Deepak Tijori established himself as an successful actor after a long struggle dgtl
bollywood
যোগ প্রশিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক, বাড়ি থেকে বের করে দেন স্ত্রী, পেয়িং গেস্ট হয়ে দিন কাটান দীপক তিজোরী
দীপক একটি হোটেলে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন কিছু দিন। কর্মরত ছিলেন একটি চলচ্চিত্র পত্রিকাতেও। টানা তিন বছর ধরে ঘুরেছেন প্রযোজকদের দরজায় দরজায়। একটা সুযোগের আশায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২০ ০৯:৪৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বলিউডে এসেছিলেন নায়ক হতে। কিন্তু হয়ে গেলেন সহ-নায়ক। নব্বইয়ের দশকে পার্শ্বচরিত্রাভিনেতাদের কথা বললে তাঁর নাম আসবে প্রথম সারিতে। তিনি দীপক তিজোরী।
০২২০
অজয় দেবগণ, অক্ষয় কুমার, সুনীল শেট্টি যখন ইন্ডাস্ট্রিতে পায়ের নীচে জমি পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন, দীপক তত দিনে প্রতিষ্ঠিত তারকা। তাঁর পরে ইন্ডাস্ট্রিতে এসে অনেকেই নায়ক হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দীপক রয়ে গিয়েছেন সহ নায়ক হয়েই।
০৩২০
‘যো জিতা ওহি সিকন্দর’ ছবির জন্য অডিশন দিয়েছিলেন অক্ষয়কুমারও। কিন্তু তিনি খারিজ হয়ে যান। পরিবর্তে প্রযোজক-পরিচালকের পছন্দ হয় দীপক তিজোরীকে।
০৪২০
‘সড়ক’, ‘আশিকি’, ‘খিলাড়ি’ ছবিতে দীপকের অভিনয় দাগ কেটে যায় সবার মনে। তবে বলিউডে পরিচিতি পাওয়ার আগে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হয়েছে দীপককে। তার মাঝেই বাঁচিয়ে রেখেছিলেন অভিনেতা হওয়ার স্বপ্নকে।
০৫২০
দীপক পড়তেন মুম্বইয়ের নারসি মঞ্জি কলেজে। কলেজে পড়তে পড়তেই দীপক যোগ দেন একটি নাটকের দলে। তখন সে দলের সদস্য ছিলেন আমির খান, আশুতোষ গোয়ারিকর, পরেশ রাওয়ালরা।
০৬২০
কলেজের দিন পেরিয়ে যাওয়ার পরে দীপক একটি হোটেলে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন কিছু দিন। কর্মরত ছিলেন একটি চলচ্চিত্র পত্রিকাতেও। টানা তিন বছর ধরে ঘুরেছেন প্রযোজকদের দরজায় দরজায়। একটা সুযোগের আশায়।
০৭২০
প্রথম অভিনয় টেলিভিশনে। কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজ করার পরে ঠিক করলেন বন্ধুদের মতো তিনিও ছবিতে অভিনয় করবেন। বড় পর্দায় প্রথম অভিনয় ১৯৮৮ সালে, ‘তেরা নাম মেরা নাম’ ছবিতে। এর পর ‘ম্যায়ঁ তেরা দুশমন’, ‘পর্বত কে উস পার’, ‘ক্রোধ’-সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু সে সবই নামমাত্র ভূমিকায়।
০৮২০
১৯৯০ সালে ‘আশিকি’ ছবিতে প্রথম নজরে পড়েন দীপক। সেই প্রথম ছবির ক্রেডিট টাইটেলে তাঁর নাম দেখা যায়। দীর্ঘ কেরিয়ারে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবি হল ‘আফসানা প্যায়ার কা’, ‘বেটা’, ‘পহেলা নেশা’, ‘আইনা’, ‘দ্য জেন্টলম্যান’, ‘প্রেম’, ‘রাজা’, ‘বাদশা’ এবং ‘গুলাম’।
০৯২০
বহিরাগত হয়েও বলিউডে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন দীপক তিজোরি। তবে তাঁর পরিচিতি বরাবর রয়ে গিয়েছে ‘সেকেন্ড লিড’ হয়েই। কিন্তু নিজের সেরা সময়ে এমনও দিন গিয়েছে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তায় তিনি টেক্কা দিয়েছেন নায়কদের।
১০২০
বন্ধু আশুতোষ গোয়ারিকর নিজের প্রথম ছবি ‘পহেলা নেশা’-য় নায়কের ভূমিকায় নিয়েছিলেন দীপককে। তাঁর বিপরীতে নায়িকা ছিলেন পূজা ভট্ট এবং রবিনা টন্ডন। এ ছাড়া ছবিতে বেশ কয়েক জন তারকাকে দেখা গিয়েছিল স্পেশাল অ্যাপিয়ারেন্সে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন শাহরুখ এবং আমির খানও।
১১২০
এখনও অবধি শুধু এই ছবিতেই একসঙ্গে অভিনয় করেছেন শাহরুখ-আমির। কিন্তু বক্স অফিসে সুপারফ্লপ ছিল ‘পহেলা নেশা’। এই ছবির সঙ্গে সঙ্গে দীপক তিজোরির নায়ক হওয়ার স্বপ্ন বরাবরের জন্য শেষ হয়ে যায়।
১২২০
অন্য দিকে, পার্শ্বচরিত্রাভিনেতার ক্ষেত্রেও বলিউডে প্রতিযোগিতা বাড়ছিল। অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগণ বা সুনীল শেট্টির মতো অভিনেতারা স্বচ্ছন্দে মাল্টিস্টারার ছবিতে অভিনয়ে রাজি হয়ে যেতেন। ফলে এত দিন দীপকের কাছে যে সুযোগ আসত, সেগুলি চলে যেতে লাগল এই তিন জনের কাছে।
১৩২০
এই পরিস্থিতিতে হাতের কাছে যে সুযোগ পেতেন সেটাই নিতে বাধ্য হতেন দীপক। ‘সন্তান’ ছবিতে তিনি অভিনয় করেন খলনায়কের ভূমিকায়। কিন্তু সেই ছবিও ব্যর্থ হয় বক্স অফিসে। ফলে নায়ক এবং খলনায়ক, দুই ধরনের চরিত্রই দূরে সরে গেল দীপকের কাছ থেকে।
১৪২০
একটানা পার্শ্বনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন দীপক। ঠিক করলেন, এ বার তিনি পরিচালনা করবেন। ২০০৩-এ মুক্তি পেল তাঁর পরিচালনায় ‘উপস’।
১৫২০
ছবির বিষয় ছিল অ্যাডাল্ট কমেডি। সেন্সর বোর্ডে বহু জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল ছবিটিকে। এই ছবির চিত্রনাট্যকার, পরিচালক এবং প্রযোজক, সবই ছিলেন দীপক। কিন্তু ছবিটি ফ্লপ করায় আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েন তিনি।
১৬২০
আর্থিক সঙ্গতি ফেরাতে দীপক ‘বিগ বস’-এর মতো টেলিভিশন শো-তেও অংশ নেন। এর পর আরও কিছু ছবি তিনি পরিচালনা করেন। কিন্তু তাঁর পরিচালিত কোনও ছবি-ই সফল হয়নি।
১৭২০
কেরিয়ারের পাশাপাশি এ সময়ে ঝড় উঠেছিল তাঁর ব্যক্তিগত জীবনেও। নিজের যোগ প্রশিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দীপক। সে কথা জানতে পেরে ডিভোর্সের আবেদন করেন দীপকের স্ত্রী শিবানী। পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার শিবানী, পরিচালক কবীর সদানন্দ এবং গায়িকা কুনিকা পালের বোন হন।
১৮২০
গোরেগাঁওতে দীপক যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেটি ছিল তাঁর স্ত্রীর নামে। দু’জনের মধ্যে তিক্ততা বাড়তে থাকায় দীপককে ফ্ল্যাট থেকে চলে যেতে বলেন শিবানী। কিছু দিন আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবদের আশ্রয়ে থাকার পরে দীপক বাধ্য হন মুম্বইয়েই পেয়িং গেস্ট হয়ে দিন কাটাতে। এক সাক্ষাৎকারেই তিনি জানিয়েছেন, পেয়িং গেস্ট হয়ে অন্য লোকের সঙ্গে একই ঘরে থেকেছেন তিনি।
১৯২০
তবে অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, যে আবাসনে তাঁরা থাকতেন, সেই আবাসন কর্তৃপক্ষ নানা কারণে তাঁদের আচরণে ক্ষুব্ধ ছিলেন। অভিযোগ, তিজোরী পরিবার ঠিক সময়ে মেনটেন্যান্স ফি দিতেন না। শেষ অবধি আইনি লড়াইয়ে ফ্ল্যাটে থাকার অধিকার ফিরে পান দীপক ও তাঁর পরিবার।
২০২০
এই কঠিন সময়েও হার মানতে নারাজ দীপক। আগেও বহু লড়াই করেছেন। আবার তিনি বিনোদেনর মূলস্রোতে ফিরে আসতে চান পরিচালক হয়ে। সম্প্রতি তাঁকে দেখা গিয়েছে ওয়েব সিরিজেও।