Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

সেলেব নয়, অভিনেতা হতে এসেছি, বললেন নবাগত রাজনন্দিনী ও অমর্ত্য

অভিষেক সাহার প্রথম ছবি ‘উড়নচণ্ডী’তে ডেবিউ করছেন চৈতী ঘোষালের ছেলে অমর্ত্য রায় ও ইন্দ্রাণী দত্তের মেয়ে রাজনন্দিনী পাল।

অমর্ত্য-রাজনন্দিনী। ছবি: দেবর্ষি সরকার।

অমর্ত্য-রাজনন্দিনী। ছবি: দেবর্ষি সরকার।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০১:০১
Share: Save:

দু’জনের বাড়ি কাছাকাছি। তবু পরস্পরকে চিনতেন না। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের অফিসে প্রথম আলাপের দিনে অমর্ত্যকে ‘দাদা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন রাজনন্দিনী। আর এখন পরিস্থিতি এমন যে, রাজনন্দিনীর জোরাজুরিতে অমর্ত্যকে বলতেই হল, ‘‘শি ইজ় মাই ক্রাশ।’’

অভিষেক সাহার প্রথম ছবি ‘উড়নচণ্ডী’তে ডেবিউ করছেন চৈতী ঘোষালের ছেলে অমর্ত্য রায় ও ইন্দ্রাণী দত্তের মেয়ে রাজনন্দিনী পাল।

লুক-ই সব নয়...

প্রথম ছবিতে জৌলুসকে উপেক্ষা করে এমন সিরিয়াস চরিত্র বাছলেন কেন? রাজনন্দিনী বললেন, ‘‘আমি প্রথম দিনেই ‘হ্যাঁ’ বলেছিলাম। তখন জানতামও না ছবির গল্প কী, আমার চরিত্র কী বা কতটুকু। বুম্বা আঙ্কলকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কি সত্যিই আমাকে ছবিতে নেবে? ও বলেছিল, এমন চরিত্রে নেবে যা আমি ডিজ়ার্ভ করি। আর আজকের দিনে দেখতে ভাল লাগা বড় কথা নয়। অভিনেতা হতে এসেছি, সেলেব নয়।’’ একই কথা বলছেন অমর্ত্য, ‘‘ভারতীয় ছবিতে হিরোর ধারণা বদলাচ্ছে। বাংলা ছবিও তার বাইরে নয়। এই ছবিতে সমাজের প্রান্তিক গোষ্ঠীর কিছু মানুষকে দেখানো হয়েছে। তারা তো এক অর্থে হিরোই!’’ ছবির ছোটু ও মিনু একমত যে, ‘‘ইমেজের বাইরে বেরিয়ে কিছু করাটাই চ্যালেঞ্জ।’’

আমরা পারফর্মার

অনেক সময়ে বাবা-মা যে পেশায় সফল, ছেলে-মেয়ে সেই পেশায় আসতে চান না। রাজনন্দিনী বললেন, ‘‘যখন জিজ্ঞেস করা হতো গান, নাচ না অভিনয় কোনটা করব, জানতাম না কী উত্তর দেব। ‘এক যে ছিল রাজা’র প্রথম দিন শুটের পরে পেটভর্তি খেলে যে আরাম হয়, আমার ঠিক তেমন অনুভূতি হয়েছিল। গত দু’বছরে অভিনয় নিয়ে সিরিয়াস হয়েছি। তবে কারও জায়গা নিতে আসিনি। নিজের জায়গা তৈরি করতে এসেছি।’’ অমর্ত্যর গল্পটা কিছুটা তেমনই। ‘‘আমি তো গান লিখি, সুর দিই, গিটার বাজাই। ‘উড়নচণ্ডী’র আগে একটা হিন্দি ছবি করেছি। দুটো ছবি করার পরে মনে হল, পারফর্ম করাটা উপভোগ করছি। আর ছোটবেলায় ফ্যান্টাসি সাহিত্য পড়তাম। খেলনা বন্দুক-তরোয়াল হাতে নিয়ে নিজেকে চরিত্র ভেবে খেলতাম। সেটাই অভিনয়ের ইচ্ছে তৈরি করে দিয়েছিল।’’

সম্পর্কের ধাঁধা

এই মুহূর্তে অমর্ত্য-রাজনন্দিনী সিঙ্গল। ‘‘আমার বয়ফ্রেন্ডের সিরিজ় ছিল। তবে ২০১৬ থেকে সিঙ্গল। তার জন্য দুঃখ নেই। তবে বয়ফ্রেন্ড কে না চায়!’’ আহ্লাদের ছোঁয়া তনয়ার কণ্ঠে। অমর্ত্য ছোটবেলা থেকেই স্কুলে পপুলার, ‘‘আমি রক অ্যান্ড রোল মিউজ়িক শুনে বড় হয়েছি। তাই খোলামেলা স্বভাবের। সিরিয়াস সম্পর্কও ছিল।’’ ওঁর কথার মাঝেই রাজনন্দিনীর টিপ্পনী, ‘প্লেয়ার, প্লেয়ার!’ অমর্ত্য স্পষ্ট করলেন, ‘‘প্লেয়ার নই। তবে আমি অত ট্যাগে বিশ্বাস করি না। এক প্রাক্তন এখনও বন্ধু।’’ বয়ফ্রেন্ড থাকলেও রাজনন্দিনীর সব পছন্দ গোলমেলে ছিল! ‘‘নিজেও জানি না কেন তখন ডেট করেছি। জানতাম, কষ্ট পাব। তবু করেছি,’’ অকপট নায়িকা। অমর্ত্যর এক প্রাক্তন আবার তাঁর জন্য একটু বেশিই পাগল হয়ে উঠেছিলেন।

ইশকওয়ালা ক্রাশ...

আবীর চট্টোপাধ্যায় রাজনন্দিনীর ক্রাশ। তবে যিশু সেনগুপ্তের ফ্যান গার্ল তিনি। ‘‘সৃজিতের (মুখোপাধ্যায়) ছবিতে যিশুদার স্ত্রীর চরিত্রে আমি। ভেবেই এত খুশি হয়েছিলাম যেন সত্যিই আমাদের বিয়ে হয়েছে,’’ হাসি ধরছিল না তাঁর মুখে। ইন্ডাস্ট্রির কার উপর ক্রাশ আছে ভেবে কূল পেলেন না অমর্ত্য, ‘‘সবাই তো মায়ের বন্ধু।’’ সেই সুযোগেও বাজিমাত রাজনন্দিনীর। ‘‘আমি ছেলে হলে রুক্মিণীদির (মৈত্র) উপর ঠিক ক্রাশ থাকত।’’ আলিয়া ভট্টের জন্য ভাল লাগা রয়েছে অমর্ত্যর। ‘‘বন্ধুদের বলতাম, মুম্বই গিয়ে ছবি করব। কয়েক বছর পরে আলিয়ার সঙ্গে ডেটে গিয়ে তোদের ফোন করব,’’ লাজুক হাসি তাঁর মুখে। গায়িকা জসলিন রয়্যালের সঙ্গে দেখা করাও আছে অমর্ত্যর চেকলিস্টে।

আমাদের মা সুপারকুল

অমর্ত্যর বেস্টফ্রেন্ড তাঁর মা, ‘‘বন্ধুদের সঙ্গেও মায়ের খুব দোস্তি। মা আমার কাজের বড় সমালোচকও।’’ রাজনন্দিনীও মানেন, ‘‘এখনকার মায়েরা খুব ‘কুল’। মাকে সব কিছুই বলি।’’ তবে মায়েরা এখনও ছবিটা দেখেননি। ছেলে-মেয়ের ইচ্ছে, রিলিজ়ের পরেই তাঁরা দেখুন।

গান আর দিবাস্বপ্ন দেখা— এই দুয়ে অমর্ত্য আর রাজনন্দিনীর খুব মিল। তাঁদের ঘিরে বাঙালি দর্শক আগামীর স্বপ্ন বুনুন, ছবির ট্রেলার সেই
আশ্বাসই দিচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Amartya Roy Ranjandini Dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE