ওয়র ছবির দৃশ্য।
ওয়র
পরিচালনা: সিদ্ধার্থ আনন্দ
অভিনয়: হৃতিক রোশন, টাইগার শ্রফ, বাণী কপূর
৫/১০
একই ফ্রেমে সুদর্শন ও সুপার স্মার্ট দুই নায়ক। হৃতিক রোশন, টাইগার শ্রফ। অ্যাকশন, ডান্স, সোয়্যাগে কেউ কারও চেয়ে কম নন। ফলে পরিচালক সিদ্ধার্থ আনন্দ দোটানায়। কাকে প্রাধান্য দেবেন, গল্প না কি দুই তারকাকে?
আন্ডারকভার এজেন্টদের গল্প। অতএব ছবির লুক ঝাঁ চকচকে। স্মার্টনেসে তার টক্কর হলিউডের সঙ্গে। ছবিতে এজেন্টদের প্রতিপক্ষ আন্তর্জাতিক টেররিস্ট। দুনিয়াজোড়া তাদের নেটওয়র্ক, সেই যুক্তিতে সিরিয়া, মলটা, মারাকেশ, কেরলের ব্যাকওয়াটার হয়ে আর্টিক সার্কল অবধি পৌঁছে যাওয়া। দেশপ্রেমিক এজেন্ট কবীর (হৃতিক) সিরিয়ায় যায় এক ভয়ানক টেররিস্টকে ধরতে। তার সঙ্গী খালিদ (টাইগার)। কিন্তু কে সেই বিশ্বত্রাস? আড়াই ঘণ্টার ছবিতে দুর্ধর্ষ দুশমনের উপস্থিতি মিনিট ১০ বা ১৫! হ্যাঁ, বলতে পারেন চিত্রনাট্যে চরিত্র কতটা গুরুত্ব রাখে, সেটাই বিবেচ্য। ছবির সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এটাই যে, প্রতিপক্ষ এতটাই অকিঞ্চিৎকর, ছবি শেষ হওয়ার পরে তার নামটুকু অবধি মনে থাকে না! এজেন্ট বনাম টেররিস্ট গল্পের যে গতি, বাঁক, মোচড়, টানটান উত্তেজনা প্রত্যাশিত, তা কোথায়? এ প্রসঙ্গে ‘ফ্যান্টম’ বা ‘টাইগার জ়িন্দা হ্যায়’ ছবির তুলনা এসেই যায়। সেখানে আন্ডারকভার এজেন্ট ও টেররিস্টের দ্বৈরথ দেখতে গিয়ে শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নামে। সেই উত্তেজনাটাই এখানে নেই।
দীর্ঘদিন পরে পর্দায় হৃতিক রোশনকে এতটা গ্ল্যামারাস ভাবে দেখা গেল। তাঁর চুলে-দাড়িতে ধূসর পোঁচ। ট্যানড স্কিনটোন। মুখে-শরীরে নানা জায়গায় কাটা দাগ। এ হেন ‘খুঁত’ও যে এত নিখুঁত করে তুলতে পারে কাউকে, সেটা হৃতিক রোশনকে না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। মধ্য চল্লিশের নায়কের পুরুষালি রূপ, তাঁর পাশে দাঁড়ানো তিরিশে পা রাখতে চলা নায়ককে প্রতি পদক্ষেপে চ্যালেঞ্জ জানায়। হৃতিকের অভিনয় খানিকটা পাথরের মতো মনে হতে পারে, সেটা অবশ্য চরিত্রের কারণে বলে মেনে নেওয়া যায়। শিষ্য খুবই চেষ্টা করেছেন গুরুর কাছাকাছি পৌঁছতে। নাচে, ফিটনেসে, অ্যাকশনে তিনিও কম যান না। কিন্তু এই টেরিটরিগুলোয় হৃতিক হলেন সম্রাট। তবে খালিদের লৌহকঠিন অভিব্যক্তির ফাঁক দিয়েও মাঝে মাঝে বেরিয়ে পড়ে একটা ব্যথাতুর মন। তাতেই হৃতিকের পাশে নজর কেড়েছেন টাইগারও।
ছবির গোড়ার দিকে গল্প বলার একটা চেষ্টা অবশ্য ছিল। এক দেশদ্রোহীর ছেলে খালিদকে এজেন্ট কবীরের টিমে নেওয়া নিয়ে টানাপড়েন। কারণ খালিদের বাবার হত্যাকারী যে কবীরই। একটা সম্ভাবনা জাল বুনতে থাকে। এ দিকে কবীর এক টেররিস্টকে মেরে ফেলার বদলে সেনাবাহিনীর এক অফিসারকে হত্যা করে। এমন দেশপ্রেমিক এজেন্ট কেন হঠাৎ দেশের বিরুদ্ধে? তা খুঁজে বার করার দায়িত্ব নেয় খালিদ... অবশ্য অচিরেই গল্পের জাল ছিঁড়ে ফর্দাফাই। বিশেষ করে শেষ পনেরো মিনিট এতটাই দীর্ঘায়িত যে, ধৈর্য রাখা মুশকিল। ছবির আরও একটি বড় দুর্বলতা রয়েছে। সেটির সঙ্গেই অবশ্য টুইস্টটি জড়িয়ে। তবে প্রশ্ন এটাই যে, সত্তর-আশির দশকে বলিউডে যা দেখা যেত, ২০১৯-এর শেষ দিকে এসেও গল্পে টুইস্ট আনার খাতিরে তার আশ্রয় নেওয়া হবে কেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy