Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

প্রতিটি মেয়ের জীবনই লড়াই, ‘মান্টো’য় অভিনয়ে ভিন্ন উপলব্ধি রসিকা দুগালের

কান-এ নন্দিতা দাসের ‘মান্টো’ দেখার পর ‘মান্টো’-র টিমকে স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিয়েছে আন্তর্জাতিক সিনেমা জগত। সেই উচ্ছ্বাস নিয়ে সদ্য কান থেকে ফিরে প্রথম আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে মুম্বই থেকে ফোনে কথা বললেন ছবিতে ‘মান্টো’র স্ত্রী ‘সাফিয়া’ ওরফে রসিকা দুগাল।কান-এ নন্দিতা দাসের ‘মান্টো’ দেখার পর ‘মান্টো’-র টিমকে স্ট্যান্ডিং ওভেশন দিয়েছে আন্তর্জাতিক সিনেমা জগত। সেই উচ্ছ্বাস নিয়ে সদ্য কান থেকে ফিরে প্রথম আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে মুম্বই থেকে ফোনে কথা বললেন ছবিতে ‘মান্টো’র স্ত্রী ‘সাফিয়া’ ওরফে রসিকা দুগাল।

মান্টোয় রসিকা।

মান্টোয় রসিকা।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ১৫:৩২
Share: Save:

‘‘সাফিয়া সম্পর্কে খুব বেশি জানা যায় না। আমি নন্দিতার সাফিয়া মান্টোকে নিয়ে লেখা পড়েছি। আর নন্দিতা নিজেও পাকিস্তানে গিয়ে সাফিয়ার বোনের সঙ্গে কথা বলেছে, সেখান থেকেও আমরা চরিত্রের আভাস পেয়েছি। তবে অনেকটা অচেনা চরিত্র থাকলে দর্শকদের মধ্যে তাকে নিয়ে প্রত্যাশা কম থাকে,’’ বুঝিয়ে দিলেন রসিকা। ইন্ডাস্ট্রিতে যিনি কাজপাগল মানুষ হিসেবে পরিচিত। ওয়েব সিরিজ থেকে শর্ট ফিল্ম, সিনেমা প্ল্যাটফর্মের চেয়ে চরিত্র তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে সিনেমা ‘ভাল’, ‘খারাপ’ বা সিনেমা কোনও প্রডাক্ট— এই ভাবনা থেকে তিনি কোনও দিন ছবি করেননি।

কেরিয়ারের দশ বছরে এসে ‘মান্টো’ তাঁর ইন্ডাস্ট্রিতে ওঠাপড়ার লড়াইয়ের স্বপ্নের জয় ছিনিয়ে এনেছে। ইন্ডাস্ট্রিতে সবচেয়ে কাছের বন্ধু পরিচালক টিসকা চোপড়া। ‘‘অসাধারণ এক পরিচালক। আমার সব সমস্যার সমাধান আছে ওর কাছে’’, হাসতে হাসতে বললেন রসিকা। ‘মান্টো’ আন্তর্জাতিক সিনেমার দর্শককে ছুঁয়ে গিয়েছে কেন? তার কারণ বলতে গিয়ে রসিকা বলেন, ‘‘আসলে দেশভাগ এমন একটা বিষয় যা আজ সব অনুভূতিশীল মানুষকে ঘা দেয়।’’

নন্দিতার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে বুঝেছেন তিনি। ‘‘নন্দিতা নিজের স্বচ্ছ ধারণা ছবির মধ্যে নিয়ে ফেলতে কোনও বিষয়ে কম্প্রোমাইজ করেন না। এটা চেপে দেব, ওটা বলব না, ওর লজিকে নেই। নন্দিতা দীর্ঘ দিন মান্টোর পরিবারকে কাছ থেকে দেখেছে। ওর তাই কাজটা করতেও সুবিধা হয়েছে। আমার তো মনে হয় মুম্বই ইন্ডাস্ট্রিতে এত স্পষ্ট কথা বলার মানুষ খুব কম আছে।’’ বিস্ময় রসিকার গলায়।

আরও পড়ুন: কান-এ যাচ্ছে না মান্টোর বায়োপিক

মান্টোর প্রায় সব লেখাই তাঁর গুলে খাওয়া। বললেন, ‘‘আমরা সাদাত হাসান মান্টো-কে উপমহাদেশের দাঙ্গা ও দেশভাগের শ্রেষ্ঠ কথাকার বললে এত দিনে মনে হয় কেউ আর আপত্তি করবে না। দেশভাগের যন্ত্রণা, ছিন্নমূল মানুষের হাহাকার, দাঙ্গার আতঙ্ক, সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত বিদ্বেষ এত নিপুণ দরদে আর কে-ই বা এ ভাবে দেখিয়েছেন।’’ রসিকার কথায়: ‘‘আর সবচেয়ে বড় কথা, আজও তিনি প্রাসঙ্গিক।’’

প্রসঙ্গ, সময়, কাল আরও জোরালো হয়েছে যখন যৌন অত্যাচারের বিরুদ্ধে কান ফেস্টিভ্যালে ৮২ জন শক্তিশালী মহিলার সঙ্গে রেড কার্পেটে নীরবে নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছেন রসিকা। সোচ্চার হয়েছেন #metoo আন্দোলনে। ‘‘ওই সময় হাতে হাত মিলিয়ে মুগ্ধ হয়ে শুনলাম কেট ব্লেঙ্কেটের বক্তব্য। অনেকের মতো আমারও সে দিন চোখে জল এসে গিয়েছিল।’’ আবেগে রসিকার গলা আজও যেন বেদনায় উদ্ভাসিত। তিনি জানেন, প্রত্যেক মেয়ের জীবনটাই লড়াই। ভিড় করে আসা অনেক আলো মুখের মাঝে আছে যৌন হেনস্থার অন্ধকার অভিশাপ! সেই লড়াইয়ে মেয়েদের সঙ্গে তিনি আছেন জানাতেই #Metoo-র যাত্রায় তাঁর নিজেকে এগিয়ে দেওয়া।

অন্য বিষয়গুলি:

Rasika Dugal Manto Bollywood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE