Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Entertainment News

ঋতব্রত-সৌরসেনী কি এই জেনারেশনের অপু-দুর্গা?

আগামী ২৩ নভেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে মৈনাক ভৌমিক পরিচালিত ‘জেনারেশন আমি’। মুখোমুখি আড্ডায় ছবির দুই প্রধান অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সৌরসেনী মৈত্র। আগামী ২৩ নভেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে মৈনাক ভৌমিক পরিচালিত ‘জেনারেশন আমি’। মুখোমুখি আড্ডায় ছবির দুই প্রধান অভিনেতা ঋতব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সৌরসেনী মৈত্র।

‘জেনারেশন আমি’র অপু-দুর্গা।

‘জেনারেশন আমি’র অপু-দুর্গা।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ১২:২৬
Share: Save:

‘জেনারেশন আমি’ কোন জেনারেশনের ছবি?

সৌরসেনী: এটা সব জেনারেশনের ছবি। আলাদা করে কোনও একটা, দুটো জেনারেশনকে মেনশন করা যাবে না।

ঋতব্রত: কারেক্ট।

আপনারা তো ছবির ভাই-বোন। অপু-দুর্গা। তা হলে কি সত্যজিতের অপু-দুর্গার ফ্লেভারও থাকছে?

ঋতব্রত: এই উত্তরটা আমি দেব। আমি দর্শককে বলতে চাই, ছবিটা যখন দেখতে যাবেন একেবারেই ওই অপু-দুর্গাকে মাথায় রাখার দরকার নেই। ওটা ভেবে তৈরিই করেনি মৈনাকদা। বরং এটা ওর ছবি। ওর জীবনের ঘটনা। আমি ওর চরিত্রটাই করছি।

আরও পড়ুন, ‘কম্পিটিশন? কার সঙ্গে? বুম্বাদা সব সময় নম্বর ওয়ান’

অর্থাত্ মৈনাকের জীবনের ঘটনা এটা?

সৌরসেনী: এই গল্পটাই প্রথম লিখেছিল মৈনাকদা। ওর গল্প। সে জন্য শট দেওয়ার পর আমি জিজ্ঞেস করতাম, যেটা ঘটেছে তোমার সঙ্গে সেটা তুমি দেখতে পাচ্ছ তো?

মৈনাকের সঙ্গে আপনাদের দু’জনেরই প্রথম কাজ…

সৌরসেনী: হ্যাঁ। আমরা দারুণ মজা করেছি। পুরো পিকনিকের মতো ছিল। মেকআপ রুমে প্রচুর আড্ডা হত।

ঋতব্রত: (কথা কেড়ে নিয়ে) মৈনাকদা প্রচুর স্পেস দেয়। আর আমি প্রথম কাজ করে যেটা বুঝলাম, ভাল কাজ করতে হবে। এটা ছাড়া মৈনাকদা আর কিছু বোঝে না। আমাদের সেটে সত্যিই আড্ডা হত। লিলি চক্রবর্তী ছিলেন। আমরা গিয়ে বলতাম, উত্তমকুমারের সঙ্গে তোমার কাজের এক্সপিরিয়েন্স বল। বাবা (শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়) ছিল, অপাপিপি (অপরাজিতা আঢ্য) ছিল। অপাপিপি তো সেটে গিয়ে বাবাকে বলত, শান্তিদা ঘেটকু (এই নামেই ঋতব্রতকে ডাকেন অপরাজিতা) এইটুকু ছিল, মনে আছে তোমার? আর শুয়ে শুয়ে মুখে আওয়াজ করত…। হা হা হা…।

আরও পড়ুন, কৌশানীর আগে বনির কত জন গার্লফ্রেন্ড ছিলেন?

বাবার সঙ্গে এতটা বড় স্পেসে তো এই প্রথম কাজ ঋতব্রত?

ঋতব্রত: হ্যাঁ। এই ছবিতে বাবা ঠিক বাবার মতো নয়। মানে বাবা আসলে যেমন, তেমন নয়। আমিও তাই। ফলে আমরা প্রফেশনালিই ডিল করেছি।

ভাই-বোনের সম্পর্কে ‘মাকে বলে দেব’ একটা ব্যাপার থাকে। ছবিতেও আছে। আপনাদের রিয়েল লাইফে এমন ঘটনা আছে নিশ্চয়ই…

ঋতব্রত: আমার তখন ক্লাস এইট। আমার মাসতুতো দিদি আছে। ও কেস খাইয়েছিল। প্লাস্টিকে করে পেপসি পাওয়া যেত না…ওটা খুব খেতাম স্কুল থেকে বেরিয়ে। ওটা গিয়ে ও মাকে বলে দিয়েছিল। আর এখন হোয়াটস্অ্যাপে ওর এমন অনেক ইনফো পাই, যেটাতে মেনশন করা থাকে এটা যেন কেউ জানতে না পারে (হাসি)।


ছবির দৃশ্যে অপরাজিতা এবং ঋতব্রত।

সৌরসেনী: আমার ক্ষেত্রে ভাই-বোন না। বন্ধুদের থেকে এমন কেস খেয়েছি। ধরুন, আমি বাড়িতে নেই। কোনও বন্ধুকে ফোনে বলে দিলাম, বাড়িতে বলেছি তোর বাড়িতে আছি। ম্যানেজ করে নিস। আবার এমন বন্ধুর নামও বলেছি যে হয়তো সে সময় কলকাতাতেই নেই…।

প্রোমোতে অপরাজিতার একটা সংলাপ দেখলাম, আপনাদের বলছেন, ‘তোদের দু’জনকে আমি একা ছাড়ব না…’

ঋতব্রত: ওটা কেন বলেছে, জানতে গেলে ছবিটা দেখতে হবে।

সৌরসেনী: হ্যাঁ, এটা এখন বলা যাবে না। (হাসতে হাসতে খুনসুটি শুরু হল অনস্ক্রিন ভাই-বোনের)

আপনাদের ছবি যখন রিলিজ করছে তখন পুজোর ছবির ভিড় নেই। এমনকি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালও শেষ। বক্স অফিসে তা হলে ভালই রেজাল্ট হবে, বলুন?

সৌরসেনী: এটা একেবারেই প্রোডিউসারদের ভাবনার জায়গা। তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। যে জায়গায় যিনি ভাল বোঝেন, সেটা তিনি দেখলেই ভাল।

আরও পড়ুন, ‘সেক্স সিন বিদেশে হলে অসাধারণ, আর আমরা করলে খারাপ!’

ঋতব্রত: ঠিকই। আমরা আমাদের কাজটা করে ফেলেছি। তবে একটা কথা আমি বলব। হয়তো শুনে অনেকেই বলবেন, ছোট মুখে বড় কথা। তবে ২০১৮-এ দর্শকের মান খুব নেমে গিয়েছে। রিসেন্ট কিছু ঘটনায়, নাটক হোক বা সিনেমায় যে সব জিনিস তৈরি হচ্ছে, বিক্রি হচ্ছে, আমি এটা বলতে বাধ্য হলাম। আপনি এখনই দেখুন, ‘জেনারেশন আমি’ কোন সিনেমার কপি সেটাও ইউটিউবে রয়েছে। আরে, ছবিটা আগে দেখুন…(কিছুটা উত্তেজিত)।

এমন হয়েছে নাকি?

সৌরসেনী: অফকোর্স। এরা এত বোদ্ধা, ট্রেলার দেখেই সব বুঝে গিয়েছে। ছবিটা দেখুন, তার পর বলুন… (রেগে গিয়ে)।

ঋতব্রত: আর কিছু লোক তো আছে, যারা কোনও একটা ছবির পিছনে পড়ে যায়। ছবিটাকে যে করেই হোক খারাপ বলতেই হবে। আরে নাচা গানা মানেও খারাপ নয় কিন্তু। এরা আসলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশে না। জানেন, আমি ট্যাক্সি করে যাচ্ছিলাম। ট্যাক্সিওয়ালা বলছে, ছবি মানে নাচ হবে, গান হবে। সারা দিনের ক্লান্তির পর ওটাই ভাল লাগে। আরে, এরাই তো দর্শকদের মধ্যে মেজরিটি। ‘পর্ণোমোচী’ ছবিটার সময় বক্স অফিস নিয়ে খুব ভেবেছিলাম। ওটা আমার লার্নিং এক্সপিরিয়েন্স ছিল বলতে পারেন। কিন্তু ছবিটা চলেনি। ফলে দর্শক কী চান, আমরা হয়তো সঠিক জানি না। প্রতি দিন এই চাওয়াগুলো পাল্টাচ্ছে। আর মৈনাকদা বলে, ৫০টা লোক দেখার চেয়ে পাঁচটা লোক দেখে ভাল বললে সেটাই লাভ। আমিও সেটাই বিশ্বাস করি।


সৌরসেনী এবং ঋতব্রত অফস্ক্রিনের সম্পর্কও ভাই-বোনের।

ইন্ডাস্ট্রির ভেতরেও কি সঠিক সমালোচনা পান? নাকি সবাই সামনে ভাল বলে পিঠ চাপড়ে দেয়, কিন্তু অন্য কোথাও গিয়ে সমালোচনা করেন?

সৌরসেনী: আমি আমার ডিরেক্টরদের কথা বলতে চাই এ ক্ষেত্রে। অরিন্দমদা, অঞ্জনদা, মৈনাক— এঁদের সঙ্গে কাজ করাটাই লার্নিং এক্সপিরিয়েন্স। আর এঁরা কিছু বললে সেটা আমি ইমপ্রুভ করারই চেষ্টা করি।

ঋতব্রত: আমি প্রথমেই সমালোচক হিসেবে ঋদ্ধির নাম বলব। ঋদ্ধি সেন। আমার বন্ধু।

আরও পড়ুন, দেব কি ভাল বাংলা বলেন? উত্তরে সহ-অভিনেতা অর্ণ বললেন...

কিন্তু অনেকে বলেন, আপনাদের মধ্যে খুব কম্পিটিশন…

ঋতব্রত: (হেসে) লোকে তো কত কিছুই বলে। আমরা এ সব খুব এনজয়ও করি। নিজেদের মধ্যে মজা করি। তবে ঋদ্ধি আমার প্রথম সমালোচক। সোজাসাপ্টা বলে দেয়। এ ছাড়া অনির্বাণ ভট্টাচার্য, কৌশিক কর আমার ক্রিটিক। কারণ ওরা অনির্বাণ বা কৌশিক হওয়ার আগে থেকে আমি চিনি। আর ‘কিশোর কুমার জুনিয়র’ করার পর থেকে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও বলেন। বহু দিন আগের কোনও কাজ নিয়ে বলেন হয়তো। এতটাই ডিটেলে মনে রেখেছেন।

‘অপু-দুর্গা’র রিলেশনশিপ স্টেটাস কী?

ঋতব্রত: আমার তো অগস্টে প্রেম কেটে গিয়েছে। এখন তো…(দীর্ঘশ্বাস)। আর ও তো সদা সিঙ্গল।

মানে?

সৌরসেনী: হ্যাঁ, ঠিকই বলেছে। প্রেম করেছি, কিন্তু আমার রিলেশনশিপ হয়নি।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE