‘পাঠান’-এর চাপে বাংলা ছবির পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
‘পাঠান’ মুক্তির পর ছ’দিন কেটে গিয়েছে। বক্স অফিসে শাহরুখ খান অভিনীত এই ছবি কিন্তু একের পর এক নজির গড়েই চলেছে। এ দিকে ছবির মুক্তির আগে থেকেই ‘পাঠান’ বনাম বাংলা ছবি নিয়ে ‘বিতর্ক’ দানা বেঁধেছে। রাজ্যের সিঙ্গল স্ক্রিনে সিদ্ধার্থ আনন্দ পরিচালিত ছবিটি চালানোর ক্ষেত্রে ‘নো শেয়ারিং’ নীতি নিয়েছে প্রযোজনা সংস্থা যশরাজ ফিল্মস। ফলে বাংলা ছবি হল পাচ্ছে না। বিশিষ্টরা বাংলা ছবির পক্ষে কথা বলছেন। কেউ দোষারোপ করছেন পরিবেশককে। কারও অভিযোগের তির সিনেমা হল মালিকদের বিরুদ্ধে। আবার সমাজমাধ্যমের একটা বড় অংশের অভিযোগ বাঙালি দর্শকের প্রতি।
শেওড়াফুলির উদয়ন সিনেমায় চলছে ‘পাঠান’। সম্প্রতি হল কর্তৃপক্ষ তাঁদের ফেসবুকের পাতায় একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন। কর্তৃপক্ষের তরফে প্রশ্ন, ‘পাঠান’-এর জন্য বাংলা ছবি হল পাচ্ছে না। কিন্তু বাংলা ছবির শো থাকলে তখন কেন বাঙালি দর্শক আসেন না? ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা অবশ্যই চাই, বাংলা ছবি ভাল ব্যবসা করুক। ষাটের, সত্তরের কিংবা আশির দশকে কলকাতায় হিন্দি ছবি রিলিজ করার আগে দু’বার বলিউডকে ভাবতে হত। এখন সেখানে বছরে ৫ থেকে ১০টা ছবি ভাল হয়। বছরের বাকি সময়টায় তা হলে কী হবে?’’ সিঙ্গল স্ক্রিনের পরিকাঠামোগত খরচের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আগামী দিনে দর্শককে আরও বেশি করে বাংলা ছবি দেখার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
বাংলা ছবির বাজার যে ছোট, সে কথা অনস্বীকার্য। কারও মতে, তাই ‘পাঠান’-এর মতো বড় বাজেটের ছবির সঙ্গে বাংলা ছবির তুলনা অযৌক্তিক। ‘পাঠান’ মুক্তির পর থেকেই প্রযোজক রানা সরকার বাংলা ছবির পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। ‘পাঠান’ নিয়ে তাঁর অবস্থান জানার চেষ্টা করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। রানা বললেন, ‘‘খুবই সহজ। আমি ‘পাঠান’-এর বিরোধিতা করছি না। আমি বলতে চাইছি, বাংলা ছবি দেখে তার পর সেটা খারাপ না কি ভাল, বিচার করুন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে গত বছর ৫টা ছবি সুপারহিট। বলিউডে তো সেটাও নেই।’’ এই প্রসঙ্গেই রানা মনে করিয়ে দিতে চাইছেন, ‘‘এখনও বাংলায় পাঠান ১১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তার মানে তো দর্শক আছেন। অথচ চালু বাংলা ছবি সরিয়ে দিয়ে ‘পাঠান’ চালানোর জন্য বাঙালি দর্শক কোনও প্রতিবাদ করছে না!’’
চলতি সপ্তাহেই মুক্তি পাচ্ছে অতনু ঘোষের ছবি ‘আরো এক পৃথিবী’। ছবির অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য সমাজমাধ্যমে বিষয়টির সমালোচনা করেছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘বান্দ্রার অফিসে বসে প্রযোজক ঠিক করে দেবেন যে বাংলায় কোন ছবি চলবে, এটা মেনে নেওয়াটা কঠিন!’’ আবার ঋদ্ধি সেন যেমন ছবির গুণমান নিয়ে চিন্তা না করে ‘বয়কট গ্যাং’-এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘‘পাঠান’ এই বয়কট দলের গালে একটা সপাটে চড়। বাণিজ্যিক ছবির ভাষার দিক থেকেও ‘পাঠান’ একঘেয়ে। কিন্তু ‘পাঠান’ প্রমাণ করল যে, কেউ এসে ভারতবর্ষের নাগরিকদের হুকুম করতে পারে না, তাদের কোন ছবি দেখা উচিত আর কোন ছবি বয়কট করা উচিত।’’
এ দিকে ‘বাংলা পক্ষ’র তরফে গত শনিবার স্টার থিয়েটারের সামনে ডাকা হয়েছিল প্রতিবাদ সভা। বাংলা ছবির উপর ‘পাঠান’-এর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাঁদের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন পরিচালক শৈবাল চক্রবর্তী। অন্য দিকে ‘পাঠান’ দেখার পর কার্যত বাংলার দর্শকদেরই দুষেছেন সৌরভ পালোধী। ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে সৌরভ বলেছেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁরা তো ‘ঝিল্লি’ বা ‘দোস্তজী’ নামে যে কোনও ছবি আছে সেটাই জানতেন না!’’ সেই সঙ্গেই গেরুয়া বাহিনীর তরফে ছবি বয়কটের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সৌরভের মন্তব্য, ‘‘বিজেপি বয়কট করেছে বলেই আরও এক বার ছবিটা দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy