রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। ছবি: সংগৃহীত।
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোট গল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে অনির্বাণ চক্রবর্তীর তৈরি ছবি ‘ও অভাগী’। প্রধান চরিত্রে অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। বাংলাদেশের মেয়ে মিথিলার আরও এক পরিচয় আছে কলকাতায়। তিনি বাঙালি যুবসমাজে অতি জনপ্রিয় পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী-ও বটে। দুই দেশের মধ্যে ভাগাভাগি করেই থাকেন মিথিলা। তবে বেশিরভাগ সময়টা কলকাতাতেই কাটাচ্ছেন আজকাল। ‘ও অভাগী’ ছবির প্রিমিয়ারের মাঝে তিনি কথা বললেন আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে।
প্রশ্ন: সাধারণত আপনাকে ঢাকাই জামদানি শাড়িতে দেখা যায়, আজ অন্য শাড়ি?
মিথিলা: বিশেষ কোনও কারণ নেই। বাংলাদেশের এক বুটিকের শাড়ি। প্রিমিয়ারে পরার জন্য ওরাই এই শাড়িটা আমায় দিয়েছে। আর সাজগোজ আমি নিজে করতেই ভালবাসি। অন্য কারও প্রয়োজন হয় না।
প্রশ্ন: টলিউডে ‘মায়া’ ছবিতে আপনার প্রথম কাজ। কেমন প্রতিক্রিয়া ছিল?
মিথিলা: ‘মায়া’-তে অন্তত আমার চরিত্রের খুব ভাল প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। ‘ও অভাগী’ যাঁরা আজ দেখলেন, তাঁরাও ভাল বলছেন। একটু নার্ভাস লাগছে। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী যে, ছবিটা খুব ভাল হয়েছে।
প্রশ্ন: ‘ও অভাগী’র জন্য প্রস্তুতি পর্ব কেমন ছিল?
মিথিলা: ‘ও অভাগী’ মোটেই সহজ চরিত্র নয়। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। অভাগী শহুরে ভাষায় কথা বলে না। তার কথায় আঞ্চলিক ভাষার টান রয়েছে। সেটা আমায় অনুশীলন করতে হয়েছে। এ ছাড়া ‘অভাগী’র ‘কাঙালির মা’ হয়ে ওঠার যাত্রাটা আমাকেও আবেগপ্রবণ করেছিল।
প্রশ্ন: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবিতে বাংলাদেশের অন্য অভিনেত্রীরা কাজ করছেন। আপনাকে কবে দেখা যাবে?
মিথিলা: এই প্রশ্নের উত্তর বোধ হয় সৃজিত ভাল দিতে পারবেন। এর উত্তর আমার জানা নেই।
প্রশ্ন: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী— এই পরিচয়ের জন্য কি অন্য পরিচালকদের থেকে ছবির প্রস্তাব কম আসে?
মিথিলা: আমরা পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় বাস করি। তাই এই রকম একটি তকমা (ভাবনা) এই একবিংশ শতাব্দীতেও থাকা খুবই লজ্জাজনক। এটুকুই। তবে আমার মনে হয় না, এই তকমা আলাদা কোনও প্রভাব ফেলছে।
প্রশ্ন: এই পরিচয়ের কোনও সুবিধা রয়েছে?
মিথিলা: এর কোনও সুবিধা নেই। তবে অসুবিধা রয়েছে। কারণ আমার নিজের শক্তিশালী একটা পরিচয় রয়েছে। আমাকে বাংলাদেশে সকলে চেনেন। কারণ আমি অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি একজন উন্নয়ন কর্মী, একজন গবেষণার ছাত্রী। আমার আরও বহু কাজ রয়েছে। এই বাংলায় শুধু আমাকে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী হিসেবেই দেখা হয়। অবশ্যই আমি তাঁকে বিয়ে করে এখানে এসেছি। কিন্তু শুধুই এই পরিচয়তেই মানুষ চিনছে, সেটা দুঃখজনক।
প্রশ্ন: একসঙ্গে এতগুলি কাজের ফলে দুই বাংলায় যাতায়াত হতেই থাকে। তবে বিয়ের পরে সম্পর্কে এই ভৌগোলিক দূরত্ব কী ভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন?
মিথিলা: আমি তো বিয়ের পরে মহামারী (করোনা অতিমারী)-র সময়ে টানা তিন বছরের বেশি সময় এখানে থেকেছি। কিন্তু কাজের জন্য আমাদের দু'জনকেই বহু জায়গায় যেতে হয়। আমি যখন এখানে ছিলাম, তখন সৃজিত প্রায় দু’বছর মুম্বইয়ে ছিল। এটা আমাদের পেশার মধ্যেই পড়ে।
প্রশ্ন: এমন কোনও স্বপ্নের চরিত্র রয়েছে, যা সৃজিতের পরিচালনায় করতে চান?
মিথিলা: আমি কাজ একেবারেই পরিচালককে দেখে করি না। আমি তো অনির্বাণকে চিনতামই না। তা হলে আমার ‘ও অভাগী’-তে অভিনয় করা হত না। অথবা ‘মায়া’-তেও কাজ করা হত না। এখানে আমি সৃজিত ছাড়া কাউকেই চিনি না। তাই আমার কাছে গল্প ও চরিত্র কেমন, সেটাই সব।
প্রশ্ন: টলিউডের কোন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে চান?
মিথিলা: সব পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। গল্প ও চরিত্র ভাল হলেই হবে।
প্রশ্ন: টলিপাড়ায় পছন্দের অভিনেতা কারা?
মিথিলা: অনেকে আছেন। আমার আশপাশের মধ্যে পরমের (পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়) অভিনয় ভাল লাগে। এ ছাড়া অনির্বাণ ও আবিরের অভিনয়ও ভাল লাগে।
প্রশ্ন: উলুপীর সঙ্গে আলাপ হল? কেমন বোঝাপড়া হচ্ছে? আইরার সঙ্গে আলাপ হয়েছে?
মিথিলা: উলুপীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আর সঙ্গে তার বান্ধবী, বোন, দিদিও রয়েছে। এখন বাড়িতে চারটি ‘বল পাইথন’ রয়েছে। আইরার সঙ্গে এখনও আলাপ হয়নি। তবে ও কী ভাবে গ্রহণ করবে, জানা নেই। কিন্তু উলুপীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য ও উত্তেজিত।
প্রশ্ন: আপনার শাড়ির সম্ভার ঈর্ষণীয়। সম্প্রতি শাড়ি পরার ধরন নিয়ে সমাজমাধ্যমে বিতর্কের ঝড় উঠেছে…
মিথিলা: আমি মনে করি, যাঁর যে ভাবে ইচ্ছে শাড়ি পরুন, যে ভাবে ইচ্ছে প্যান্ট অথবা টপ পরুন। এতে আমার কিছু যায়-আসে না। যে যেটায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন সেটাই পরুন। এ ছাড়া ঘটনাটা আমার জানা নেই। কারণ দু’মাস আমি দেশের বাইরে ছিলাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy