টটায় গানের প্রত্যেকটা অংশ খুবই ধরে ধরে করানো হয়েছে। খুব এফিসিয়েন্টলি গানবাজনা শেখান হয়েছে। ইন ডিটেল কী করে একটা গান ভাল করতে হয় সেই প্রসেসটা ট্রেনাররা আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। ইন ফিউচার এগুলো মনে রেখে কাজ করলে খুব ভাল হবে।”
কে জিতবে? গৌরব বললেন, “এত ভাল ভাল পার্টিসিপেন্ট যে, কেউ বুঝতে পারছি না কাকে রেখে কাকে বাদ দেবেন বিচারকেরা। তবে আমাদের কারও মধ্যেই ফার্স্ট, সেকেন্ড হতেই হবে এ রকম কোনও ব্যাপার নেই। কারণ প্রসেসটা এক বছর ধরে হয়ে আসছে। আমরা সেলিব্রেশন মুডে আছি। এত আনন্দ করে, এত মজা করা, এত মিউজিক্যালি সারেগামাপা আমরা এ বছর করেছি, মনে হয় না এ রকম আর কোনও বছর হয়েছে।”
শুটিং শেষ। আজ, রবিবার সন্ধায় প্রতীক্ষার অবসান। সেরার শিরোপা কার মাথায় উঠবে, তা জানার দীর্ঘ প্রতীক্ষারও অবসান হতে চলেছে এই সন্ধ্যায়!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy