চিকিৎসক অগস্টে সময় দিয়েছেন। হাতে এখনও পাঁচ মাস। মাত্র ২২ বছরে মা হতে চলেছেন ধারাবাহিক ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র দাপুটে খলনায়িকা ‘মিশকা’ ওরফে অহনা দত্ত। কেমন আছেন তিনি?
আসন্ন মাতৃত্ব সামলে শুটিং করছেন অভিনেত্রী। বাড়ি ফিরে অহনা একদম ঘরোয়া। আসন্ন মাতৃত্ব নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। স্বামী দীপঙ্কর রূপসজ্জাশিল্পী। তাঁর সঙ্গে ভাগ করে নেন যাবতীয় ভাবনা, স্বপ্ন।
আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গেও ভাগ করে নিলেন মাতৃত্বের সফর। বললেন, “কন্যা বা পুত্র, যে-ই আসুক সে বাধ্য হবে, সভ্য হবে। প্রকৃত মানুষ হবে। মান এবং হুঁশ— দুটোই থাকবে তার।” কথা বলতে বলতে একটু দম নিলেন। তার পর আরও যোগ করলেন, যে-ই ভূমিষ্ঠ হোক, শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে সুস্থ হোক। মা হিসাবে এটাই চাওয়া তাঁর।
যদি মেয়ে হয়? যদি মায়ের মতোই পর্দায় এবং পর্দার বাইরে দুষ্টু হয়!
ছোট পর্দায় অহনার দুষ্টুমি ভাইরাল। চুটিয়ে দুষ্টুমি করেছেন...। কথা থামতেই অনর্গল অভিনেত্রী, “মিশকা দুষ্টু নয়। খলনায়িকাও নয়। ও পাগলের মতো ভালবাসে সূর্যকে। মিশকা কেবল ভালবাসা পেতে চায়। তার জন্য সব ত্যাগ করতে রাজি। অনেকটা আমার মতো।” অহনার দাবি, তিনিও ভালবাসার কাঙাল। যাঁর কাছে সত্যিকারের ভালবাসা পান তাঁর প্রায় কেনা হয়ে থাকেন। বাস্তবে অহনার মা-বাবার দাবি, তাঁদের মেয়ে সঠিক নন। তাঁদের অমান্য করে সংসার পেতেছেন। সেই ক্ষোভ তাঁরা এখনও সমাজমাধ্যমে উগরে দেন। যেমন, শুক্রবারও অহনার মা চন্দনা অভিনেত্রী ধনশ্রী বর্মার সদ্য প্রকাশিত একটি গান মেয়েকে ট্যাগ করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। যে গানের মূল বক্তব্য, ‘শোয়ার নেশায় টাকা আর প্রেম বিলিয়ে যায়’!
ফোনের ও পারে নৈঃশব্দ্য। নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে অহনা বললেন, “মা-বাবাকে নিয়ে আর মাথা ঘামাই না। ওঁদের বক্তব্য নিয়েও কিচ্ছু বলার নেই। ১৮ বছরে এসে জীবনসঙ্গী বেছেছি। যে কোনও সিদ্ধান্ত অনেক ভেবেচিন্তেই নিয়েছি। আমার কোনও আফসোস নেই। দীপঙ্করকে নিয়ে খুব সুখী। ওঁরা খোঁজ নেন না। আমারও প্রয়োজন পড়ে না। স্বামী, শ্বশুরমশাইকে নিয়ে দিব্যি আছি।” আসন্ন সন্তান পুত্র না কন্যা তা জানেন না, তা-ও বললেন, “যদি মেয়ে হয় এবং যদি সে আমার মতো বিয়ে করে সুখী হয়, তা হলে ওকে সারা জীবন বুক দিয়ে আগলাব। কথা দিলাম।”
আরও পড়ুন:
তার পরেই আবার আগের মতো প্রাণোচ্ছ্বল। অহনা বললেন, “খুব তাড়াতাড়ি মা হয়ে যাচ্ছি। এক দিকে ভালই হচ্ছে। আমার জীবনের সমস্ত কিছুর সাক্ষী থাকবে আমার সন্তান। আমাদের এখনও আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়নি। ঠিক করেছি, সন্তান একটু বড় হলে ওকে নিয়ে আমরা সাত পাক ঘুরব। বেশ অন্য রকম হবে ব্যাপারটা।” বাড়িতে কোনও মহিলা সদস্য নেই। অন্তঃসত্ত্বাকে সাধ খাওয়ানোরও যে কেউ নেই! “দীপঙ্কর এই সমস্ত বিষয় মানে না”, ঝটিতি জবাব এল। অহনার যুক্তি, “আগে হবু মায়েরা বাড়িতেই সন্তানের জন্ম দিতেন। চিকিৎসাবিদ্যা উন্নত না থাকায় অনেকেরই মৃত্যু হত। তাই সন্তানের জন্মের আগে তাঁদের ভালমন্দ খাওয়ানো হত। দীপঙ্করের এই ভাবনা খারাপ লাগে।” তাই রূপসজ্জাশিল্পী স্বামী জানিয়েছেন, প্রতি মাসে হোটেলে নিয়ে গিয়ে পছন্দের খাবার খাওয়াবেন। প্রতি মাসে ‘সাধ’ পালন করবেন এ ভাবেই। এ ছাড়া, ননদ সাধভক্ষণের আয়োজন করছেন।
কোনও প্রতিকূলতাতেই দমছেন না, সাফ জানিয়েছেন অহনা। নিজেকেই যেন আশ্বস্ত করে বলেছেন, “আমি তো একা নই! সেটে এত জন রয়েছেন। সমাজমাধ্যমে অনুরাগীরা কত ভাল ভাল কথা বলেন।” আরও যোগ করেছেন, “আপনারাও নিয়মিত খোঁজ নেন। কথা বলেন। মন ভাল হয়ে যায়। একাকিত্বের কোনও প্রশ্নই নেই।” বলতে বলতে আবেগে বুজে এল অহনার গলা।