রূপঙ্কর বাগচী।
কেকে-বিতর্কের পর মঞ্চে রূপঙ্কর। অধিকাংশ উদ্যোক্তা রূপঙ্করকে অনুষ্ঠান থেকে ইতিমধ্যেই বাদ দিয়েছেন। নেট্মাধ্যমে ঝড় উঠেছে ‘বয়কট রূপঙ্কর’। আমজনতা থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজক সবাই যখন রূপঙ্করকে বয়কটের কথা ভাবছেন, তখন মঞ্চই ফিরিয়ে দিল শিল্পীর পায়ের তলার মাটি। হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস। স্কটিশ চার্চ স্কুলের উদ্যোগে মোহিত মৈত্র মঞ্চে রবিবার তিনি একক অনুষ্ঠান করলেন।
মঞ্চে এসে কোনও কথা নেই। গান দিয়ে শুরু হল অনুষ্ঠান। গান বলল তাঁর মনের কথা। কী সেই গান? "এই মৃত মহাদেশে রোদ্দুর বার বার,হয়তো নদীর কোন রেশ ..রাখতে পারিনি অবশেষ"। অথবা "খেলায় সব হাতগুলো হারবার পরেও খেলেছি এক দান,বুঝিনি কিসের এত টান।”
‘হেমলক সোসাইটি’-র ‘আমার মতে তোর মতন কেউ নেই’— এই গান দিয়েই নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলে গেলেন রূপঙ্কর। ধূসর রঙের শার্ট, জিনস আর হাতে গিটার।
প্রথম গানের পর মুখ খুললেন গায়ক। তিনি বললেন, “এই অনুষ্ঠান আমার জন্য দরকার ছিল। আপনারা আমাকে গানের জন্য অনুরোধ করছেন এটাও আমার দরকার ছিল। বিশেষ করে যারা আমার সঙ্গে সঙ্গত করলেন, তাঁদের জন্যও এই অনুষ্ঠান খুব দরকার ছিল। ”কোনও ছাপার অক্ষরে লেখা বিবৃতি পাঠ নয়। এক জন গায়ক তাঁর ভালবাসার দর্শকদের সামনে মনের কথা বললেন অবশেষে। কেকে-র বিতর্কের পর এই প্রথম। জানালেন, এই মঞ্চ, গান তাঁর বেঁচে থাকার রসদ। এত দিন দমবন্ধ করে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। কেকে-র মৃত্যুর পরে তাঁকে ঘিরে বিতর্ক প্রসঙ্গ ছুঁয়ে গেলেন। বললেন, ”আমার অভিনয় নিয়েও কথা উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে বলতে চাই অভিনয়ের জন্য আমাকে ডাকা হয়। ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য আমাকে ডাকা হয়েছিল। ওই ছবিতে আমি গানও গেয়েছি। অনেকেই আমার অভিনয় করা নিয়ে রাগ করেন। আমার হয়তো অভিনয় করা ভুল হয়েছে।’
এ রূপঙ্কর অন্য রূপঙ্কর। নরম রূপঙ্কর। ফেসবুক লাইভের সেই মেজাজ আর নেই। সহজেই মেনে নিলেন তাঁর অভিনয় করা ভুল!দর্শকও যেন এই রূপঙ্করকেই ভালবাসে। বার বার নানা গানের অনুরোধ এল তাঁর কাছে। নিজের পছন্দের গানের চেয়ে দর্শকের অনুরোধের গান-ই তিনি এ বার গাইলেন। স্কটিশ চার্চ স্কুলের ৯৬-এর ব্যাচ তখন মেতে উঠেছে রূপঙ্করের গানে। তাঁর ‘প্রিয়তমা’, ‘ও চাঁদ’-এর সঙ্গে গলাও মিলিয়েছিলেন তাঁরা। গভীর হল রাত। গান ধরলেন গায়ক। শেষ গানে গভীরে যাওয়ার রেশ— ‘তাই গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও, গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও এই বুঝি তল পেলে, ফের হারালে।’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy