ক্ষোভ উগরে দিয়ে রায়তি লেখেন, ‘‘আমরেলা’ নিয়ে হাসাহাসি করার কিছু নেই।’
বাবা হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক, তাই পরিবারের ইচ্ছেয় এক রকম বাধ্য হয়েই ডাক্তারি পাশ করেছিলেন রায়তি ভট্টাচার্য। ফল ভালই হয়েছিল। তবু সব কিছু ছেড়েছুড়ে মনের টানে অভিনয় জগতে থিতু হয়েছেন। ‘টিনের তলোয়ার’ নাটকের অন্যতম ঝকঝকে মুখ তিনি। অভিনয় করেন বড় পর্দা, ধারাবাহিকেও। কিন্তু সোমবার কয়েক জন অকৃতকার্য উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রীর প্রতি সমষ্টিগত হেনস্থা দেখে আর চুপ থাকতে পারলেন না।
আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘লোকে আমাকে ভুল বুঝছে হয়তো। আমি ধরনার পক্ষে কথা বলছি না। বলতে চাইছি সিস্টেমের ফাঁক নিয়ে। পাশ-ফেল তুলে দেওয়ায় ওরা অনায়াসে কিছু না শিখে এত দূর চলে এল। তার পর হঠাৎ ওদের ফেল করিয়ে দেওয়া হল! ওরা প্রতিবাদী হবে না তো কারা হবে?’’
রায়তি জানান, সমস্যা কেবল এখনকার নয়। নিজেও তিনি সরকারি স্কুলে পড়েছেন। তাঁর সময় ক্লাস ফাইভ থেকে স্কুলে ‘এ ফর অ্যাপল’ শেখানো হত, আর ইলেভেন থেকে সনেট! আলাদা করে বাবা ইংরেজির গৃহশিক্ষক রেখেছিলেন বলেই রায়তির অসুবিধে হয়নি। কিন্তু যাঁদের সেই ক্ষমতা নেই? কী করবেন তাঁরা? তাঁর মতে, ‘আমরেলা’-কাণ্ডের ছবি জেলায় জেলায় একই। হাসির খোরাক হওয়া ছাত্রীরা আসলে সরকারি স্কুলের পঠনপাঠনের মানই প্রতিফলিত করছেন। ওঁদের দোষ দেখতে পাচ্ছেন না অভিনেত্রী।
নিজের ফেসবুক প্রোফাইলেও এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে রায়তি লেখেন, ‘‘আমরেলা’ নিয়ে হাসাহাসি করার কিছু নেই। এটাই আমাদের দেশের প্রকৃত অবস্থা। কিছু দিন আগে যারা গর্বিত বাংলা মিডিয়াম ছিলেন, তাঁরাই মিম বানাচ্ছেন। মেয়েটি হয়তো আমব্রেলা বানান জানে না, কিন্তু ছাতা বানান জানে। বাঙালি হয়ে তো এই টুকুতেই সন্তুষ্ট থাকা যেত। ইংরাজি মাধ্যমের স্কুলগুলোতে যেমন বাংলায় ফেল করলেও অসুবিধে হয় না। বাংলা মাধ্যমেও করাই যেত তেমন। কিন্তু সেটা করা যাবে না। আমাদের এই সিস্টেমে ইংরাজিটা জানা যে কত জরুরি, সেটা আমরা প্রতি পদে টের পাই, সে যতই আপনারা তর্কের খাতিরে যুক্তি সাজান। আর বাংলা মাধ্যমের সাধারণ স্কুলে পঠন-পাঠনের মান সম্পর্কে আমার বেশ ধারণা আছে।’
উচ্চ মাধ্যমিকে ইংরেজিতে পাশ করানোর দাবিতে সোমবার বেশ কিছু ছাত্রী রাস্তায় ধরনায় বসেছিলেন। জনৈক সাংবাদিক তাঁদের প্রতিবাদের কারণ শুনতে শুনতে আচমকাই ইংরেজি ‘আমব্রেলা’ বানান জিজ্ঞেস করেন। ‘আমব্রেলা’র সঠিক বানান করতে না পেরে এক প্রতিবাদী ছাত্রী বলেছিলেন ‘আমরেলা’ (amrela)। ছাত্রীটি সঠিক বানান বলতে না পারার পরই হইচই। মিম, কটাক্ষের বন্যা। গালিগালাজের চোটে নেটমাধ্যমে কান পাতা দায়। সেই পরিস্থিতির দিকে আঙুল তুললেন রায়তি। গত দশ বছর ধরে বিভিন্ন প্রযোজনার হয়ে নাট্যমঞ্চে কাজ করেছেন রায়তি। আগামী দিনে অতনু ঘোষের ছবি ‘শেষ পাতা’-য় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে দেখা যাবে অভিনেত্রীকে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy