মমতা শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত।
প্রশ্ন: ছবির প্রচারের জন্য এত সাক্ষাৎকার দিতে আপনার ভাল লাগে?
মমতা: যখন বুঝতে পারি নিজের ভালর জন্য কাজটা করছি, ছবির ভালর জন্য করছি, তখন অসুবিধা হয় না। আমি যেমন গতকাল শান্তিনিকেতনে ছিলাম ছেলে-বৌমা-নাতিদের সঙ্গে। কিন্তু আজ আমায় প্রচারের জন্য চলে আসতে হল। আমাদের কাজের তো এটা অঙ্গ। পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠানে কখনও কখনও অংশ না নিতে পারলে খুব কষ্ট হয়। কিন্তু কিছু পেতে গেলে কিছু ছাড়তে হবে। এগুলো ছাড়ার পরিবর্তে আমি যতটা ভালবাসা পাই, সেটা সব পুষিয়ে দেয়।
প্রশ্ন: গত বছরের শেষে ‘প্রধান’ মুক্তি পেয়েছিল। সেই ছবিও তো বেশ ভালবাসা পেয়েছে।
মমতা: ‘প্রধান’-এ আমি খুব খারাপ। আমি একদম ভাল করিনি। আমার তেমন কিছু করার ছিলও না অবশ্য। আমার নিজেকে ভীষণ খারাপ লেগেছে।
প্রশ্ন: নিজের অভিনয় নিয়ে আপনি কি খুব খুঁতখুঁতে?
মমতা: ভীষণ! আমার নিজের খুব কম কাজ আমার ভাল লেগেছে।
প্রশ্ন: কোনগুলোকে তালিকার শীর্ষে রাখবেন?
মমতা: ও বাবা! (একটু ভেবে) মৃণালদার (সেন) ছবির মধ্যে ‘খারিজ’ ভাল লাগে। একটু ভাল করেছি মনে হয়। মানিক কাকার (সত্যজিৎ রায়) কাজগুলোর মধ্য ‘আগুন্তুক’-এ আমি সামান্য ভাল। তবে আমার এত দিনের অভিনয়জীবনে কখনও এতটা কঠিন চরিত্র করিনি, যতটা ‘বিজয়ার পরে’-তে করেছি। সেটা যদি দর্শকের ভাল লাগে, তা হলে এই ছবির নামও আমার তালিকায় থাকবে।
প্রশ্ন: অভিনয়ের মতো ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও তো আপনি বেশ খুঁতখুঁতে?
মমতা: হ্যাঁ। আমি ছবি ভীষণ বাছাই করে করি। সব ছবিতে রাজি হই না। কিন্তু কখনও কখনও হয়তো বন্ধুত্বের খাতিরে বা খুব আবদার করে কেউ কেউ আমায় বলে, ‘‘মমদি, একটু ছবিটা করে দাও।’’ তখন না করত পারি না। এমন কিছু ছবি হয়ে গিয়েছে যেগুলোয় মন থেকে সায় ছিল না। কিন্তু না হলে আমি চিত্রনাট্য বা আমার চরিত্রটা অপছন্দ হলে একেবারেই করি না।
প্রশ্ন: খুঁতখুঁতে মমতা শঙ্করের মন জয় করতে এক জন পরিচালককে কী কী মাথায় রাখতে হবে?
মমতা: আমি প্রথমেই দেখি পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে কেমন লাগছে। যদি কথা বলে বুঝতে পারি, যে ভাবে তিনি কোনও গল্প ভেবেছেন, সেটা করার মতো যোগ্যতা বা আত্মবিশ্বাস তাঁর রয়েছে, তখন আমি বাকি সব দেখি। আমার চরিত্রটা কেমন, সেটা দেখি। তবে সব সময় যে ঠিক বুঝি, তা-ও বলতে পারব না। অনেক সময় খুব বেশি জটিল, ইন্টেলেকচুয়াল চিত্রনাট্য হলেও আমার ভাল লাগে না।
প্রশ্ন: আপনি সাধারণত যেমন ছবি করতে পছন্দ করেন, গত বছরের ‘শিবপুর’ তার চেয়ে অনেকটা আলাদা ছিল।
মমতা: ঠিকই। ‘শাহজাহান রিজেন্সি’-ও একদম অন্য রকম ছবি ছিল। জানি না কেন, এই বয়সে এসে লোকে আমায় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে চাইছে। সেটা অবশ্য আমার ভালই লাগছে। আগে আমায় নিয়ে একটা ধরাবাঁধা ধারণা ছিল। ‘মমদি এটা করতে পারবে, ওটা পারবে না’। এখন সেটা ভাঙছে। অভিনেত্রী হিসাবে আমি নিজেকে অনেক বেশি ঋদ্ধ করতে পারছি। তবে সব চরিত্র আমি করি না।
প্রশ্ন: কেন, কিসে বাধে?
মমতা: আমায় মাথায় রাখতে হয় যে, আমি একটা নাচের স্কুলও চালাই। আমার নৃত্যশিল্পী হিসাবে একটা পরিচয় রয়েছে। এমন কিছু করব না যেটা অন্য কেউ করলে আমি নাক সিঁটকে বলতাম, ‘‘উনি কেন এমন করলেন!’’ এটা নিজের ক্ষেত্রেও কাজে লাগাই। আমি জানি, আমার ছাত্রছাত্রী রয়েছে। তারা যেন আমায় দেখে না ভাবে, ‘মম মাসি এটা কী করে করলেন’! একটা ছবি করেছিলাম, যেখানে একটি দৃশ্যে আমায় সিগারেট হাতে বসতে হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আমি খাব না। বোঝাবার জন্য হাতে নিয়ে বসতে পারি। সেই দৃশ্যটা দেখে একটা বাচ্চা ঘুরে বসেছে পুরো। বলে, ‘‘ওটা মম মাসি না।’’ আমার সব সময়ই মনে হয়, ছাত্রছাত্রীদের মনে আমি দুঃখ দিতে পারব না।
প্রশ্ন: কী দেখানো উচিত আর কী অনুচিত, সেই ধারণা এখন অনেক পরিচালকই নাকচ করে দেন। তাঁদের গল্পের প্রভাব দর্শকের উপর পড়বে কি না, তা মাথায় রেখে ছবির বিষয় এখন আর নির্বাচন করা হয় না।
মমতা: দেখুন, প্রেমের গল্প আগেও হত। ছবিতে নিষ্ঠুরতা বা হিংস্রতাও ছিল। কিন্তু সব কিছু চোখে আঙুল দিয়ে সরাসরি দেখিয়ে দেওয়া হত না। পরিচালকের সেখানেই বাহাদুরি, যেখানে তিনি বুদ্ধিমানের মতো সব কিছু না দেখিয়েও বলে দিতে পারবেন। শুধু যৌনতা বা হিংস্রতা দেখিয়ে দর্শককে হলে টানার প্রযোজন পড়বে না। ওটাই যেন তুরুপের তাস না হয়ে যায়। গল্পের যেটুকু প্রয়োজন সেটুকু তো একটু অন্য ভাবেও দেখানো যেতে পারে। কারণ, ছবিগুলো এখন টেলিভিশনে দেখানো হয়। পরিবারের সকলে মিলে দেখছে। সেখানে একটু বুঝেশুনে ছবি করা উচিত। মানিক কাকা, মৃণালদারা কত ছবি করেছেন। তাবড় সব পরিচালক এত বছর ধরে কত ছবি করেছেন। কখনও তো সব সরাসরি বোঝাতে হয়নি! তাঁরা তো এত দিন বসে ঘাস কাটেননি! তাঁরা অনেক কঠিন বিষয় বা জটিল সম্পর্কের ছবিও করেছেন। কিন্তু ছবিগুলো তো আজকের ছবির মতো ছিল না। আমি বলব, এখানেই পরিচালকের যোগ্যতা ধরা পড়ে। যত বু্দ্ধিমান পরিচালক, তাঁরা সব কিছু না দেখিয়েও বোঝাতে পারেন। যাঁরা বোকা, যাঁদের বুদ্ধি একটু কম, সেই পরিচালকদের সব কিছু দেখাতে হয়। আসলে তাঁদের নিজেদের উপর ভরসা নেই। ভাবেন, যৌনতা বা হিংস্রতা না থাকলে দর্শক আসবেন না।
প্রশ্ন: তবে দর্শকও তো ‘অ্যানিম্যাল’-এর মতো ছবি রমরমিয়ে দেখছেন।
মমতা: তাতে ক্ষতিও হচ্ছে। এই কিছু দিন আগে আমায় এক জন বলছিল, তাঁর আড়াই বছরের বাচ্চা কী কী বলে। শুনে আমি তো অবাক! বাচ্চাদের তাদের মতো করে বড় করা উচিত। প্রত্যেক বয়সের একটা ধাপ রয়েছে। তাকে কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে দিলে তার জীবনের একটা অধ্যায় উড়ে যায়। সেটা তো ঠিক নয়। সাধারণ প্রক্রিয়ার মধ্যে বাচ্চাদের বড় করা উচিত। তারা নিজের সময় মতো সব কিছু দিব্যি শিখে যাবে। আমার কর্তা, মানে বাপিদা এবং আমি আমাদের দুই ছেলেকে সে ভাবেই বড় করেছিলাম। এমনকি, এখনও আমি আমার নাতিকে কখনও মোবাইল দিই না। আমার সঙ্গে যত ক্ষণ থাকে, আমার হাজার কষ্ট হলেও আমি গল্প করি, মজার খেলা খেলি। এখন শৈশব কেমন যেন বদলে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগেও হিন্দি সিনেমা এ রকম ছিল না। আমরাও অনেক বেশি সরল ছিলাম। এখন সারল্য কেউ নিতে পারে না। নিজে বুঝুক বা না বুঝুক, জটিল বিষয় বাছতেই হবে। যেন একটা জিনিস যত জটিল ভাবে দেখানো যায়, তত পরিচালকের কৃতিত্ব। ভাবে জটিলতার মধ্যে যেন সবার চেয়ে আলাদা হওয়া যাবে। আরে আলাদা হও অন্য ভাবে! আমার মনে হয়, কেউ যদি শরীর ঢেকে শাড়ি পরে, তা হলেই সে আলাদা হতে পারবে। এবং তাতেই সে আরও সুন্দর হয়ে উঠবে। এখন ব্যতিক্রমী হলে সে ভাবে হতে হবে। পুরনো জিনিসগুলোই নতুন ভাবে আনতে হবে। না হল তো সবাই এক! তবে এখন আর এ সব নিয়ে আমি বেশি কথা বলি না। জানেন তো, আমি নিজেকে আগের চেয়ে অনেক গুটিয়ে নিয়েছি।
প্রশ্ন: কেন?
মমতা: লোকের এখন সব বিষয়ে এত মতামত। আমি সেগুলো কিচ্ছু জানতে চাই না। আমি বাবা বাচ্চাই থেকে যেতে চাই। নিজের ভিতরটা জানার চেষ্টা করি। সেই ১৯৭৫ থেকে সিনেমা করছি। সত্যি বলছি, এখনও ক্যামেরার লেন্স, কোন দিকে তাকাতে হবে, এ সব নিয়ে আমি একদম মাথা ঘামাই না। আমি আমার অভিনয়টাই মন দিয়ে করে যেতে চাই।
প্রশ্ন: ক্যামেরায় নিজেকে কেমন লাগছে, সেটা নিয়ে ভাবেন?
মমতা: বয়স অনুযায়ী সুন্দর দেখালেই হল। আমি তো স্নান করে অর্ধেক সময় ক্রিম পর্যন্ত লাগাই না। কী হবে! ভগবান যা দিয়েছেন তাতেই আমি খুশি। এখন অনেকে ছুরি-কাঁচি চালিয়ে খোদার উপর খোদকারি করে। কিন্তু আমার ভীষণ ভয় লাগে। ও সব করতে গিয়ে আমার মুখ যদি বিগড়ে যায়। কোনও দরকার নেই!
প্রশ্ন: নাচ কি আপনার জীবনে বেশি প্রাধান্য পায়?
মমতা: না, এখন দুটো সমান। নাচ আর সিনেমার আমার কাছে একে অপরের পরিপূরক। দুটো আমার কাছে আমার দুই ছেলে রাতুল আর রজিতের মতো। বা আমার দুই বৌমার মতো। দু’জনেই খুব ভাল। আসলে দু’জনেই তো ছোটবেলা থেকে আমার কাছে নাচ শিখেছে। সুতরাং তাদের কাছে আমি মম মাসি থেকে মা হয়ে গিয়েছি।
প্রশ্ন: ছেলে-বৌমাদের সঙ্গে যতটা ভাল সম্পর্ক, নাতি-নাতনিদের সঙ্গে বা নতুন প্রজন্মের সঙ্গে তত সহজে নিজেকে মেলাতে পারেন?
মমতা: আমার হয়তো খুব বয়স হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার ভিতরটা এখনও শিশুর মতো। আমায় যখন কখনও কোনও বড় কমিটির সদস্য হতে বলা হয় বা কোনও প্যানেলে ডাকা হয়, প্রথমেই ভাবি, ‘এ মা! আমি এত ছোট। আমায় ডাকছে কেন’! তার পর মনে পড়ে, বাস্তবে তো আমার বয়স অনেকটাই হল। তবে আমার নাতির বয়স এখন পাঁচ হল। সত্যি বলছি, আমার মনে হয়, বাড়িতে বোধ হয় আমি ওর চেয়েও ছোট!
প্রশ্ন: আর বাড়ির বাইরে? নতুন প্রজন্মের সঙ্গে কাজ করতে কেমন লাগে?
মমতা: খুব সহজে ওদের সঙ্গে মিশে যেতে পারি। একটা সময় মনে হয়েছিল, আমি অনেকটা সিনিয়র হয়ে গিয়েছি। এ বার একটু প্রাইভেসির প্রয়োজন। তখন আলাদা মেকআপ রুম চাই। তার পর এখন দেখি, আমার ঘরেই সবাই সারা ক্ষণ এসে আড্ডা দিচ্ছে। আমি সেটা খুব উপভোগ করি। ছোটদের সঙ্গে কাজ করার একটা মজা আছে। ওদের কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারি। শেখার তো কোনও শেষ নেই। যদি এমন কাউকে পেয়ে যাই, যার নিজেরও খুব শেখার ইচ্ছে, তা হলে তো খুব সুন্দর আদান-প্রদানের একটা জায়গা তৈরি হয়।
প্রশ্ন: ‘বিজয়ার পরে’ ছবিতে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের আপনার মেয়ের চরিত্রে। ওর সঙ্গে এমন কোনও জায়গা তৈরি হল?
মমতা: স্বস্তিকা এখন নিজের মেয়ের মতো হয়ে গিয়েছে। ওর বাবা, মানে সন্তুদার (মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে কত ছবি করেছিলাম। ওর সঙ্গেও তো কতগুলো ছবি হয়ে গেল! ‘জাতিস্মর’, ‘শাহজাহান রিজেন্সি’,‘শিবপুর’ আর এখন এটা। তাই স্বস্তিকাকে আমার নিজের ছানাপোনার মতো মনে হয়।
প্রশ্ন: এই সন্তানসম পরিচালকেরা কখনও আপনার কাছে যদি এমন কোনও চরিত্রের প্রস্তাব দেন, যার সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারেন না, তা হলে করবেন?
মমতা: আমি তো ‘শাহজাহান রিজেন্সি’র সময়ই নিজেকে মেলাতে পারছিলাম না। ছবিটার সব কিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু হোটেলের সিনটা আমার একটু... আমার মনে হয়েছে ওটার দরকার ছিল না। সাজেস্টিভ হলেও হতো। আমার ভাল লাগেনি।
প্রশ্ন: ছবির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে বলেছিলেন ভাল না-লাগার কথা?
মমতা: হ্যাঁ, বলেছিলাম (হাসি)। বললাম না, অনেক সময় আমি অনেকের আবদার রাখতে কিছু ছবি করে ফেলেছি। তবে মনে একটা কিন্তু-কিন্তু ভাব রয়ে গিয়েছে। ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ কিন্তু এমনিতে আমার খুব ভাল লেগেছিল। বিশেষ করে স্বস্তিকার সঙ্গে দৃশ্যটা আমার খুব পছন্দের। ওই দৃশ্যের জন্যই চরিত্রটা আমায় টেনেছিল।
প্রশ্ন: নাচ আর সিনেমা আপনার কাছে পরিপূরক। কখনও কোরিয়োগ্রাফি করার কথা ভাবেননি?
মমতা: ‘বিজয়ার পর’ ছবিতে একটি নাচের দৃশ্যে করেছি। আমার ছাত্রীরাও আমায় সাহায্য করেছে। তার আগে ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আবহমান’-এ করেছিলাম। সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর ছবিতে চারটে গান করার কথা ছিল। কিন্তু কিছুতেই করে উঠতে পারলাম না। এক বার ঐশ্বর্যার (রায় বচ্চন) পা মুচকে গেল। এক বার আমি ব্যস্ত হয়ে গেলাম। সে সময় আবার বাবার শতবর্ষ ছিল। আর এক বার আমায় সঞ্জয় বলল, ‘‘দিস টাইম ইউ হ্যাভ টু ডু।’’ কিন্তু সে বারও কোনও কারণে হল না। তবে মনে হয়, জীবনে যেটা আমার পাওয়ার সেটা ঠিক পাব। যেটা পাওয়ার নয়, সেটা পাব না। যেমন বলিউড থেকে এখন অনেক প্রস্তাব পাচ্ছি। ওটিটি-র কাজ অনেক আসছে। কিন্তু ওটিটি-তে আমি ঠিক স্বচ্ছন্দ নই। আসলে নাচের স্কুল রয়েছে। এমনিতেই সাই বাবার আশীর্বাদে সিনেমার কাজ বাড়ায় সেখানে একটু কম সময় দিতে পারি। তার উপর যদি মুম্বইয়ে গিয়ে বেশি কাজ করতে হয়, তা হলে আরও অবহেলা হবে। আমায় তো দুই দিকই সামলে চলতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy