সোনাপট্টির সেই বাড়ির এখন একটা অংশে সিপিএম অফিস (ডানদিকে)।
চিকিৎসকরা বলেছিলেন মিরাকলই বাঁচাতে পারে তাঁকে, কৃষ্ণনগর বুক বেঁধেছিল আশায়। অপু ফিরবেন, নিশ্চিত ফিরবেন, ভেবেছিলেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তব বড় নির্মম। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াত হওয়ার পর তাই চোখের জল ধরে রাখতে পারছে না ‘উদয়ন পণ্ডিত’-এর আদি বাড়ি কৃষ্ণনগরের বাসিন্দারা। কালীপুজোর পরের দিন রবিবার দুপুরে যে খবর এল, তাতে ভেঙে পড়েছেন তাঁরা। দীর্ঘ ৪০ দিন লড়াইয়ে পর অবশেষে হার মানলেন বাঙালির ফেলুদা। কলকাতারবেলভিউ হাসপাতালে রবিবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সৌমিত্র নেই, ভাবতেই পারছেননা কৃষ্ণনগরের সোনাপট্টির সাধারণ মানুষ। সৌমিত্রকে ঘিরে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে কৃষ্ণনগর শহরে। একসময় কৃষ্ণনগরের সোনাপট্টিতে তাঁদের পরিবারের বাসস্থান ছিল। ছোটবেলার কিছুটা সময় তাঁর কেটেছে এই শহরেই। তাই রবিবার ভারাক্রান্ত তাঁর কাছের বন্ধু এবং আত্মীয়রা। তাঁদেরই একজন, সন্ধ্যা মজুমদার স্মৃতিচারণা করলেন সৌমিত্র ছোটবেলার। ছেলেবেলার বন্ধুকে হারিয়ে শোকাচ্ছন্ন সন্ধ্যা জানান, সৌমিত্র-সহ তাঁর ভাইয়েরা এই সোনাপট্টিতে বড় হয়েছিলেন।সিএমএসটি জনস হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন,তারপর কলকাতায়চলে যান তাঁরা।সোনাপট্টির যে বাড়িতে সৌমিত্ররা থাকতেন সেটি তখনই বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে সেই বাড়িরই একটি অংশে সিপিএমের কার্যালয় হয়।
‘পুলু’-র মৃত্যু বন্ধু যেন কিছুতেই মানতে পারছেন না হৃদয় থেকে। ‘‘পনেরো বছর আগে শেষ দেখা হয়েছিল পুলুরসঙ্গে’’, বললেন সন্ধ্যা। তাঁরা পুলু নামেই ডাকতেন সৌমিত্রকে। কৃষ্ণনগরের সৌমিত্রর সাদা ভাত, ডাল ও মাছ ভাজা বড্ড প্রিয় ছিল। কাজের ফাঁকে কৃষ্ণনগরের সোনাপট্টিতে এলে দুপুরে মেনু ছিল এটাই। খাওয়াতেন বান্ধবী সন্ধ্যা। আজ সব শূন্য করে চলে গেলেন সৌমিত্র, এই শূন্যতা মানবেন কী করে? বুঝতে পারছেন না সন্ধ্যার মতো কৃষ্ণনগরের অনেকে।
আরও পড়ুন: সৌমিত্র প্রয়াণে বাংলায় টুইট মোদীর, সৌমিত্র (দা)-কে স্মরণ মমতার
সোনাপট্টির বাসিন্দারা জানান,ফেলুদার সঙ্গেশেষ দেখা হয়েছিল কয়েক বছর আগে, কৃষ্ণনগরের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলে তিনি।খোঁজ নিয়ে ছিলেন সোনাপট্টির। সেদিন সন্ধ্যা দেবী না আসতে পারায় তাঁর শারিরীক অবস্থারও খোঁজ নিয়ে ছিলেন তিনি। রবিবার থেকে সেই খোঁজ নেওয়ার লোকটা রইল না। রইল না দুপুরে পাত পেড়ে ডাল-ভাত-মাছ খাওয়ার লোকটাও। ফেলুদার মৃত্যু সংবাদ আসতেই ‘মাঘ কুয়াশার চেয়েও ঝাপসা’ চোখে সেই স্মৃতিই হাতড়াচ্ছে কৃষ্ণনগরের সোনাপট্টি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy