‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’। ছবি: সংগৃহীত।
চলতি বছরের অস্কারের মঞ্চে গজরাজের জয়জয়কার দেখেছে গোটা বিশ্ব। স্বল্প দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রের বিভাগে সেরার শিরোপা অর্জন করে অস্কার জিতে নেয় ভারতের ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’ ছবিটি। গত মার্চ মাসে মঞ্চে উঠে অস্কারের সোনালি স্মারক গ্রহণ করেছিলেন তথ্যচিত্রের পরিচালক কার্তিকি গনসালভেস ও প্রযোজক গুনীত মোঙ্গা। অস্কার নিয়ে দেশে ফিরে ‘দ্য এলিফ্যান্ট হুইস্পারার্স’-এর মাহুত দম্পতি বোমান ও বেলির হাতেও সেই স্মারক তুলে দিয়েছিলেন কার্তিকি। অস্কার হাতে হাসিমুখে ওই মাহুত দম্পতির ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্টও করেন অস্কারজয়ী তথ্যচিত্রের পরিচালক। তবে স্মারক হাতে সমাজমাধ্যমের জন্য ছবি তুললে কি আর পেট চলে? অস্কার জয়ের পাঁচ মাস কেটে গেলেও এখনও নাকি ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি তাঁরা, সম্প্রতি ‘দ্য হিন্দু’-তে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী তথ্যচিত্র নির্মাতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেন বোমান ও বেলি। দু’কোটি টাকার দাবি জানিয়ে নির্মাতাদের আইনি নোটিসও পাঠিয়েছেন তাঁরা।
তামিলনাড়ুর মুদুমালাই অঞ্চলের বাসিন্দা বোমান ও বেলি। হস্তীশাবক রঘুকে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন এই মাহুত। রঘুকে শুধু নতুন জীবনদানই নয়, তাকে পালন-পোষণ করে বড় করে তুলেছিলেন বোমান ও বেলি। রঘুর পরে ওঁদের কোলে আসে আরও এক হস্তীশাবক আম্মু। হস্তীশাবকদের পালন-পোষণে কোনও খামতি রাখেন না বোমান ও বেলি। কিন্তু তাঁদের নিজেদের জীবনধারণের সামান্য খরচ বহন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় মাহুত দম্পতিকে। তার উপরে, তাঁদেরই জীবনযাপনের আধারে তৈরি তথ্যচিত্র অস্কার পাওয়ার পরেও তাঁরা নাকি এখনও পর্যন্ত ন্যায্য পারিশ্রমিক পাননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ক্ষুব্ধ বোমান ও বেলি জানান, অস্কার জয়ের পরে পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তাঁদের পারিশ্রমিক মেটাননি নির্মাতারা। শুধু তাই-ই নয়, একাধিক বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও নাকি তাঁদের পাত্তা দেননি নির্মাতারা। বোমান ও বেলি এ-ও জানান যে, তথ্যচিত্রে তাঁদের বিয়ের যে দৃশ্য দেখানো হয়েছে, তা শুট করতে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ হয়েছিল।
তাঁদের অভিযোগ, কার্তিকি এক দিনে ওই দৃশ্য শুট করার কথা জানিয়েছিলেন। শুটের সময় তিনি নিজে সেই পরিমাণ অর্থ জোগাড় করতে না পারায় তাঁর অনুরোধেই নাকি নিজেদের সঞ্চয় থেকে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন বোমান ও বেলি। দম্পতির অভিযোগ, কার্তিকি তাঁদের কথা দিয়েছিলেন যে, ওই টাকা যত দ্রুত সম্ভব ফেরত দিয়ে দেবেন। তবে অস্কার জয়ের পর থেকে তাঁর নাকি আর কোনও পাত্তাই নেই। নিজেদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাওয়ার জন্যও বার বার হয়রান হতে হচ্ছে বোমান ও বেলিকে। মাহুত দম্পতির দাবি, তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের সময় নাকি তাঁদের সঙ্গে বেশ সহজ ভাবে মিশে গিয়েছিলেন কার্তিকি। বোমান ও বেলির নাতনির লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়ার কথাও নাকি দিয়েছিলেন তিনি। কাজ হাসিল হয়ে যাওয়া মাত্রই নাকি তাঁদের ভুলে গিয়েছেন অস্কারজয়ী পরিচালক। বোমান ও বেলির কথায়, ‘‘আমরা যখনই ওঁকে ফোন করি, উনি বলেন উনি এখন ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন। দিনের পর দিন কেটে যায়, উনি কখনও আর ফোন করেন না।’’ প্রবীণ মাহুত দম্পতির গলায় স্পষ্ট আক্ষেপের সুর।
এ দিকে অস্কারের মতো বিশ্বমঞ্চে সেরার শিরোপা অর্জন করে দেশে ফেরার পরেই বোমান ও বেলির কাছে গিয়েছিলেন কার্তিকি। মাহুত দম্পতির হাতে অস্কার তুলে দিয়ে তাঁদের ছবি সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্ট করে কার্তিকি লেখেন, ‘‘দীর্ঘ চার মাস একে অপরের থেকে দূরে ছিলাম আমরা। এ বার মনে হচ্ছে বাড়ি ফিরে এসেছি।’’ কার্তিকির সেই লেখা দেখে মনে হয়েছিল, সত্যিই বোমান ও বেলির সঙ্গে আত্মীয়তা তৈরি হয়ে গিয়েছে তাঁর। তার কয়েক মাস পরেই কার্তিকি ও নির্মাতাদের বিরুদ্ধে ন্যায্য পারিশ্রমিক না মেলার অভিযোগ তুললেন মাহুত দম্পতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy