গ্রাফিক-তিয়াসা দাস।
রবিবার ভরসন্ধ্যায় আচমকাই দিল্লির জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুখোশধারীদের তাণ্ডব এবং ওই ঘটনায় ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ একাধিক ছাত্রছাত্রীর আহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। নিন্দায় সরব হয়েছেন রাজনৈতিক মহল থেকে বিভিন্ন বলিউড তারকারাও। বাদ পড়েনি টলিউডও।
গতকালই নিজের টুইটার থেকে অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় লেখেন, “হীরক রাজার সেনারা একের পর এক পাঠশালা আক্রমণ করে যাবে, মগজ ধোলাই মেশিন চলছে, চলবে ... উদয়ন মাস্টার , কোথায় আপনি? আর লুকিয়ে থাকবেন না ! আপনাকে, গুপি, আর বাঘাকে খুব দরকার!” পরমব্রতর ওই টুইটের সমর্থন জানিয়ে নেটিজেনদের অধিকাংশ কমেন্ট সেকশনে লেখেন, “পারবে না হীরকের রাজা, পারবে না। এ ভাবে পাঠশালা বন্ধ করতে পারবে না।” কারও বক্তব্য, “উদয়ন মাস্টারকে নিজের মধ্যে অনুভব করার সময় এসে গেছে। তাঁকে আলাদা করে খোঁজার দরকার নেই।”
শুধু পরমব্রতই নন, অভিনেত্রী-সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও পড়ুয়াদের উপর হওয়া হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা করে টুইটারে লেখেন, “একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া এই হিংসার ঘটনায় মন থেকে ধিক্কার জানাই।”
অন্যদিকে আবার কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘আঠারো বছর বয়স’ কবিতার একটি লাইন উল্লেখ করে আবির লেখেন, “এ দেশের বুকে আঠেরো আসুক নেমে”। আনন্দবাজার ডিজিটালকে আবির বলেন, “একজন মানুষ হিসেবে, মানবতার দিক থেকে আর চুপ করে থাকা যায় না। ছাত্রদের গায়ে হাত দেওয়া কখনই মেনে নেওয়া যায় না।”
কিছুদিন আগে জামিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে পড়ুয়াদের উপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন এবং সৃজিত মুখোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব।
গতকালের ঘটনাতেও মুখোশধারীদের উদ্দেশে অপর্ণা লেখেন, “লজ্জা, ধিক্কার। জেএনইউ ছাত্রছাত্রীদের মেরেছে এবিভিপি গুন্ডারা। আর কত চুপ করে থাকা যায়? আপনি কি মেরুদণ্ডহীন? হ্যাঁ, আমি উদারপন্থায় বিশ্বাসী। এবং তাঁর জন্য আমি গর্বিত।”
অপর্ণার টুইট
Ok, so who are these masked goons? Allegedly ABVP? Allegedly backed by RSS? Even if we say we don't know, the question still remains: How can our universities be under attack? What is the Delhi police doing? What is happening in our country? Has it become a 'Goonda Raj?'
— Aparna Sen (@senaparna) January 5, 2020
জেএনইউয়ের প্রাক্তনী পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও জনপ্রিয় শায়েরির কিছু লাইন উল্লেখ করে লেখেন, “আগর কঁহি ভি স্বর্গ হো উতার লা জমিন পর। তু জিন্দা হ্যায়...শক্ত থাকো জেএনইউ। গর্বিত। #স্ট্যান্ড উইদ জেএনইউ”।
সৃজিতের পোস্ট
ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গায়ক অনুপম রায়ও। আনন্দবাজার ডিজিটালকে অনুপম বলেন, “মানুষ কোনও কাজ করতে পারবে না আর। সারাদিন এই সন্ত্রাস নিয়েই ভাববে। আমাদের আর শান্তি রইল না। একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ দেখে যাচ্ছি। থামছে তো না। উল্টে বাড়ছে। দরকার আরও জোরালো প্রতিবাদের।”
ঠিক কী হয়েছিল? জেএনইউ-র পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, রবিবার বিকেল থেকেই ক্যাম্পাসে আচমকা ভিড় জমতে শুরু করে। মুখোশধারী গুন্ডারা প্রথমে সবরমতী ধাবার বাইরে জড়ো হয়।অভিযোগ, এর পর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি নেতা-নেত্রীরা ভাড়াটে গুন্ডাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, এর পর, রড, লাঠি, বাঁশ নিয়ে পড়ুয়াদের উপরে চড়াও হয় তারা। হস্টেলের আলো নিভিয়ে দিয়ে হামলার পাশাপাশি সবরমতী, কাবেরী, পেরিয়ার হস্টেলে ভাঙচুরও চলে।সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ছাড়াও আহত হন বেশ কয়েকজন অধ্যাপকও।
এদিকে জেএনইউ-র ঘটনায় বাড়ছে রাজনৈতিক চাপও। গতকালই ওই ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের লজ্জা’আখ্যা দিয়ে টুইটারে সোচ্চার হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে এ দিন জেএনইউ-তে প্রতিনিধি দলও পাঠাচ্ছে তৃণমূল। জেএনইউ কাণ্ড নিয়ে ময়দানে নামতে চলেছে কংগ্রেসও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy