Advertisement
E-Paper

শহর নিরাপদ, বিচ্ছিন্ন ঘটনায় প্রশাসনকে দাগাবেন না! নাচের মঞ্চ থেকে কনস্টেবল সায়ন্তী

পুলিশ আর নাচ— দুই বিপরীত মেরুর পেশাকে বাস্তবে মিলমিশ ঘটিয়েছেন কনস্টেবল সায়ন্তী গোস্বামী। রিয়্যালিটি শো-এর মঞ্চ থেকে বার্তা দিয়েছেন, সংসার-সন্তান-পেশা-নাচ— সব সামলাবেন।

‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর মঞ্চে কনস্টেবল সায়ন্তী গোস্বামী।

‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর মঞ্চে কনস্টেবল সায়ন্তী গোস্বামী। ছবি: সংগৃহীত।

উপালি মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৯
Share
Save

বিচারকের আসনে মিঠুন চক্রবর্তী, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, যিশু সেনগুপ্ত, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, সঞ্চালনায় অঙ্কুশ হাজরা। তাঁদের সামনে ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর মঞ্চে কনস্টেবল সায়ন্তী গোস্বামী। শুধুই নাচলেন না, পরীক্ষা দিয়ে জিতলেনও! উর্দি গায়ে যতটা সাহসী, ‘মহাগুরু’র সামনেও কি ততটাই আত্মবিশ্বাসী? পুলিশের প্রেম থেকে দুর্বৃত্তদের ঠ্যাঙানি— কিচ্ছু বাদ দিলেন না।

প্রশ্ন: মানুষ ভাবেন, পুলিশ মানেই গুরুগম্ভীর ব্যাপার। সেই পুলিশ নাচের রিয়্যালিটি শোয়ে যোগ দিয়েছেন। চারপাশের প্রতিক্রিয়া কী?

সায়ন্তী: (হাসি) শুভেচ্ছায় ভাসছি। আমার স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ফোন করে প্রশংসা করছেন। যাঁদের কাছে নাচ শিখেছি তাঁরাও বাদ যাননি। আমার বিভাগ ছোটখাটো সংবর্ধনাও দিল। প্রত্যেককে বলেছি, সবে শুরু। এখনও অনেকটা দূর যেতে হবে। কিন্তু শুনছে কে? সকলে বলছেন, “তুমি যতটা যেতে পেরেছ সেটাই গর্বের। অনেকে তো এটুকুও পৌঁছতে পারে না! আমরা খুবই খুশি।”

প্রশ্ন: আপনার কেমন লাগছে? প্রশাসনিক কাজের অনেক চাপ। দুর্বৃত্তদের শাস্তি দিতে হয়। অনেক ঝুঁকি নিতে হয়...

সায়ন্তী: ভাষায় বোঝাতে পারব না। তবে নাচ আমার স্বপ্নই ছিল। ছোট থেকে তাই পড়াশোনার সঙ্গে নাচও শিখেছি। যেমন হয় মধ্যবিত্ত পরিবারে। আমি মফস্সলের মেয়ে। চাকদহে বাড়ি। বড় হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে, দায়িত্ব নিতে হবে, সরকারি চাকরি করতে হবে— ছোট থেকেই জানতাম। দিদি আমার জন্য প্রচুর আত্মত্যাগ করেছে। ফলে, ছোট থেকেই জেদ ছিল, সরকারি চাকরি পেতেই হবে। তার পরেও বাড়ি থেকে কখনও নাচে বাধা দেওয়া হয়নি। বরং কখনও নাচের স্কুলে যেতে না চাইলে বাড়ি থেকে জোর করে পাঠানো হয়েছে।

প্রশ্ন: আপনি তো নাচে বেশ পারদর্শী তা হলে?

সায়ন্তী: (হাসি) তিন বছর বয়স থেকে কত্থক শিখেছি চাকদহের অতসী রায় ভট্টাচার্য, শঙ্কর রক্ষিত, অঙ্গনা জোয়ারদার পালের কাছে। মাঝে অনেক ওঠাপড়া গিয়েছে। কখনও নাচ ছাড়়িনি। সব থেকে বড় বিষয়, আমার পড়াশোনার সমস্ত শিক্ষক নাচকে সমর্থন করেছেন। ফলে, পাশাপাশি দুটো শিখতে কোনও সমস্যা হয়নি।

প্রশ্ন: এই মুহূর্তে উর্দি ছেড়ে নৃত্যশিল্পীর জমকালো সাজে কনস্টেবল সায়ন্তী। আয়নায় নিজেকে দেখে নিজেই চমকেছেন?

সায়ন্তী: নিজেকে দেখে নিজেই মুগ্ধ! আমার পেশাজীবনের বয়স মাত্র এক বছর। চাকরি পাওয়ার পর শিক্ষকেরা বলেছিলেন, “অনেক পরিশ্রম করে সরকারি চাকরি পেয়েছিস। অবশ্যই সেটাকে সম্মান করবি। কিন্তু নিজের স্বপ্ন থেকে কখনও সরে যাস না।” ওঁদের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার চেষ্টা করি। দিনে-রাতে ডিউটি, পুলিশি অভিযান, বিপজ্জনক ঝুঁকি নেওয়া— সব সামলে নাচের অভ্যাস বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। বলতে পারেন, ওঁদের ভালবাসাকেই মঞ্চে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। এটাই আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার।

প্রশ্ন: আপনাকে দেখে বিচারকেরাও বিস্মিত, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেছেন, “তোমার পড়াশোনা শেষ হয়েছে?”

সায়ন্তী: (আবার হাসি) ওঁরা কেউ জানতেন না আমার পরিচয়। জানার পরে ওঁরাও অবাক। খুবই স্বাভাবিক, কারণ আমাদের পেশাটাই এত কাঠখোট্টা! তার পরেই প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ওঁদের উষ্ণ অভিনন্দন, ব্যবহার আমাকে এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করছে। আমি আপ্লুত।

প্রশ্ন: মিঠুন থেকে অঙ্কুশ— এত দিন এঁদের পর্দায় দেখেছেন। এ বার তাঁদের সামনে আপনি নৃত্য পরিবেশন করছেন। শিহরিত?

সায়ন্তী: অডিশনের দিন সেজেগুজে ব্যাকস্টেজ থেকে বিচারকদের সামনে। আমি ঘাবড়ে একাকার। আমার কোরিওগ্রাফারের কাছে ভয়ে ভয়ে জানতে চেয়েছিলাম, এঁদের সামনে আমাকে নাচতে হবে! উনি আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, “তুই তো জানিস মা! ঠিক পারবি।” তখনও মনে হচ্ছিল, সবটাই বুঝি স্বপ্ন। মিঠুন চক্রবর্তীর সামনে নাচতে হবে, বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমার মা বসেছিলেন দর্শকাসনে। তাকিয়ে দেখি, আনন্দে ওঁর চোখে জল। নিজেকে একটা কথা বলে সে দিন শক্ত করেছিলাম, সকলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে। যে ভাবেই হোক, সেরাটা দিতে হবে।

প্রশ্ন: মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয়েছে?

সায়ন্তী: হ্যাঁ, হয়েছে। স্যর ভীষণ ইতিবাচক মানসিকতার। ওঁর কাছে গেলেই মনের জোর বেড়ে যায়। মনে হয়, আমাকে পারতেই হবে। ‘মহাগুরু’ও আমার প্রশংসা করেছেন।

প্রশ্ন: প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার জন্য কি ছুটি পেয়েছেন?

সায়ন্তী: না। রিয়্যালিটি শো-তে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ডিউটিও করছি। তবে বিভাগীয় প্রধান থেকে সহকর্মী— সকলেই ভীষণ সহযোগিতা করছেন। তাই দুই দিক সামলাতে পারছি।

প্রশ্ন: এর পর একজন নৃত্যশিল্পীকে পুলিশ হিসাবে মান্যতা দেবে জনতা?

সায়ন্তী: (অল্প হেসে) এখানেই চ্যালেঞ্জ। দুটো পেশাকে যে ভাবেই হোক আলাদা রাখতে হবে।

প্রশ্ন: আপনিও কি আর আগের মতো কড়া হতে পারবেন?

সায়ন্তী: হতেই হবে। উর্দির একটা মাহাত্ম্য আছে। পুলিশের পোশাক গায়ে উঠলেই ভিতরটা বদলে যায়। আমিও ব্যক্তিগত ভাবে খুবই নরম মনের মানুষ। প্রথম দিন উর্দি পরার পরেই দেখলাম, ভিতরের সেই নরম ভাবটা যেন নেই। অনেকটা বদলে গিয়েছি। গত এক বছর ধরে প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি। সবটাই ওই উর্দির কল্যাণে। তার পর যখন এই নাচের পোশাক পরি তখন আবার নিজেকে বদলে নিতে হয়। বলতে পারেন, আমি অভ্যস্ত (হাসি)।

প্রশ্ন: আপনি নৃত্যশিল্পী হয়েই থাকতে পারতেন, প্রশাসনে এলেন কেন?

সায়ন্তী: উর্দির লোভে। উর্দি আছে এমন সরকারি পেশা বাছব, জেদ ছিল ছোট থেকে। সেই জন্য পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছি। খুব পরিশ্রম করে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। পরীক্ষা দিয়ে সসম্মানে উত্তীর্ণ হয়েছি। শিক্ষাগুরুরা প্রত্যেকে খুশি। তা সত্ত্বেও তাঁরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, স্বপ্ন দেখা যেন বন্ধ না করি।

প্রশ্ন: অর্থাৎ, যে হাতে নাচের মুদ্রা ফুটে ওঠে, সেই হাত প্রয়োজনে রুলের গুঁতোও দেয়!

সায়ন্তী: (লাজুক হেসে) কপাল ভাল, এখনও কাউকে মারতে হয়নি। তবে ধমক তো দিতেই হয়। আর সেটা পারিও আমি। তবে পুলিশরাও এখন অনেক মানবিক। চট করে গায়ে হাত তোলেন না। আমারও এক এক সময় মনে হয়, আরও একটু হয়তো নরম ব্যবহার করতেই পারতাম। কিন্তু পেশার খাতিরে সেটা হয়ে ওঠে না।

প্রশ্ন: একে নৃত্যশিল্পী পুলিশ, তার উপর সুন্দরী। নিশ্চয়ই গুচ্ছ গুচ্ছ প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছেন?

সায়ন্তী: (জোরে হাসি) উর্দি দেখে কেউ কি আর ওই পথে এগোবে! তা ছাড়া, উর্দি না পরলেও আমাদের মধ্যে একটা রাশভারী ব্যাপার এসেই যায়। ফলে, চট করে লোকে ঘাঁটায় না।

প্রশ্ন: সে কি! বাংলা ছবিতে যে একটা বিখ্যাত গান রয়েছে, ‘পুলিশ চোরের প্রেমে পড়েছে’...

সায়ন্তী: (জোরে হাসি) হ্যাঁ, শুনেছি। আপাতত প্রেমের ফাঁদে পা দিচ্ছি না। আগে স্বপ্নপূরণ। সঙ্গে পরিবারের পাশে থাকা। এই দুটোই আমার লক্ষ্য। বিশ্বাস করুন, এ সব ফেলে অন্য দিকে মন দেওয়ার মতো সময় আমার হাতে নেই।

প্রশ্ন: আপনাকে না হয় উর্দি সুরক্ষা দিয়েছে। বাকি মেয়েদের গায়ে উর্দি নেই। তাঁরা যখন তখন পুরুষের লালসার শিকার...

সায়ন্তী: অস্বীকার করছি না। আমি নিজের চোখে পরিচিত-অপরিচিত অনেক মেয়েকে ইভটিজিং-এর শিকার হতে দেখেছি। তার পরেও বলব, মেয়েদের নিরাপত্তার দিক থেকে কলকাতা এখনও অনেক এগিয়ে। এমনকি, মফস্‌সলকেও এ ব্যাপারে এগিয়ে রাখব। এ-ও বলব, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার জন্য গোটা শহরকে, রাজ্য প্রশাসনকে দাগিয়ে দেওয়া বা দায়ী করা উচিৎ নয়। তা ছাড়া, আমরা তো নারীর পাশে আছিই।

প্রশ্ন: পুলিশ হিসাবে নিজের বাড়ির কী কী কেস সামলেছেন?

সায়ন্তী: আমার বাড়িতে এখনও তেমন কিছু ঘটেনি। তবে, ডিউটি করতে গিয়ে অনেক জটিল কেস সামলাতে হয়েছে। সে সব বলতে পারব না। তবে এক এক সময় পরিস্থিতি খুবই কঠিন হয়েছে।

প্রশ্ন: ঋতুস্রাবের সময়েও অ্যাকশনে নামতে হয়?

সায়ন্তী: হয়, ওই অবস্থা সামলে কাজ করতে হয়। একা আমাকে নয়, সমস্ত মহিলা পুলিশকেই করতে হয়। যে ভাবে অন্য পেশার মেয়েরা করেন। আমাদের কাজে একটু বেশি ঝুঁকি এই যা।

প্রশ্ন: মাসখানেক আগে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। এক মহিলা পুলিশ সন্তান-সহ ডিউটিরত। দেখেছেন?

সায়ন্তী: দেখেছি। মনে মনে কুর্নিশ জানিয়েছি। নিজেকে বলেছি, আমাকেও এ ভাবেই সংসার, সন্তান, চাকরি, নাচ— সব সামলাতে হবে।

প্রশ্ন: যে কোনও কর্মস্থলে রাজনীতি থাকে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে, সহকর্মীর সঙ্গে। আপনি রাজনীতির শিকার হয়েছেন?

সায়ন্তী: বিশ্বাস করবেন কি না জানি না, আমি এই পরিস্থিতির শিকার হইনি কখনও। আমার কাজের পরিবেশ যথেষ্ট সুস্থ। সহকর্মীরাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেন। না হলে দুটো ভিন্ন ধারার কাজ আমার পক্ষে সামলানো সম্ভব হত না।

প্রশ্ন: আপনাকে দেখে কি পুলিশের ‘মানবিক’ মুখের প্রতি সাধারণের আস্থা ফিরবে?

সায়ন্তী: আমরা সত্যিই মানবিক। সঠিক সময়ে খবর পেলে আমরা কিন্তু বিপদ থেকে বাঁচিয়ে বের করে নিয়ে আসি। সমস্ত নারীর পাশে আছি আমরা। যথেষ্ট সহানুভূতির সঙ্গে, গুরুত্ব দিয়ে প্রত্যেকটা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করি। একা আমি নই, আমরা প্রত্যেকে। কিন্তু সকলের আগে বিশ্বাস করে আমাদের কাছে আসতে হবে। ভয় কাটিয়ে বন্ধু হতে না পারলে আমরা সমাজের পাশে দাঁড়াতে পারব না। আমাদের ‘মানবিক মুখ’ দেখে এখন সমাজের সব স্তরের মানুষেরাই আসছেন। আমাদেরও পাশে পাচ্ছেন।

নাচের ভঙ্গিমায় কনস্টেবল সায়ন্তী।

নাচের ভঙ্গিমায় কনস্টেবল সায়ন্তী। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আবার নাচের কথায় ফিরি। কত্থকের পাশাপাশি বলিউডি নাচ-সহ নাচের অন্যান্য ফর্মও শিখতে হচ্ছে?

সায়ন্তী: নৃত্যশিল্পী হওয়ায় আগেই এগুলো শিখেছিলাম। মাঝে পুলিশের ট্রেনিং নিতে গিয়ে অনেক দিন সেই সব নাচ বন্ধ ছিল। তাই শুরুতে একটু সমস্যা হচ্ছিল। এখন আর হচ্ছে না। বরং ভাল লাগছে।

প্রশ্ন: ফিটনেস বজায় রাখতে শরীরচর্চার পাশাপাশি নিশ্চয়ই ডায়েট মানেন?

সায়ন্তী: সাধারণ ডাল-ভাত খাই। তেল ছাড়া খাবার খাই। রাস্তার খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। এর বাইরে আর কিছুই করা সম্ভব হয় না।

প্রশ্ন: ‘ডান্স বাংলা ডান্স’-এর অনেক প্রতিযোগী ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। ধরুন, আপনিও সুযোগ পেলেন। পুলিশ কি তখন নায়িকা হবেন?

সায়ন্তী: (ফের বাঁধভাঙা হাসি) ওরে বাবা! এত কিছু তো ভাবিইনি। অডিশনে পাশ করব কি না সেটাই ঠিক ছিল না। এখন মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত যেন থাকতে পারি। তার জন্য নিজেকে নিংড়ে দিচ্ছি। সবটাই স্বপ্নপূরণের লোভে। যদি জিতে যাই তখন না হয় পরের কথা ভাবব!

Sayanti Goswami Dance Bangla Dance Zee Bangla Mithun Chakraborty Subhashree Ganguly Koushani Mukherjee jishu sengupta Ankush Hazra Avijit Sen

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}