Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
ওয়েব প্ল্যাটফর্মে তাঁর প্রথম পরিচালনার অভিজ্ঞতা শোনালেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য
Anirban Bhattacharya

Anirban: ‘আমি মূলত অভিনেতা, এখনই পরিচালনার ক্যালেন্ডার বানিয়ে ফেলতে চাই না’

কম কাজ করা বা বেছে কাজ করার অপশনটাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নেই। সময়ের নানা দাবি আছে। সকলেই ইচ্ছেমতো কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন

অনির্বাণ

অনির্বাণ

সায়নী ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৩২
Share: Save:

প্র: ‘মন্দার’-এর ট্রেলার ইতিমধ্যেই উচ্চ প্রশংসিত। পরিচালক হিসেবে কেমন লাগছে?

উ: ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার পরে তা সব ধরনের দর্শকের কাছে যে ভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, তাতে আমি ও আমাদের পুরো টিম আপ্লুত। একটা চিন্তা ছিল যে, কাজটাকে কমার্শিয়াল, প্যারালাল এই ধরনের কোনও ভাগ করে বিচার করা হবে না তো! আমরা আসলে এখানে ‘ক্লাস’ আর ‘মাস’-কে আলাদা করে নিজেরাই একটা চক্রব্যূহ তৈরি করে ফেলি। ‘কোনটা বেশি ভাল’, তার লড়াই শুরু হয়ে যায়। দক্ষিণ ভারত বা বিদেশে কিন্তু এই দ্বন্দ্বটা সে ভাবে নেই। আমরা ‘মন্দার’ তৈরি করেছি সকলের দেখার জন্য। শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’ও বেছে নেওয়া অনেকটা সেই কারণেই, সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক।

প্র: অ্যাডাপ্টেশনের সময়ে কী ভাবনা ছিল?

উ: শেক্সপিয়রের নাটক মানেই তার একটা বিশালত্ব রয়েছে। এখনকার ছোট হয়ে আসা, টেকনোলজির যুগে সেটা কী করে ধরব, সেটাই প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রথমেই মাথায় এসেছিল, একমাত্র প্রকৃতিরই সেই বিশালত্ব আছে। সমুদ্র, জঙ্গল... ইত্যাদি। সমুদ্র থেকে মাছ, আঁশ, বঁড়শি, জেলে... এই ভাবে খোলনলচেটা তৈরি হল। গল্পটা প্রথম থেকেই সিরিজ় ফরম্যাটে ভাবা হয়েছিল।

প্র: মঞ্চে আপনি একাধিকবার নির্দেশনা দিয়েছেন। ক্যামেরার সামনে প্রথম পরিচালনা কি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিল?

উ: থিয়েটার পরিচালনার চেয়ে এটা অনেকটাই আলাদা। মঞ্চ বা সিনেমায় কাজ করতে করতে শিখেছি। এটা আমার প্রথম পরিচালনা। কাজটা করে খুবই আনন্দ পেয়েছি। তবে এতে দড় হয়ে উঠতে আরও অনেক সময় লাগবে। স্ক্রিপ্টে আমার সঙ্গে প্রতীক দত্ত, সৌমিক হালদারের সিনেম্যাটোগ্রাফি, সোমনাথ কুণ্ডুর মেকআপ, সংলাপ ভৌমিকের সম্পাদনা, আমার থিয়েটারের বন্ধু শুভদীপ গুহর সঙ্গীত... ‘মন্দার’ নির্মাণে এঁদের সকলের কৃতিত্ব আমার চেয়ে অনেক বেশি। সিরিজ়টা মুক্তি পাক, দর্শক দেখুন, তার পরে ভাবা যাবে ভবিষ্যতের কথা। আমি তো মূলত অভিনেতা, এখনই পরিচালনার ক্যালেন্ডার বানিয়ে ফেলতে চাই না।

প্র: আপনি এবং সোহিনী সরকার ছাড়া সিরিজ়ে সে অর্থে নামী মুখ নেই...

উ: এ ক্ষেত্রে প্রযোজক আমাকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। কাস্টিংয়ের ক্ষেত্রে সাধারণত পরিচালকের চেয়ে প্রযোজকের সিদ্ধান্ত প্রাধান্য পায়, যেহেতু এটা একটা বাণিজ্যিক মাধ্যম। আমার গল্পের চরিত্রগুলোয় যাঁদের মানাবে বলে আমার মনে হয়েছে, তাঁদের কথাই বলেছিলাম এসভিএফ-কে। ওঁরা কোনও আপত্তি করেননি।

প্র: সম্প্রতি ‘গোলন্দাজ’-এ আপনার স্বল্প দৈর্ঘ্যের অভিনয় প্রশংসিত। দেবের সঙ্গে দৃশ্যগুলিতে দু’জনের তুলনাও চলে এসেছে। কী ভাবে দেখছেন বিষয়টি?

উ: এই ধরনের তুলনায় আমার বিশ্বাস নেই। এই ভাবে কখনও দেখিনি অভিনয়কে। দর্শক আমাকে ভালবাসেন। সেই ভালবাসার প্রকাশ বিভিন্ন ভাবে হতে পারে। তবে ‘সিন খেয়ে নেওয়া’ বা ‘কাউকে চেপে দেওয়া’র মতো শব্দবন্ধে আমি বিশ্বাসী নই। বরং ঠিক এর উল্টো চর্চাটা আমি করে এসেছি, থিয়েটারের সময় থেকেই। পার্ট যতটুকুই হোক, নিজের পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে সেটা করার চেষ্টা করি। উল্টো দিকের অভিনেতাও তাই করেন। তিনি দেব বা অন্য যে কেউ হতে পারেন। তাতে আখেরে ছবিটারই ভাল হয়।

প্র: আপনি সম্প্রতি বিদেশে গিয়ে হিন্দি ছবির শুটিং করে এলেন। নেটফ্লিক্সেও আপনার একটি কাজ মুক্তি পেতে চলেছে...

উ: হিন্দি প্রজেক্টের ব্যাপারে যতক্ষণ না নির্মাতাদের অনুমতি পাচ্ছি, কিচ্ছু বলতে পারব না। আর নেটফ্লিক্সে যেটি মুক্তি পাওয়ার কথা, সেটি একটি অ্যান্থলজি। বৌদ্ধায়ন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত। এখন ছবিটা পোস্ট প্রোডাকশনে রয়েছে।

প্র: টালিগঞ্জের বহু অভিনেতা বাইরে গিয়ে কাজ করছেন। আপনিও করেছেন। এখানে কাজের সুযোগ সীমিত হয়ে আসাই কি এর মুখ্য কারণ?

উ: আমার এটা নিয়ে কিছু বলার নেই। এটা কেন হচ্ছে, সেটা সকলেই জানেন। শুধু শুধু এ নিয়ে বিতর্ক বাড়াতে চাই না। এখন সকলকেই অনেক কাজ করতে হয়। কম কাজ করা বা বেছে কাজ করার অপশনটাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নেই। সময়ের নানা দাবি আছে। যাঁর যেমন ইচ্ছে, তিনি সেভাবে নিজের কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সকলেরই সে স্বাধীনতা রয়েছে।

প্র: আপনার নাটকের দলের নতুন প্রযোজনা আসছে, আপনার নির্দেশনায়...

উ: হ্যাঁ, ‘হাতিবাগান সঙ্ঘারাম’-এর নতুন প্রযোজনা ‘বেরোবার পথ নেই’ আসছে, জাঁ পল সার্ত্রের ‘নো এক্সিট’ অবলম্বনে। তবে সেটা ইন্টিমেট স্পেসে হবে। তার পরে একটা মঞ্চ প্রযোজনা করব, ‘আলিবাবা’। সেটা হবে মিউজ়িক্যাল। ২০১৯ থেকেই ছবির পাশাপাশি সময় বার করে নিয়মিত থিয়েটার করার চেষ্টা করে চলেছি। কয়েক বছর আগেও ভাবতাম, সিনেমার চাপ কমলে থিয়েটারে মন দেব। পরে বুঝলাম, সেটা হওয়ার নয়। এখন সময় ভাগ করে সবটাই করি। চেষ্টা করি, যাতে কোনওটার জন্য কোনওটা বাধা না পায়।

প্র: এখন কীসের শুটিং করছেন?

উ: খুব শিগগিরই ‘হইচই’-এর ওয়েব সিরিজ় ‘টিকটিকি’র শুটিং শুরু হবে। ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনা। আমি আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অভিনয় করছি।

অন্য বিষয়গুলি:

Anirban Bhattacharya Tollywood Celebrity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy