১
মেসি আমাদের মারাদোনাকে মনে করায়
আমাদের জেনারেশন কী আমাদের ঠিক আগের জেনারেশনের কাছে ফুটবলের আলটিমেট ফ্যান্টাসি ছিলেন দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। আর এত দিন পরে মারাদোনা-ফ্যানেদের চোখ জুড়িয়ে যায় যখন তারা মাঠে মেসিকে দ্যাখে। সেই বাঁ পা... সেই বল নিয়ে ছোটা...মেসি আমাদের মারাদোনাকে বড্ড মনে করিয়ে দেয়।
২
মেসির ছোটবেলাটা যেন আমাদের পাশের বাড়ির ছেলের ছোটবেলা
আজকে মেসির বিশ্বজোড়া খ্যাতি, অর্থ, প্রতিপত্তি। কিন্তু এই মেসির ছোটবেলাতে ধরা পড়েছিল গ্রোথ হরমোন ডেফিশিয়েন্সি।
শুনেছি ডাক্তাররা এটাও বলেছিলেন ও আর খেলতেই পারবে না যদি না চিকিৎসা হয়। সেই এগারো বছরের ছেলেটার মনের অবস্থা কী হতে পারে বলুন। সেখান থেকে মনের জোরে এতটা রাস্তা আসা আমার কাছে ভীষণ ইন্সপায়ারিং একটা গল্প। হ্যাঁ, ওর চিকিৎসা স্পেনে হয়েছিল। বার্সেলোনা ক্লাব সব খরচ দিয়েছিল। কিন্তু রাতে শুতে যাওয়ার সময় মনে মনে প্রতিজ্ঞাটা তো ওকেই করতে হত। সেই জন্যই ও মেসি।
৩
টিম গেম, টোটাল ফুটবল নিয়ে কচকচানির মধ্যেও সেই একার ঝলকানি
আমরা যারা সিনেমায় অভিনয় করি, প্রায় একটা কথা বলি ‘‘সিনেমা অর ফিল্ম মেকিং ইজ এ টিম গেম’’। কথাটা একেবারেই ঠিক, কিন্তু তার মধ্যে থেকেও কিছু কিছু অভিনেতা, কিছু কিছু পরিচালক এমন একটা একার ঝলকানি দেখায় যে আমরা বিস্মিত হয়ে যাই। ফুটবল মাঠে বেশির ভাগ সময়ই ‘আমরা টোটাল ফুটবল’ কী ‘টিম ফুটবল’ দেখি কিন্তু প্রহর গুনি কখন, কোন প্লেয়ারের ব্যক্তিগত ঝলকানি দেখব। আর যে প্লেয়ারটা বলে বলে এই রকম ঝলকানিটা দেখায় সেই লিয়োনেল মেসি।
যত বড় প্লেয়ারই হোক, যখন দেখা যায় প্রতিপক্ষ তাকে সমান সম্মান দিচ্ছে বা ওর সমকক্ষ সেলিব্রিটি অন্য ফুটবলাররা একবাক্যে ওর শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিচ্ছে, তখন বোঝা যায় কেন ফুটবল দুনিয়া ওকে কুর্নিশ করে। এবং এত কিছুর পরেও মেসি কিন্তু চূড়ান্ত টিমম্যান। বার্সেলোনা ক্লাবের বিশাল বড় বড় স্টার খেলোয়াড়ের সঙ্গেও সহজ ভাবে মিশে যায় আর সতীর্থদের মধ্যেও সমান জনপ্রিয়তা পেয়ে থাকে।
৪
আর্জেন্তিনার হয়ে খেলার সময়ও গা বাঁচিয়ে না খেলা
আমি জানি এটা বিতর্কিত বিষয়। আমরা এত দূরে থেকেও যা শুনি তা হল, ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল এতটাই নিংড়ে নেয় একটি ফুটবলারকে, যে তারা যখন দেশের হয়ে খেলে তখন অনেক সময়ই শরীরে আর দম থাকে না। কেউ কেউ নাকি পা বাঁচিয়েও খেলে।
কিন্তু বিশ্বাস করুন ইদানীং কালে যত বার আর্জেন্তিনার খেলা দেখেছি আমার একবারও মনে হয়নি মেসি নিজেকে বাঁচিয়ে খেলছে। ইনফ্যাক্ট আর্জেন্তিনার হয়ে খেলার সময় যেন ও অনেক দায়িত্ব নিয়ে খেলে। এত সাফল্যের পরেও দেশের প্রতি এই কমিটমেন্ট আর দুর্বলতাটা আমার কাছে ভীষণ অ্যাপিলিং। সেই জন্যেই ও এত স্পেশাল।
৫
ফ্যামিলি ম্যান
অনেক ফুটবলারকে টুইটার, ফেসবুকে ফলো করি। কেউ দামি গাড়ির সামনে ছবি বা বিকিনি পরা বান্ধবীর সঙ্গে ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরাতে ছুটি কাটানোর ছবি ফেসবুকে দেয়। কিন্তু প্রচার সর্বস্ব দুনিয়ায় মেসির বেশির ভাগ ছবি দেখি ওর ছেলের সঙ্গে বা বান্ধবীকে নিয়ে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দারুণ ভাবে ফ্যামিলি ওরিয়েন্টেড। আমার কাছে আমার পরিবারই প্রথম। তাই অত বড় স্টারকে যখন দেখি পরিবারকে অতটা গুরুত্ব দিচ্ছে তখন মনটা অটোমেটিকেলি ভিজে যায়। মনে হয় এই তো আদর্শ সেলিব্রিটি। হ্যাপি বার্থ ডে লিওনেল মেসি।
পাঁচ উইশ
জন্মদিনে মেসির কাছে ভক্তের আকুতি
১
কোপা আমেরিকা জিতে প্রমাণ করুন দেশের হয়েও ট্রফি জিততে পারেন
২
এ বারেও জিতে নিন ব্যালন ডি’অর। তা হলে রোনাল্ডো একেবারে নিশ্চিহ্ন
৩
একটা জার্মান বক্সার তো ছিলই।
এ বার আরব শেখদের মতো একটা বাঘ বা সিংহ পুষলে ক্ষতি কী!
৪
আপনার আটটা গাড়ি আছে। এ বার একটা নতুন মডেলের
রোলস রয়েস ফ্যান্টম বা ল্যাম্বোর্গিনি হারাকান হয়ে যাক
৫
ছোট্ট থিয়াগোকে লা মাসিয়াতে ভর্তি করে দিন।
বার্সা জুনিয়র টিমে যাতে জুনিয়র মেসিকে শিগগির দেখা যায়
মেসি শুনছেন...
শেষ এক বছরে আপনাকে নিয়ে ওরা কী বলল?
ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো: মেসির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আমাকে আরও উদ্বুদ্ধ করে মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দিতে। ও চারটে ব্যালন ডি’অর জিতেছে। আমি তিনটে। আমরা কিন্তু ফুটবল বদলে দিয়েছি।
হোসে মোরিনহো: ফুটবলে দু’ধরনের দল আছে। একটা সাধারণ দল। আর একটা দল যেখানে মেসি আছে। ছেলেটাকে খেলতে দেখার থেকে আনন্দ আর কিছু নেই।
পেপ গুয়ার্দিওলা: কে কী ভাবে জানি না। আমার কাছে সর্বকালের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিই। আমার তো মনে হয় ও পেলের থেকেও বেশি ভাল।
নেইমার: আমি ব্যালন ডি’অর জিতব কী করে? ওটা এখন থেকেই মেসির জন্য রাখা আছে।
জিয়ানলুইগি বুফোঁ: মেসি অন্য গ্রহের ফুটবলার। ও আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের সঙ্গে খেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy