টিভি সিরিয়াল নিয়ে অচলাবস্থার মোকাবিলায় এ বার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল চারটেয় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তিনি নবান্নে নিজের ঘরে ডেকেছেন। প্রয়োজনে সরকার কঠোর নির্দেশ জারি করতে পারে বলেও নবান্ন সূত্রের খবর।
এর আগে বৃহস্পতিবারই বেলা ১১টায় টালিগঞ্জের টেকনিশিয়ান্স স্টুডিয়োয় রাজ্য তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। রাজ্যের মন্ত্রী তথা টেলি অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপ বিশ্বাসের তাতে পৌরোহিত্য করার কথা ছিল। সেই বৈঠক বাতিল করে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছনো যাবে বলে সব পক্ষই আশাবাদী।
এর আগে ৭ জুলাই অরূপবাবুর মধ্যস্থতায় প্রযোজকদের সংগঠন ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন প্রোডিউসার (ডব্লিউএটিপি) এবং শিল্পীদের সংগঠন, পশ্চিমবঙ্গ মোশন পিকচার্স আর্টিস্টস ফোরাম (ডব্লিউবিএমপিএএফ)-এর তরফে যৌথ ভাবে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার মধ্যে শিল্পী-কলাকুশলীদের বকেয়া টাকা মেটানো এবং কাজের সময় ১০ ঘণ্টায় বেঁধে দেওয়া ছিল অন্যতম। তার পরেও ফের জল ঘোলা হওয়ায় শনিবার থেকে শুটিং বন্ধ। এ ক্ষেত্রে কাজ বন্ধ রাখার আন্দোলন করছেন প্রযোজকেরাও। যদিও শিল্পীদের দাবি, তাঁরা শুটিং করার জন্য প্রস্তুত। তবে সময়সীমা এবং বকেয়া মেটানোর দাবি মানতেই হবে।
টানা পাঁচ দিন শুটিং বন্ধ থাকায় বেশ কয়েকটি টিভি সিরিয়ালের স্লটেই পুরনো পর্বের ‘রিপিট’ চলছে। তাছাড়া, টিভি সিরিয়াল চলা, না-চলার সঙ্গে জড়িয়ে বহু কলাকুশলীর জীবিকা। গোটা পরিস্থিতি কার্যত সামাজিক সমস্যার চেহারা নিয়েছে। এর ফলেই মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করতে চলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই সরকারি পদক্ষেপকে এক ধরনের ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা’ বলে ব্যাখ্যা করছেন টেলি অ্যাকাডেমির সভাপতি অরূপবাবুও।
প্রাথমিক ভাবে সরকারের ডাকা বৈঠকে প্রযোজকদের সংগঠনে, আর্টিস্ট ফোরাম এবং কলাকুশলীদের সংগঠনের (ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ান্স অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া) সভাপতি-সম্পাদকদের থাকতে বলা হয়েছিল। টেলি অ্যাকাডেমির শীর্ষ কর্তারা, তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের সচিব বিবেক কুমার, রাজ্যের চলচ্চিত্র অধিকর্তা প্রমুখেরও থাকার কথা ছিল। টেলি অ্যাকাডেমির সহ-সভাপতি শ্রীকান্ত মোহতা, কলাকুশলীদের সংগঠনের নেতা স্বরূপ বিশ্বাস (মন্ত্রী অরূপের ভাই) বা আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়— সকলেই মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। শ্রীকান্ত আবার সব থেকে প্রভাবশালী প্রযোজক। সমস্যা সমাধানের এই মুখগুলিকে দেখে কেউ কেউ এটা ‘বন্ধুদের ভিতরের লড়াই’ বলেও টিপ্পনী কাটছেন।
এর আগে কলাকুশলীদের সংগঠনের সঙ্গে প্রযোজকদের বিরোধ বেধেছে। তখনও সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে সবাইকে ডেকে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কার্যত প্রলেপ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার সমস্যা অভিনেতাদের সঙ্গেও। আর্টিস্ট ফোরামের সহ-সভাপতি অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আশা করি, ইতিবাচক কিছু ঘটবে।’’ শ্রীকান্তের কথায়, ‘‘আশা করছি, আলোচনার টেবিলেই সমস্যা মিটে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy