রাকেশ
তিনি নির্দিষ্ট ঘরানার ছবি বানান না। ছাত্র রাজনীতি, প্রেমের আখ্যান, খেলোয়াড়ের উড়ান— সব রকম ছবিই বানান নির্দেশক রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা। আর কয়েক দিন পরেই মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর নতুন ছবি ‘মেরে পেয়ারে প্রাইম মিনিস্টার’। ছবির প্রেক্ষাপট ধারাভি বস্তি। সেখানকারই এক বাচ্চা ছেলের গল্প, যে তার মায়ের জন্য শৌচাগার বানানোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লেখে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে।
প্রাথমিক ভাবে মনে হতেই পারে, ‘টয়লেট: এক প্রেমকথা’রই পুনর্কথন বোধহয়। কিন্তু ধারণা ভেঙে যায় রাকেশের কথা শুনলে, ‘‘তখন ‘ভাগ মিলখা ভাগ’-এর শুটিং করছিলাম আমরা। এক দিন প্যাকআপের পরে ভোর চারটে বেজে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরছিলাম গাড়িতে। যাতায়াতের পথেই ধারাভি পড়ে। রাস্তার ধারে ওই কাকভোরে ওখানকার মহিলারা প্রাতঃকৃত্য সারছিলেন। গাড়ির হেডলাইট গায়ে লাগতেই চমকে উঠে পড়লেন ওঁরা। কেউ শাড়ি টানছেন, কেউ আড়ালে লুকোচ্ছেন, মুখ ঢাকছেন। দৃশ্যটা আমার মনের ভিতরে গেঁথে গিয়েছিল। পরে ইউনিসেফের একটি সমীক্ষায় দেখেছিলাম, আমাদের দেশে পঞ্চাশ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে যখন মহিলারা বাড়ির বাইরে প্রাতঃকৃত্য সারতে যান,’’ বলছিলেন রাকেশ।
এই তথ্য-অভিজ্ঞতা থেকেই নিজের গল্পটা সাজিয়ে ফেলেন পরিচালক, ‘‘কেউ যদি ভাবেন, আমার ছবিটা টয়লেট বানানো নিয়ে, তা হলে ভুল করবেন। এটা ইগো থেকে বলছি না। গল্পটা মেয়েদের চোখ দিয়ে দেখা। ধারাভির যে ঘটনাটা আপনাকে বলছিলাম, ওটাই আমার ছবির ওপেনিং সিন। এবং আমার ছবির ওই বাচ্চা ছেলেটির মা-ও ধর্ষিত হয় ও ভাবেই। ফলে তার অনুভূতিও রয়েছে ছবিতে।’’
কিন্তু এই ছবি বানিয়ে কি কোনও ভাবে কিছু মানুষের বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলা যাবে? হেসে ফেললেন রাকেশ। বললেন, ‘‘সিনেমা কোনও দিন কারও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে পারে না। সব জায়গায় পাবলিক টয়লেট তৈরি হয়ে গেলেই যে মহিলাদের উপরে নির্যাতন বন্ধ হয়ে যাবে, সেটাও নয়। কিন্তু সিনেমা বা শিল্প মানুষকে ভাবাতে পারে। একটা সমষ্টিগত চেতনা তৈরি করতে পারে। বদল আসে সেখান থেকেই।’’
এই ছবিটার পরে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে আর একটি ছবির পরিকল্পনা করছেন রাকেশ। ‘‘বাবা-ছেলের সম্পর্ক নিয়ে ছবি। আমাদের জেনারেশন পরের প্রজন্মের উপরে অযথা কিছু চাপ সৃষ্টি করে। এই জায়গাটাই ধরার চেষ্টা করব ছবিতে,’’ মন্তব্য পরিচালকের। এখন চিত্রনাট্য লিখছেন তিনি। তবে জানালেন, সম্পূর্ণ নতুন অভিনেতাদের নিয়েই ছবিটা করতে চান রাকেশ।
যে ছবি নিয়ে রাকেশ এই মুহূর্তে সবচেয়ে উৎসাহী, সেটা হল ‘তুফান’। ফারহান আখতারের সঙ্গে এক বক্সারের জীবন নিয়ে ছবিটি করছেন রাকেশ। বললেন, ‘‘এই গল্পটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম আমরা দু’জন। ফারহানের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খুব অর্গ্যানিক। তাই আমাদের কোলাবরেশনটা সুন্দর হয়।’’
আরও একটি ছবির প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিচালক। নাম ‘পল দো পল’। এই ছবির জন্যই কি রণবীর সিংহের সঙ্গে প্রাইভেট মিটিং সারতেন পরিচালক? ‘‘টু সুন টু টেল,’’ ছোট্ট উত্তর রাকেশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy