‘লাল সিংহ চড্ডা’ কিংবা ‘রক্ষাবন্ধন’ কোনও ছবিই প্রেক্ষাগৃহের সামনে ‘হাউসফুল’ বোর্ড টাঙাতে সক্ষম হয়নি।
করোনা অতিমারির ধাক্কা সামলে চলতি বছরে বক্স অফিসে ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিল বলিউড। কিন্তু অপ্রত্যাশিত ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে একের পর এক বড় বাজেটের ছবি। এমনকি, নামী-দামি তারকার ছবি থেকেও মুখ ফেরাচ্ছেন দর্শকরা। যার জেরে লোকসানের অঙ্ক বেড়েই চলেছে বলিপাড়ায়। কিন্তু কেন এই ব্যর্থতা? খামতি কোথায়? এই শিক্ষক দিবসে ছবি নির্মাতাদের ‘শিক্ষক’ যাঁরা, সেই দর্শকদের থেকে কী শেখার রয়েছে, তা আলোকপাত করা হল।
হিন্দি চলচ্চিত্র মানেই যে কারও চোখের সামনে যা ভেসে ওঠে, তা হল ‘লার্জার দ্যান লাইফে’র গল্প, ঝাঁ-চকচকে লোকেশন, দুর্দান্ত নাচ-গান। যদিও এই প্রথাগত ছকের বাইরেও ইদানীং বলিপাড়ার বহু ছবিই বক্স অফিসে রাজ করছে। বড় বাজেটের ছবি, জাঁকজমকপূর্ণ সেট যে আদতে সবসময় দর্শকদের হলমুখী করতে পারে না, সেই বার্তাই এ বার পেয়েছেন বি-টাউনের ছবি নির্মাতারা।
‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’, ‘শামসেরা’, ‘লাল সিংহ চড্ডা’-র মতো একাধিক বড় বাজেটের ছবি এ বছর মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু বক্স অফিসে এই ছবিগুলির ভরাডুবি হয়েছে। তা হলে বড় বাজেটের ছবি জনতা-জনার্দন পছন্দ করছে না? কিন্তু ‘আরআরআর’ বা ‘কেজিএফ ২’-এর মতো ছবি সিনেমা হল কাঁপিয়েছে। অনেকের মতে, মূলত দক্ষিণী এই ছবিগুলিতে আড়ম্বর থাকলেও, ছবির গল্প দর্শকদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। দর্শকদের একাংশের মতে, বলিপাড়ার ছবিতে চিত্রনাট্য ইদানীং বড়ই নড়বড়ে। গল্পে নতুনত্বের স্বাদও কম। সে কারণেই বর্তমানে হিন্দি ছবির এই বেহাল দশা।
উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরেছিল ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। কম বাজেটের ছবি হয়েও বক্স অফিসে প্রভাব ফেলেছে এই ছবি। তাই দর্শকদের মতে, ছবির বিষয়বস্তু ও গল্প আকর্ষণীয় হলেই তা বক্স অফিসে লক্ষ্মীলাভ করতে পারে। বেশ কিছু বছর ধরেই ছবি মুক্তির আগে প্রচারে গুরুত্ব দিচ্ছেন প্রযোজকরা। ছবি মুক্তির এক মাস আগে থেকেই ঢাকঢোল পিটিয়ে তাই প্রচার করতে দেখা যায় তারকাদের। অনেকে অভিনব কায়দাতেও প্রচার করে থাকেন। কিন্তু প্রচারের ঢক্কানিনাদ সত্ত্বেও যে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকদের নিয়ে যেতে ব্যর্থ হন অনেক ছবি নির্মাতা, তার প্রমাণ ‘লাইগার’। দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবরাকোন্ডা ও বলিউডের নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডের এই ছবিও ছাপ ফেলতে পারেনি। অথচ, ছবি মুক্তির আগে ঢালাও প্রচার করেছেন তাঁরা। নামী তারকার ছবি হলেই সাফল্য পাওয়া যাবে, সেই সমীকরণও ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
অক্ষয় কুমারের ‘রক্ষাবন্ধন’ কিংবা আমির খানের ‘লাল সিংহ চড্ডা’, কোনও ছবিই প্রেক্ষাগৃহের সামনে ‘হাউসফুল’ বোর্ড টাঙাতে সক্ষম হয়নি। আবার, বর্তমানে ‘প্যান ইন্ডিয়া’র তকমা দেওয়া দক্ষিণী ছবি বলিউডের অনেকটা বাজারই কেড়ে নিয়েছে বলে ধারণা অনেকের। তা ছাড়া ভাষা যে আর কোনও বাধা নয়, সেই প্রাচীরটাও ভেঙে দিয়েছেন দর্শকরা। ফলে বিষয়বস্তু ভাল হলে, যে ভাষার ছবিই হোক না কেন, তা সাফল্যের মুখ দেখছে।
বলিউডের বাজার দখল করেছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলি। করোনাকালে রাতারাতি ওটিটি দুনিয়ার চাহিদা বেড়েছে। অতিমারি পর্ব কাটলেও ঘরে বসে নিজের পছন্দসই ছবি বা ওয়েব সিরিজ দেখতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন দর্শকদের একটা বড় অংশ। আবার ইদানীং ওটিটিতে বিষয়বস্তু এতটাই দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে, যা টেক্কা দিচ্ছে হিন্দি চলচ্চিত্র দুনিয়াকে। চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে, বক্স অফিসে ঘুরে দাঁড়াতে হলে বিষয়বস্তু, গল্পের উপর জোর দিতে হবে ছবি নির্মাতাদের। তা হলেই সুদিন ফিরতে পারে বলে তাঁদের আশা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy