কেবিসি-র সেটে অমিতাভের সঙ্গে সহবাগ ও সৌরভ
যে হটসিট বলিউডের শাহেনশার জন্য, সেখানে হঠাৎ বাংলার মহারাজ। শুক্রবার ‘কৌন বানেগা ক্রোড়পতি’-র বিশেষ পর্ব ‘সান্দার শুক্রবার’-এ সেটাই হল। কেবিসি-র হটসিট অমিতাভ বচ্চন ছেড়ে দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্য।
অমিতাভের আশঙ্কা, সৌরভের জন্য তিনি চাকরি খোয়াতে পারেন। সৌরভ বাংলার কেবিসি ‘কে হবে বাংলার কোটিপতি’ সঞ্চালনা করেন। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অমিতাভ দর্শকদের বলেন, ‘আমার চাকরি নিয়ে এ বার টানাটানি পড়ে যাবে।’’ তা শুনে সৌরভ বলেন, ‘‘যখন প্রথম বাংলার কোটিপতির সঞ্চালনায় এলাম, তখন মহড়া দিতাম ঠিকই, কিন্তু আপনার কেবিসি ভিডিয়োগুলোও দেখতাম।’’ সৌরভের সঙ্গে ছিলেন বীরেন্দ্র সহবাগ। সঙ্গে সঙ্গে তিনি অভিযোগ করে বলেন, অমিতাভ তবু তাঁকে দু’বার কেবিসি-তে আসার জন্য ডেকেছিলেন, সৌরভ তো তাঁকে এখনও ডাকেননি।
অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সময় অমিতাভ বলেন, সৌরভ আর সহবাগকে অতিথি হিসেবে পেয়ে তিনি এবং কেবিসি ১৩ ধন্য। সৌরভ তখন বলেন, ‘‘আমাদের বলা হয়েছিল মিস্টার বচ্চন ডাকছেন। তাই আমরা সব কাজ ফেলে চলে এসেছি।’’
একবার টস করতে যাওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভ ওয়াকে অপেক্ষা করিয়েছিলেন সৌরভ। অমিতাভ সে কথা মনে করিয়ে খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘‘সব কাজ ফেলে চলে এসেছ! আমি তো শুনেছি, তুমি না কি লোককে অপেক্ষা করাতে পছন্দ করো।’’ সৌরভ বলেন, ওই ঘটনার সময় তিনি প্রথমে ব্লেজার খুঁজে পাচ্ছিলেন না। যখন অন্য একজনের ব্লেজার পরে নামেন, তখন মাঠে গিয়ে দেখেন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ স্টিভ কটমট করে তাকিয়ে আছেন। ওই ম্যাচ ভারত জিতেছিল। সৌরভ জানান, ওই ঘটনার পর বেশ কয়েক বার তিনি ইচ্ছে করে দেরিতে টস করতে গিয়েছিলেন। তাঁর মনে হয়েছিল, দেরিতে টস করতে যাওয়াটা সৌভাগ্যের প্রতীক।
সহবাগরা যে একেবারেই তাঁর কথা শুনতেন না, সেটিও ফাঁস করে দেন সৌরভ। জেতার জন্য কী পরিকল্পনা নিতেন দু’জন, এই ছিল বিগ বি-র প্রশ্ন। সৌরভ বলেন, ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির সময় তিনি সহবাগকে পইপই করে বলে দিয়েছিলেন, ধুমধাড়াক্কা শটগুলো না মেরে যেন উইকেট ধরে রাখার দিকে নজর দেন তিনি। কিন্তু কে শোনে কার কথা! সহবাগ পাঁচটি চার মারেন। সৌরভ বলেন, ‘‘অধিনায়ক যে পরিকল্পনাই করুক, ওরা ঠিক তার উল্টোটা করত।’’
অনুষ্ঠানের মাঝে সৌরভ কন্যা সানা ভিডিয়ো বার্তায় বলেন, তাঁর বাবা যেরকম দেশকে গর্বিত করেছেন, তিনিও তাঁর বাবাকে গর্বিত করতে চান। সৌরভের স্ত্রী ডোনা বলেন, মেয়েকে সারাক্ষণ আগলে রাখেন সৌরভ। তখন অমিতাভ বলেন, তিনিও এখনও শ্বেতাকে (অমিতাভের মেয়ে শ্বেতা নন্দা) শাসন করেন। আর শ্বেতা তখন বলেন, ‘‘বাবা এখন আর আমাকে কড়া শাসনে রেখো না। আমি বড় হয়ে গিয়েছি। বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আমি এখন দুই সন্তানের মা।’’
সৌরভ এবং সহবাগ শেষ পর্যন্ত ২৫ লক্ষ টাকা জেতেন। দু’জনেই বলেন এই টাকা তাঁরা ‘সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন’ এবং ‘বীরেন্দ্র সহবাগ ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে সামাজিক কাজে ব্যবহার করবেন। প্রথম সাতটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে দু’জনকে একটিও ‘লাইফ লাইন’ নিতে হয়নি। ২৫ লক্ষ টাকা জেতার পর তাঁরা ‘লাইফ লাইন’ নেন। সবকটি খরচ হয়ে যায়। প্রশ্ন ছিল, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাকে আউট করেছিলেন? সঠিক উত্তর, ট্রাভিস ডাউলিন, যাঁকে ধোনি ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আউট করেছিলেন। সৌরভ-সহবাগ এটি জানতেন না।
ন্যাটওয়েস্ট ট্রফির ফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর লর্ডসের বারান্দায় সৌরভের জামা খুলে ঘোরানোর দৃশ্য দেখানো হয়। সহবাগ বলেন, সৌরভকে অপ্রস্তুতে ফেলার জন্য এটা তাঁরই মস্তিষ্ক প্রসূত। সে দিনের ঘটনা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ওই ম্যাচ জেতার পর যখন সৌরভ জার্সি খুলতে যাচ্ছিলেন, তখন সচিন তেন্ডুলকর-সহ লর্ডসের বারান্দায় থাকা সবাই তাঁকে থামাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সৌরভকে আচকানো যায়নি। অমিতাভ বলেন, সৌরভ জামা খুলে বেশ করেছিল। তিনিও তখন গর্ব বোধ করছিলেন। ওই জায়গায় থাকলে তিনিও শ্যুট খুলে উল্লাস করতেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy