গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে শনিবার রাজ্যের ৫ জেলার ৪৪ কেন্দ্রে ভোট। নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে, ওই ৪৪ কেন্দ্রে ২০১৬ থেকে ২০১৯— ৩ বছরে বিজেপি-র ভোট বেড়েছে ৩ গুণেরও বেশি। চতুর্থ দফায় কোচবিহার জেলার ৯ এবং আলিপুরদুয়ারের ৫টি বিধানসভা আসনের সব ক’টিতেই ভোট হবে। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১টি, হাওড়া জেলার ১৬টির মধ্যে ৯টি এবং হুগলির ১৮টির মধ্যে ১০টি আসন রয়েছে এই তালিকায়।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে এই আসনগুলির মধ্যে তৃণমূল জিতেছিল ৩৯টিতে। বিজেপি দখল করেছিল মাত্র ১টি। বামেরা পেয়েছিল ৩টি আসন। আর তাদের সহযোগী কংগ্রেস জিতেছিল ১টিতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের হিসাবে তৃণমূল ওই ৪৪-এর মধ্যে ২৫টি এবং বিজেপি ১৯টি কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে। আর আলাদা ভাবে লড়ে বাম-কংগ্রেসের ঝুলি শূন্য। এই পরিসংখ্যান নিয়েই শনিবার ভোট দিতে যাচ্ছে ওই ৪৪ কেন্দ্র।
২০১৬-য় এই ৪৪টি আসনে তৃণমূল ৪৬.০২, বিজেপি ১২.১৩ এবং বাম-কংগ্রেস জোট ৩৫.৫ (২৮.৭৯+৬.৭১) শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের ভোট কিছুটা কমে হয় ৪৪.৭৩ শতাংশ। বিজেপি-র বেড়ে হয় ৪০.৮৮ শতাংশ। তা ছাড়া বামেরা ৯.৬৩ এবং কংগ্রেস ১.৮৮ শতাংশ ভোট পায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ভোটবৃদ্ধির হার ধরে রাখাই এ বার পদ্ম শিবিরের বড় চ্যালেঞ্জ।
চতুর্থ দফাতেই প্রথম ভোট হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কোচবিহার জেলায় ৯টি আসনের মধ্যে ৮টি আসনেই জিতেছিল তৃণমূল। ১টি (কোচবিহার উত্তর) পেয়েছিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফল বলছে, বিজেপি সেখানে ৭ এবং তৃণমূল মাত্র ২টি কেন্দ্রে এগিয়ে। উত্তরবঙ্গের আর এক জেলা আলিপুরদুয়ারের ৫টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০১৬ সালে তৃণমূল জিতেছিল ৪টিতে। মাদারিহাট গিয়েছিল বিজেপি-র খাতায়। তিন বছর পরে লোকসভা ভোটে সব ক’টি আসনেই এগিয়ে যায় বিজেপি।
তৃণমূলের ‘ঘাঁটি’ হিসাবে পরিচিত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অবশ্য তিন বছরের মধ্যে পরিবর্তনের চোরাস্রোত দেখা যায়নি। চতুর্থ দফায় ভোট হতে যাওয়া ১১টি আসনের মধ্যে ১০টিতে ২০১৬-য় জিতেছিল তৃণমূল। কলকাতা পুর এলাকার অন্তর্গত টালিগঞ্জ, কসবা, বেহালা পূর্ব, বেহালা পশ্চিমের পাশাপাশি ভাঙড় এবং বজবজ বিধানসভার মতো গ্রামীণ আর আধাশহরও ছিল এই তালিকায়। একমাত্র যাদবপুর কেন্দ্রটি ছিল সিপিএমের দখলে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে সব ক’টি আসনেই তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে।
গঙ্গার ওপারেও পরিবর্তনের ঢেউয়ের তেমন আঁচ মেলেনি লোকসভা ভোটে। শনিবার হাওড়া জেলার যে ৯টি বিধানসভা আসনে ভোট হবে, ২০১৬ সালে তার সব ক’টিতেই তৃণমূল জিতেছিল। এর মধ্যে হাওড়া পুরসভার অন্তর্গত আসনগুলির পাশাপাশি উলুবেড়িয়া পূর্ব, ডোমজুড়ের মতো আধাশহুরে এবং সাঁকরাইল ও পাঁচলার মতো গ্রামীণ আসনও রয়েছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল বলছে, এই ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ৮টিতে। একমাত্র হাওড়া উত্তরে এগিয়ে বিজেপি।
পাশের জেলা হুগলিতে অবশ্য ২০১৬ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে লক্ষণীয় ভাবে সমর্থন বাড়াতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। চতুর্থ দফায় এই জেলার চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর এবং চন্দননগর মহকুমার যে ১০টি আসনে ভোট হবে, ২০১৬ সালে তার মধ্যে ৮টিতে তৃণমূল জিতেছিল। চাঁপদানিতে কংগ্রেস এবং পান্ডুয়ায় সিপিএম জেতে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফল জানাচ্ছে, ৬টি কেন্দ্রে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। শ্রীরামপুর, সিঙ্গুর, চুঁচুড়া, বলাগড়, সপ্তগ্রামের পাশাপাশি সিপিএমের জেতা পান্ডুয়াও রয়েছে এই তালিকায়। তৃণমূল এগিয়ে ৪টি আসনে— উত্তরপাড়া, চন্দননগর, চণ্ডীতলার পাশাপাশি ২০১৬-য় কংগ্রেসের জেতা আসন চাঁপদানিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy