প্রায় দু’বছর বাদে বড় পরদায় দেখা যাবে পরিণীতি চোপড়াকে। ‘মেরি পেয়ারি বিন্দু’তে তাঁর বিপরীতে আয়ুষ্মান খুরানা। ছবিতে পরিণীতি একজন গায়িকা। এই প্রথম ছবির জন্য প্লেব্যাকও করলেন। যশ রাজ ফিল্মসের স্টুডিয়োতে অকপট পরিণীতি।
প্র: অবশেষে আপনার প্লেব্যাকের স্বপ্ন সফল হল?
উ: গান নিয়ে আমি বরাবরই প্যাশনেট। তাই জানতাম সময় লাগলেও যখন নিজের জন্য গান গাইব, সেটা খুব স্পেশ্যাল হবে। ‘মানা কে হাম’-এর সুর এত সুন্দর যে গানটার প্রেমে পড়ে গেলাম।
প্র: গানের ব্যাপারে আপনার অনুপ্রেরণা কে?
উ: আমার বাবা আর মিমি দিদির বাবা। আমার মা প্রবাসী ভারতীয়। প্রথম দিকে খুব একটা ভাল হিন্দি জানতেন না। মায়ের থেকে ওয়েস্টার্ন মিউজিক শোনার অভ্যেস হয়েছিল। বাবা আবার মুকেশের খুব ভক্ত ছিলেন। বাড়িতে হারমোনিয়াম বাজিয়ে মুকেশের গান গাইতেন। এ দিকে আমার দাদু ফরিদা খাতুন শুনতেন। আমি মারিয়া ক্যারি। বেশ মিশ্র একটা সংগীত মহলে বড় হয়েছি বলতে পারেন। যখন মিউজিক স্কুলে যাওয়া শুরু করি, শুধুই লতা মঙ্গেশকরে বুঁদ হয়ে থাকতাম।
প্র: রিয়্যালিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছে হয়নি কোনও দিন?
উ: একদমই না। টিভিই দেখতাম না। পড়াশোনায় ভাল ছিলাম। সেটা নিয়েই থাকতাম। গানের প্রতিযোগিতাগুলোয় গিয়ে শুধু ক্লাসিকাল গান গাইতাম। নয়তো পুরনো হিন্দি ছবির গান। বাড়িতেও কেউ চায়নি আমি রিয়্যালিটি শোতে যাই।
প্র: দু’বছর বাদে আপনি ফিরলেন। কেরিয়ারে এই জায়গায় এত দিনের বিরতি তো আপনাকে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে দেবে।
মাঝের ব্রেকটা নিজের জন্য জরুরি ছিল। একটা বাড়ি কিনেছি। সেটা নিজের মতো করে সাজাচ্ছিলাম। ফিটনেসের উপর জোর দিয়েছি। নিজের জন্য আলাদা করে সময় বের করাটা খুব প্রয়োজন ছিল। তাই তো এখন অনেকটা এনার্জি নিয়ে কাজ করতে পারছি।
প্র: একটা সময় আপনাকে বডি শেমিংয়ের শিকার হতে হয়েছে। স্রেফ লোকের কথা শুনেই চেহারা বদলে ফেললেন?
উ: না। নিজের জন্যই এই মেকওভার করেছি। আমি যদি অভিনেত্রী না হতাম তা হলে ওজন, চেহারা এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতাম না। অভিনয় ভিজ্যুয়াল মিডিয়াম। দেখতে কেমন লাগছে সেটা সব সময় গুরুত্ব পাবে এখানে। আপনি ওভারওয়েট হলে চরিত্রের সঙ্গে জাস্টিফাই করতে পারবেন না। সিনেমা জগতে আসার আগে ১২ বছর ধরে এই ওজন নিয়ে স্ট্রাগল করছি। তাই লোকজনের কথায় কিছু এসে যায় না। কিন্তু ওজন বেশি হলে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় স্ট্যামিনা পাওয়া যায় না। ওজন কমিয়ে ফেলাটা আমার একটা ব্যক্তিগত ইমোশনাল জার্নি। অনেকে সেটা বুঝতে পারেন না।
প্র: অভিনেতা হিসেবে নিজের মধ্যে কোনও পরিবর্তন...
উ: আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। কাজ নিয়ে বরাবরই খুব সিরিয়াস ছিলাম। পাঁচ বছর বাদে অনেক বেশি টেকনিক্যাল বিষয়টি সহজে বুঝতে পারি। ক্যামেরা, লাইটস নিয়ে অনেক বেশি জ্ঞান হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবন এবং পেশাগত জীবনকে আলাদা করে সময় দিই। যেটা আগে কিছুতেই করে উঠতে পারতাম না। কাজের ফাঁকে ছুটি নিই। দু’টোর মধ্যে ব্যালান্স রাখতে পারাটা যে ভীষণ জরুরি, সেটা বুঝতে পারি এখন।
প্র: আপনি যশ চোপড়ার সঙ্গে কাজ করেছেন। আদিত্য চোপড়া আপনার মেন্টর। এঁদের কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতাটা কেমন?
উ: এখানে কাজ করে, একটা জিনিস আমি শিখেছি। নিজের আত্মাকে বিকিয়ে দিয়ে কোনও কাজ করা উচিত নয়। আমি একজন অভিনেতা। কোনও চরিত্র যদি আমাকে মানায় তা হলেই সেই চরিত্রটা করব। সততা বজায় রেখে কাজ করব। মিথ্যের আশ্রয়ে নয়। যখন যশ রাজ স্টুডিয়োতে সাধারণ কর্মচারী ছিলাম, তখনও এই ব্যাপারটা মেনে চলতাম।
প্র: ছবির অনেকটা অংশের শ্যুটিং কলকাতায় হয়েছে। কেমন লাগল?
উ: এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে যখন এই শহরে ঢুকি তখন মনে হয় সম্পূর্ণ অন্য একটা দেশ। সময় যেন কুড়ি বছর পিছিয়ে গিয়েছে। একটা ভিনটেজ ফিলিং হয়। একটা জিনিস মনে হয়েছে, কলকাতায় লোকজন বেশ পড়াশোনা করেন। সব বিষয় নিয়ে চর্চা করেন। গান গাইতে বোধহয় সব বাঙালিই ভালবাসেন। ওখানকার মিষ্টির স্বাদ এখনও আমার মুখে লেগে আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy