শ্রীলেখা মিত্র।
ফের শাসক দলের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন শ্রীলেখা মিত্র। তাঁর অভিযোগ, রেড ভলান্টিয়ার্সদের টিকাকরণ থেকে ‘বঞ্চিত’ করেছে তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার কলকাতার এক সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদন নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে পোস্ট করেছেন বাম সমর্থক অভিনেত্রী। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত ৩১ মে থেকে রেড ভলান্টিয়ার্সদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরেও সেই প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে রাজ্য সরকার। যার ফলে গত বুধবার টিকা পাননি ১৮০ জন মতো স্বেচ্ছাসেবক। মাত্র ২ দিনের মাথায় রেড ভলান্টিয়ার্সদের টিকাকরণ প্রক্রিয়া থেমে যাওয়ার পিছনে দলীয় রাজনীতিকেই কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন শ্রীলেখা।
করোনা অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর থেকেই অতি সক্রিয় রেড ভলান্টিয়ার্সরা। হাসপাতালে শয্যা, দুষ্প্রাপ্য ওষুধ খুঁজে দেওয়া থেকে রাত বেরাতে দূর দূরান্তে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া— দিন রাত এক করে মানুষকে সাহায্য করতে ব্যস্ত বাম দলের এই স্বেচ্ছাসেবকবাহিনী। শ্রীলেখা নিজেও যুক্ত তাঁদের সঙ্গে। অভিনেত্রী মনে করছেন, রেড ভলান্টিয়ার্সদের অবিরাম কাজ হীনমন্যতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসক দলের। তাই প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে তাঁদের টিকাকরণ আটকে দিয়েছে সরকার। শ্রীলেখার কথায়, “আমি বলছি না সব জায়গায় ভলান্টিয়ারদের সঙ্গে এ রকম হচ্ছে। তবে কিছু জায়গায় হচ্ছে। তবে এ সব দেখে আমি অবাক হই না। যে দল মানুষের চাল চুরি করে, আমপানের সময় ত্রিপল চুরি করে, সেই দল এমনটা করতেই পারে। সরকার কোনও কাজ করছে না। অথচ রেড ভলান্টিয়ার্সদের এত কিছু করতে দেখে ওদের টিকাকরণই বন্ধ করে দিল।”
তৃণমূলের বিধায়ক দেবাশিস কুমারের মেয়ে অভিনেত্রী দেবলীনা কুমার শ্রীলেখার এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। অতীতে শ্রীলেখার সঙ্গে তাঁর কাজিয়ার সাক্ষী থেকেছে নেটমাধ্যম। আনন্দবাজার ডিজিটাল দেবলীনার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “শ্রীলেখাদি ফেসবুকে কী প্রতিবেদন পোস্ট করেছেন আমি জানি না। তবে এটুকু বলতে পারি, রেড ভলান্টিয়ার বলে কেউ টিকা পাবেন না, এমনটা হবে না। কে কোন দলের, তার উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা করা হচ্ছে না।”
সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শ্রীলেখা। তাদের ‘ব্যর্থতা’-র খতিয়ানও দিয়েছেন তিনি। তবে তাদের ইতিবাচক দিকগুলিকে উড়িয়ে দেননি অভিনেত্রী। তৃণমূলের নব নির্বাচিত বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর কাজে মুগ্ধ শ্রীলেখা। হেরে গিয়েও সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সায়নী ঘোষের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ তাঁর চোখ এড়িয়ে যায়নি। অভিনেত্রীর কথায়, “ওঁদের নিজেদের কর্তব্য পালন করতে দেখে ভাল লাগছে। কিন্তু কাজ করার জন্য ওঁরা দল থেকে সাহায্য পাচ্ছেন। রেড ভলান্টিয়ার্সরা কিন্তু সবটাই নিজেদের মতো করছেন।” অভিনেত্রী জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে অনেকেই লকডাউনের জেরে চাকরি হারিয়েছেন, কেউ বা ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী জোগাড় করতে নিজের সাধের ক্যামেরাটুকু বিক্রি করে দিয়েছেন। মানুষের জন্য, মানুষের পাশে থাকা এই রেড ভলান্টিয়ার্সরা টিকা না পাওয়ায় নতুন করে প্রতিবাদের পথ বেছে নিলেন অভিনেত্রী। তিনি বললেন, “দুষ্টুকে দুষ্টু বলার সাহস রাখি। যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এ ভাবেই সত্যিটা বলে যাব। কে কী বলল, বা ভাবল সেই পরোয়া কোনও দিন করিনি। ভবিষ্যতেও করব না।”
টিকার পাশাপাশি ইয়াসে বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকায় শাসকদলের ত্রাণ নিয়ে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন শ্রীলেখা। তাদের অনীহা এবং গাফিলতিতেই মানুষ আরও বেশি করে বাম দলের এই স্বেচ্ছাসেবক গোষ্ঠীর উপর নিভরশীল হচ্ছেন বলে মনে করছেন অভিনেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy