Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

‘এই দীপাবলিতে জীবনের সবচেয়ে বড় জুয়া খেলছি’

‘ঠগস অব হিন্দোস্তান’-এর বক্স অফিসের বাজি জিততে চান আমির খান।‘ঠগস অব হিন্দোস্তান’-এর বক্স অফিসের বাজি জিততে চান আমির খান।

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী
মুম্বই শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। বদলে হাতে এখন পাইপ। চুল ছোট, নতুন চশমা, ওজন কমিয়ে নতুন রূপে আমির খান। ‘ঠগস অব হিন্দোস্তান’ নিয়ে আড্ডা দিতে গিয়ে জানালেন, খুব তাড়াতাড়ি নতুন ছবির ঘোষণা করবেন।

প্র: শেষমেশ অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন পূরণ হল...

উ: অসাধারণ অভিজ্ঞতা! যত ভাবে ওঁর কাছ থেকে শেখা যায়, তার চেষ্টা করেছি। অমিতজির সবচেয়ে বড় গুণ হল পারফেকশন। প্রত্যেকটা দৃশ্যের আগে উনি অনবরত নিজের লাইন মনে মনে বলতে থাকেন। ফাইনাল টেকের ঠিক আগে আমার সঙ্গে লাইন রিহার্স করতেন। স্টান্টগুলো আমাদের দু’জনের কাছেই চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু অমিতজি এই বয়সে যে ভাবে স্টান্ট করেছেন ভাবা যায় না! অ্যাকশন দৃশ্যের শুট করতে গিয়ে একবার ওঁর কাঁধ থেকে হাত পর্যন্ত অসার হয়ে গিয়েছিল।

প্র: আপনাকে পারফেকশনিস্ট বলা হয়। আর আপনি অমিতাভ বচ্চনকে সেটা বলছেন...

উ: আমি অমিতজিকে দেখে বিস্মিত! ওঁর সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার গল্পটা বলি। উটিতে ‘জো জিতা ওয়াহি সিকন্দর’-এর শুটিং করছিলাম। রাতের বেলা হোটেলের রিসেপশনে আমার জন্য ফোন আসে অমিতাভ বচ্চনের। প্রথমে ভেবেছিলাম কেউ মজা করছে। সেই প্রথম শুনেছিলাম, ‘হ্যালো, মে অমিতাভ বচ্চন বোল রাহা হু’। সেই সময়ে উনি ‘জুম্মা চুম্মা’ নামে একটা শো করছিলেন লন্ডনে। চাইছিলেন আমি ওঁর সঙ্গে পারফর্ম করি। আমি তো ফোনে ওঁর সব কথায় ‘ইয়েস স্যর, ইয়েস স্যর’ করছিলাম। তার বাইরে মুখ দিয়ে কথাই বার হচ্ছিল না। আর এক জনকে দেখেও আমার কথা আটকে যেত, তিনি শ্রীদেবী। আমার বিরাট ক্রাশ ছিল ওঁর উপর। আফশোস শ্রীদেবীর সঙ্গে কোনও ছবি করা হল না।

প্র: আপনি ‘ঠগস...’-এর শুটিং শুরুর আগে শাহরুখ খানের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন?

উ: হ্যাঁ, আমি আর শাহরুখ পাশাপাশি সেটে শুট করছিলাম। ও আগে অনেক বার অমিতজির সঙ্গে কাজ করেছে। ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, অমিতজির সামনে সিগারেট খেত কি না? উত্তরে শাহরুখ বলেছিল, ‘হ্যাঁ, অমিতজি খুব কুল, তুইও ওঁর সামনে স্মোক করতে পারিস’। মজার ব্যাপার হল, এই কথাটা অমিতজি জানতে পেরে যান। মলটাতে শুটিংয়ের সময় এক রাতে প্যাকআপ হওয়ার পরে গুরুগম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলেন, আমি শাহরুখকে সিগারেট খাওয়া নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি কি না? খুব লজ্জা পেয়ে গিয়েছিলাম।

প্র: ছেলে আজাদ এখন আপনার স্টারডম বুঝতে পারে?

উ: হ্যাঁ, এখন জানে যে, ওর বাবা একজন অভিনেতা। আগে যখন ফোটোগ্রাফার আর ফ্যানরা আমার গাড়ি ঘিরে ফেলত, তখন জানতে চাইত, কেন এটা হচ্ছে? এখন আর সেই প্রশ্নটা করে না। তবে আজাদ এখনও পর্যন্ত আমার কোনও ছবি পুরোটা দেখেনি। ও অ্যাকশন ছবি দেখতে ভালবাসে না। ‘ঠগস অব হিন্দোস্তান’ কিছুটা দেখেছে। আর অ্যাকশন সিন এলেই কিরণ ওর চোখ ঢেকে দিচ্ছিল। আজাদ কার্টুন দেখতেই বেশি পছন্দ করে।

প্র: ক্যাটরিনার সঙ্গে ‘ধুম’-এর পরে আবার এই ছবিতে কাজ করলেন।

উ: আরে ক্যাটরিনা তো এলিয়েন! ‘সুরাইয়া’ গানে ক্যাটরিনা যে ভাবে নেচেছে আমার পক্ষে কোনও দিন সেটা সম্ভব ছিল না। ভাগ্যিস, গানটায় আমার কোনও বিশেষ স্টেপ নেই। প্রভুদেবা যে ভাবে স্টেপগুলো কোরিওগ্রাফ করেছে, আমি ভেবেছিলাম ক্যাটরিনা সেটা করতে পারবে না। বাট শি ইজ় এক্সট্রিমলি হার্ডওয়র্কিং।

প্র: সানিয়া মলহোত্র এবং ফতিমা সানা শেখ দু’জনেই ‘দঙ্গল’-এর পরে ভাল কাজ করছেন...

উ: ফ্যাটির (ফতিমাকে এই নামেই ডাকেন) এটা দ্বিতীয় ছবি। খুব পরিশ্রম করেছে। স্টান্টের জন্য ট্রেনিং নিতে হয়েছে। আশা করছি, ওর কাজ দর্শকের ভাল লাগবে। সানিয়ার ‘বধাই হো’ তো সুপারহিট। ছবিটা দেখার ইচ্ছা আছে। জাইরা ওয়াসিমও খুব ভাল কাজ করছে। সবার জন্য আমি গর্বিত।

প্র: ছোটবেলার দীপাবলি মিস করেন?

উ: শব্দ বাজিতে বরাবরই আমার খুব ভয়। ছোটবেলায় চড়কি, সাপবাজি, ফুলঝুড়ি জ্বালাতাম। ১৬ বছর বয়স থেকে বিল্ডিংয়ের বড়দের সঙ্গে গ্যাম্বলিং করা শুরু করি। সারা বছরে ওই এক দিনই জুয়া খেলতাম। তার জন্য বাড়িতে খুব বকা খেতাম যদিও। আগে তিন পাত্তি খেলতাম এখন পোকার খেলি (হেসে)। ৭ নভেম্বর কিরণের জন্মদিন। পরিবারের সঙ্গে থাকব, পার্টি করব। এই দীপাবলিতে জীবনের সবচেয়ে বড় জুয়াটা খেলছি। আমি আর অমিতজির একসঙ্গে প্রথম কাজ। দর্শকেরও অনেক এক্সপেকটেশন। দু’বছর দিয়েছি চরিত্রটাকে। আমি নার্ভাস এবং এক্সসাইটেড!

অন্য বিষয়গুলি:

Interview Exclusive Aamir Khan Thugs Of Hindostan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE