প্রতীকী ছবি
লকডাউনের মেয়াদ উত্তরোত্তর বাড়ছে। সঙ্গে চলছে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই। এর মধ্যে অবশ্য থেমে নেই শিল্প সৃষ্টির কাজও। কোথাও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা হচ্ছে, কোথাও আবার আসন্ন রবীন্দ্রজয়ন্তীর কথা মাথায় রেখে শুরু হয়ে গিয়েছে ‘ভার্চুয়াল রবীন্দ্রজয়ন্তী’ পালনের প্রস্তুতি। এর মধ্যেই আবার ঘরবন্দি ২৬ জন শিল্পীকে নিয়ে তৈরি কলকাতার সিনেমা পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
অভিনেতা তথাগত মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি তৈরি করেছেন সাড়ে ১১ মিনিটের ওই সিনেমা। অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের বাড়িতে বসে তুলে পাঠানো ভিডিয়োর পাশাপাশি কাজে লাগানো হয়েছে নানা সময়ে তথাগতের তোলা বাড়ির বাইরের কিছু দৃশ্য এবং খবরের ভিডিয়ো ক্লিপ। সিনেমা শুরু হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা দিয়ে। শেষে মারিয়া রিলকের কবিতা।
তথাগত বললেন, “ঘরবন্দি এই সময়ে অতীতের কথা মনে আসতে বাধ্য। আমার চোখে এখন ভাসে, পৃথিবীর উপরে মানুষের অত্যাচার। দেদার গাছ কাটার মধ্য দিয়ে নিজেকে পৃথিবীর অধীশ্বর ভাবা। এই ছবির মাধ্যমে বলতে চেয়েছি, মানুষই ঠিক করুক সে কোন পথে হাঁটবে!” অভিনেতা সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বললেন, “একটি প্রদর্শনীতে থিম রাখা হয়েছিল শূন্যতা। সেখানে রেনা মারিয়া রিলকের কবিতাটা বলেছিলাম। এ-ও এক অপার শূন্যতার সময় বলে আমার মনে হয়।”
আরও পড়ুন: শুটিং শুরু হলেও থাকবে নিয়মের কড়াকড়ি
ছবিটিকে তাদের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উদ্যাপনের জন্য বেছে নিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থার সিনিয়র ম্যানেজার (আউটরিচ ইন্ডিয়া) দেবপ্রিয়া দত্ত বললেন, “পরিবেশ বাঁচাতে শিল্পীদের ভূমিকা মাথায় রেখে বিশ্ব জুড়ে সচেতনতামূলক প্রচারে উদ্যোগী হয়েছি আমরা। সেখানেই এই সিনেমা মনোনীত হয়েছে। ঘরবন্দি জীবনে এই শিল্পকীর্তি শিক্ষণীয়।”
ঘরবন্দি জীবনে এমন শিল্পচর্চায় উদ্যোগী হয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও। এমনই একটি সংস্থা আগামী শুক্রবার রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন ঘিরে পালন করছে ‘ভার্চুয়াল রবীন্দ্রজয়ন্তী’। আজ, সোমবার থেকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমেও তা দেখা যাবে। সংস্থার তরফে প্রশান্ত রায় বললেন, “মানুষের শিল্পচর্চা আর শিল্প সৃষ্টির ভাবনা থেমে থাকে না। দেশে-বিদেশে এই মুহূর্তে যিনি যেমন ভাবে আছেন, আমাদের কাছে নাচ, গান, কবিতা পাঠের ভিডিয়ো করে পাঠিয়েছেন।”
এমনই এক জন উত্তরপাড়ার পূজা চট্টোপাধ্যায়। ভরতনাট্যমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পূজা পরীক্ষা দিতে গিয়ে আটকে পড়েছেন চেন্নাইয়ে। সেখান থেকে বললেন, “হঠাৎ লকডাউন হয়ে যাওয়ায় বাড়ি ফিরতে পারিনি। এখানে একটি ছাত্রী-আবাসে আছি। মোবাইল ক্যামেরায় নাচের ভিডিয়ো করে পাঠিয়ে দিয়েছি। বাড়িতে বাবা-মা আছেন, দেখলে খুশি হবেন।”
স্কুলের পরে আর কোনও রবীন্দ্রজয়ন্তীতে অংশ নিতে না-পারা বেসরকারি সংস্থার আধিকারিক অনিরুদ্ধ সেন আবার খুশি দু’টি রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে ভিডিয়ো করে পাঠিয়ে। ল্যান্সডাউনের বাসিন্দা অনিরুদ্ধবাবু বলেন, “৭৭ বছরের মাকে দেখতে কলকাতায় এসেছিলাম। আর যেতে পারিনি। মুম্বইয়ের বাড়িতে স্ত্রী আর মেয়ে রয়েছে। ঘরবন্দি এই সময়টা স্কুলজীবনের রবীন্দ্রজয়ন্তী ফিরিয়ে দিল, সেটাই বা কম কী!”
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আঁকা প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া নবম শ্রেণির ঋদ্ধি ঘোষ বলল, “সচিন ওভার বাউন্ডারি মেরে করোনাভাইরাসকে মাঠের বাইরে পাঠাচ্ছে এঁকেছিলাম। আঁকা প্রতিযোগিতা ছিল ২৪ এপ্রিল। সে দিনই তো সচিনের জন্মদিন।”
আরও পড়ুন:লেজেন্ডরা কি এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যান?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy