কন্যা রোহিনী এলিজাবেথের সঙ্গে সাহানা বাজপেয়ী ছবি- ফেসবুক
অতিমারি পরিস্থিতিতে তরুণ প্রজন্মের জন সেবায় মুগ্ধ গায়িকা সাহানা বাজপেয়ী। আজ তাঁদের জন্য কলম ধরলেন সঙ্গীতশিল্পী।
যখন গান-বাজনা শুরু করলাম, তখন শুনতে হত, ‘নিমতলার মাঠে বসে গিটার নিয়ে গান-বাজনা করে। সমাজের কাজে লাগে না’। ঢাক না পিটিয়ে মানুষকে রক্ত দিয়ে এসেছি। অর্থ সাহায্য করেছি। তাও ‘এখনকার ছেলে মেয়ে’ শব্দবন্ধ আমাদের কানেও বেজেছে বার বার। এখনকার তরুণ-তরুণীদের যেমন শুনতে হয়, ‘এই তো সারা দিন ফোন নিয়ে বসে থাকে, ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম করে, নেশা করে পড়ে থাকে’। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। প্রতি প্রজন্মকে তার আগের প্রজন্মের কাছ থেকে সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আজ সেই সমস্ত সমালোচকদের উদ্দেশে বলব, ‘এখনকার ছেলেমেয়েরা’ অতিমারির সময়ে রাস্তায় না নামলে কী হত এ দেশের, ভেবে দেখেছেন? সেই ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামকে কাজে লাগিয়ে আজ দেশের নানা প্রান্তে তারাই সাহায্য পাঠাচ্ছে। কোনও বড় হাত নেই তাদের মাথার উপরে। আছে কেবল মানুষকে বাঁচানোর ইচ্ছেশক্তি। নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য বাতাস পাঠাচ্ছে তারাই। খাবার দায়িত্বও নিয়েছে তারা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সংগীতের মু্ক্তি’র একটা কথা মনে পড়ে গেল, ‘যৌবনের স্বভাবসিদ্ধ সাহস যাঁদের আছে এবং লক্ষ্মীছাড়ার ক্ষ্যাপা হাওয়া যাদের গায়ে লাগিল, এই একটি আবিষ্কারের দুর্গমক্ষেত্র তাঁদের সামনে পড়িয়া’। সেই ক্ষ্যাপা হাওয়া গায়ে লাগানো প্রয়োজন। নতুন প্রজন্মকে সব সময়ে সমালোচনা করলে, তারা কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। তাদেরও খানিক পিঠ চাপড়ে দেওয়া দরকার।
আমাদের তারুণ্যের সময়ে কথায় ফিরে যাই। ভয়াবহ সময় আমরাও দেখেছি। ব্যক্তিগত স্তরে আমরাও ঝাঁপিয়ে পড়েছি। কিন্তু সে খবর বাইরের দুনিয়ার কাছে পৌঁছায়নি। কারণ নেটমাধ্যম ছিল না। আজ সেটা আছে। তার থেকেও বড় কথা, এমন বীভৎস অতিমারির সময়ের মধ্যে দিয়ে আমরা যাইনি। পৃথিবী জুড়ে এ রকম হাহাকার দেখা যায়নি।
আড্ডা মারা, গান-বাজনা করা, রাস্তায় নেমে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা— এটাই তারুণ্যের ধর্ম। তার মানে যে তারা দেশের-দশের কাজে লাগে না, এমনটাও নয়।
রাজনীতি নিয়ে মত বিরোধ থাকতেই পারে। তার উপরে ভিত্তি করেই কি মানুষকে সেবা করবে? কখনওই না। আমার পড়শি যদি আজ আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন, কাল তিনি অসুস্থ হয়ে প়ড়লে, আমিই যাব তাঁর সেবা করতে। তাই যে দলের স্বেচ্ছাসেবীরা এই দুর্ভোগের সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের কোনও রাজনৈতিক দল হিসেবে না দেখে, আপনার সাহায্যের হাতটাও বাড়িয়ে দিন। এই কঠিন সময়ে মনটাকে বিস্তৃত করে দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy