পূজা গায়েন
আত্মঘাতী টলিউডের পোশাক সহকারী পরিচালক। সোমবার রাত ২টোর পরে ঝুলন্ত অবস্থায় কলাকুশলী পূজা গায়েনের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। স্টুডিয়োপাড়ার কাছেই নেতাজী নগরে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন পূজা। বয়স ২৬ বছর। পূর্ব বর্ধমানের দেবীপুরে গ্রামের বাড়িতে তাঁর বাবা ও মা থাকেন। বাংলা ধারাবাহিকে ক্যামেরার পিছনে কাজ করতেন পূজা। স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘প্রথমা কাদম্বিনী’-তেও শিল্পীদের পোশাকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে তরুণী তাঁর এর বন্ধু জিনা সরকারকে ফোন করে তাঁর নেতাজী নগরের বাড়িতে ডাকেন। জিনা এসে দেখেন পূজার আর এক বন্ধু টুম্পা রায়ও সেখানে রয়েছেন। রাতে খাবার খাওয়ার পরে মদ্যপান করতে করতে প্রায় সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩ জনে মিলে গল্প করেন। আচমকা পূজা ও টুম্পার মধ্যে বচসা শুরু হয়। গালিগালাজ করতে থাকেন একে অপরকে। বিরক্ত হয়ে পূজা ঘুমের ওষুধ খেয়ে নিজের ঘরে শুয়ে পড়েন। তাঁর মুখে জল ঢেলে তাঁকে জাগিয়ে তোলেন টুম্পা। কিন্তু বন্ধুদের ঘর থেকে বের করে দিয়ে ঘর বন্ধ করে দেন পূজা। মিনিট পাঁচেক পর থেকেই টুম্পা ও জিনা তাঁর দরজায় ধাক্কা মারতে শুরু করেন। পূজার সাড়া না পেয়ে হাতুড়ি দিয়ে দরজা খোলেন তাঁরা। দেখা যায়, পাখা থেকে ঝুলছে তাঁর দেহ। গলায় রয়েছে একটি গামছা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর সময় সোমবার রাত পৌনে ১২টা। কিন্তু থানায় খবর যায় ২টো নাগাদ। বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসক পূজাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। যদিও এখনও কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি। কিন্তু তদন্ত চলবে।
‘প্রথমা কাদম্বিনী’-তে একসঙ্গে কাজ করেছেন পূজা ও জাগৃতি গোস্বামী। ধারাবাহিকে শশীর চরিত্রে অভিনয় করতেন জাগৃতি। আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে তাঁকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ধারাবাহিকে কাজ করতে গিয়েই আলাপ হয় পূজার সঙ্গে। খুবই প্রাণোচ্ছল স্বভাবের মানুষ ছিলেন পূজা। ক্যামেরার পিছনের পরিবেশ মাতিয়ে রাখতেন তিনি। জাগৃতি বললেন, ‘‘মাঝে মাঝে মন খারাপ করত পূজা। কারণ জানতে চাইনি কোনও দিনও। কারণ আমাদের সম্পর্ক সেই গণ্ডি কখনও পার করেনি। তবে ওকে চিকিৎসকের সাহায্য নিতে বলতাম।’’ এক বার পূজা তাঁকে শাড়ি পরাতে নিয়ে যান। তখন তাঁর হাতে একাধিক কাটা দাগ দেখতে পান জাগৃতি। জিজ্ঞেসও করেন, কিন্তু উত্তর পাননি পূজার কাছ থেকে। মঙ্গলবার এক সহ-অভিনেত্রীর কাছ থেকে পূজার আত্মহত্যার খবর পেয়েছেন জাগৃতি। খুবই ভেঙে পড়েছেন অভিনেত্রী। কিন্তু আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই।
মলিনা স্বর্ণকার সেই ধারাবাহিকেই কেশসজ্জার কাজ করতেন। ৯ মাস একসঙ্গে কাজ করেছেন মলিনা ও পূজা। খুবই ভাল সম্পর্ক ছিল বলে জানালেন মলিনা। এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না তিনি। সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তাঁরা একসঙ্গেই থাকতেন। কিন্তু ধারাবাহিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে যোগাযোগ রাখা হয়নি ব্যস্ততার জন্য। ফলে পূজা এই ঘটনা কেন ঘটিয়েছেন, তার খোঁজ নেই মলিনার কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy