রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপমানে প্রতিবাদী শ্রীজাত, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বলিউডে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপমানিত! কালীপুজোর রাতে সমাজমাধ্যমে এমনই ক্ষোভ জানালেন কবি-পরিচালক শ্রীজাত। তাঁর অভিযোগ, কপিলের একটি শো-তে অভিনেত্রী কাজল এসেছিলেন। তিনি বঙ্গসন্তান। তাঁকে সামনে পেয়ে শো-এর অন্যতম কৌতুকাভিনেতা ক্রুষ্ণা অভিষেক কবিগুরুর ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ গানটির অপব্যাখ্যা করেছেন। শ্রীজাত লিখেছেন, “সম্ভবত কাজলকে বাঙালি বংশোদ্ভূত হিসেবে পেয়েই রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মশকরার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেন তিনি। হঠাৎ তো বেছে নেননি, সে ভাবেই চিত্রনাট্য সাজানো ছিল। ঠিক কী হয়েছে, কেমন ভাবে হয়েছে, এখানে বিস্তারিত বলছি না। কিন্তু, ‘একলা চলো রে’ গানটি নিয়ে কৃষ্ণ (ক্রুষ্ণা) অভিষেক যে ব্যঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তার উদ্রেক করেছেন, তা সম্মান ও শালীনতার মাত্রা ছাড়িয়ে বহু দূর চলে গিয়েছে, অন্তত আমার চোখে।” শ্রীজাতের এই পোস্ট ভাগ করে নিয়েছেন পরিচালক-সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সবটাই অশিক্ষা।”
কপিল শর্মার কৌতুক অনুষ্ঠানে বলিউডের তারকারা বিভিন্ন সময়ে আসেন। কখনও তাঁদের ছবির প্রচারে। কখনও নিছক বিনোদনের খাতিরে। তাঁদের সঙ্গে নানা ধরনের মশকরা, রঙ্গব্যঙ্গে মাতেন কপিল স্বয়ং এবং তাঁর দলের অন্তর্ভুক্ত বাকি সদস্যেরাও। তেমনই একটি শো-তে কাজল এসেছিলেন। ব্যস, তাঁকে নিয়ে মেতে ওঠেন ক্রুষ্ণা! ঠিক কী ঘটেছে সেখানে? অভিযোগকারী কবির পোস্ট অনুযায়ী, “পর্বটি যথাস্থানে আছে, কেউ চাইলে দেখে নিতে পারেন। আর যাঁরা ইতিমধ্যেই দেখেছেন, তাঁরা ভালই জানেন। এই কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে আমি আমার লিখিত অভিযোগ ও আপত্তি জানালাম। যে বা যাঁরা ওই কৌতুকদৃশ্য রচনায়, উপস্থাপনায়, অনুমোদনে ও সম্প্রচারে জড়িত থাকলেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালাম। স্পষ্ট ভাষায়, দ্ব্যর্থহীন উচ্চারণে।”
এই জায়গায় ইন্দ্রদীপের কী বক্তব্য? তাঁর কথায়, “বলিউডের প্রত্যেকেই যে অশিক্ষিত, তা বলছি না। তবে সামগ্রিক ভাবে অশিক্ষিতে ভরে গিয়েছে। যে কারণে, কাকে নিয়ে কতটা কৌতুক করা যায়, সেই ধারণাটাই কারও মধ্যে নেই।” পরিচালক-সুরকারের আরও আক্ষেপ, জাতীয় সঙ্গীত কে লিখেছেন, সেটাই এখন কেউ ঠিক মতো জানেন না! সেখানে তো এমনটাই ঘটবে! তাই তিনি শ্রীজাতকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
এ দিকে শ্রীজাত কপিল শর্মা শো-এর সঙ্গে জড়িত চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। তাঁর লেখনীতে, “সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেই এই পোস্ট লিখছি, এটাও জানিয়ে গেলাম। আজ থেকে এক সপ্তাহ, অর্থাৎ ৭ নভেম্বর, ২০২৪-এর মধ্যে আমার দাবিগুলি গৃহীত, বিবেচিত এবং পূর্ণ না-হলে আমি আইনের পথে হাঁটব।”
ইন্দ্রদীপ কি এ ক্ষেত্রেও কবিকে সমর্থন জানাবেন? পরিচালক-সুরকার দ্বিধাহীন ভাবে জানিয়েছেন, কবি যা যা পদক্ষেপ করবেন, তার প্রত্যেকটির পক্ষে তিনি। প্রসঙ্গত, শ্রীজাতের এই পোস্টটি ভাগ করে নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদে শামিল কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী, আবীর চট্টোপাধ্যায়, সুমন ঘোষ, ইমন চক্রবর্তী-সহ মোট ২১ জন বাংলা বিনোদন দুনিয়ার খ্যাতনামী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy