মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী।
চক্রান্তের অভিযোগ একেবার দুর্ঘটনার মুহূর্তেই করেছিলেন। বলেছিলেন, ৪-৫ জন মিলে ঠেলে দিয়েছে। পরে গাড়ির দরজায় আঘাত লাগার কথা বললেও সোমবার নন্দীগ্রামে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘ভোটের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস।’’ সেই সঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। আজও আমায় পা ভাঙা নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে মিটিং করতে হচ্ছে। তোমার নির্দেশ ছাড়া এ সব হতে পারে না।’’ চক্রান্ত করে তাঁর পায়ে আঘাতের কথা বলে মমতা নন্দীগ্রামের মানুষকে অপমান করেছেন বলে সরব বিজেপি। কাঁথির সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলাতেও একই কথা শোনা গিয়েছে। সোমবার তারও পাল্টা মন্তব্য করলেন মমতা। বললেন, ‘‘কোনও নন্দীগ্রামের লোক এ সব করতে পারে না। বহিরাগত গুন্ডাদের দিয়ে এ সব করিয়েছ তুমি।’’
দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ নন্দীগ্রামে। বুধবার শেষ হবে প্রচার পর্ব। তার আগে একটির পর একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন মমতা। এরই মধ্যে একটি ছিল বয়াল পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানেই মমতা বিরুলিয়া বাজারে পায়ে চোট পাওয়ার ক্ষেত্রে নাম না করেও স্পষ্টতই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আঙুল তুললেন। নিজেকে ‘আহত বাঘ’ হিসেবে উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘মনে রাখবেন মৃত বাঘের থেকেও আহত বাঘ আরও ভয়ঙ্কর।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘ইলেকশনের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস।’’
সোমবার মমতার সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন তৃণমূলের গায়িকা প্রার্থী অদিতি মুন্সি। এ ছাড়াও শিল্পী শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় গান শোনান। এর পরে গোটা বক্তৃতাতেই শুভেন্দুকে নিশানা করেন মমতা। বলেন, ‘‘আমি বাইরের মেয়ে? তুই ব্যাটা কোনও হরিদাস কাঁথির ছেলে, কী করে বেড়াস? তুই কবে নন্দীগ্রামের ছেলে হলি? তুই কী করে ভূমিপুত্র হলি? তোর তো এখানে ভূমিও নেই, জমিও নেই। তুই তো দালালি করে গেছিস। আগে সিপিএমের দালালি করেছিস, এখন বিজেপি-র দালালি করছিস। কী দিইনি তোকে?’’ এখানেই না থেমে মমতা বলতে থাকেন, ‘‘তোকে পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী করেছি। তোকে পরিবেশ দফতর, সেচ দফতরের মন্ত্রী করেছি। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করেছি। তোর বাবাকে দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করেছি, তোর ভাইকে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান করেছি।’’ এ ছাড়াও তাঁকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বলেও দাবি করেন মমতা। অধিকারীদের লক্ষ্য করে সোমবার আরও অভিযোগ করেন মমতা। বলেন, ‘‘কী নেই ওদের? পেট্রোল পাম্প থেকে শুরু করে লঞ্চ থেকে শুরু করে, ব্যাঙ্ক থেকে শুরু আই টি আই থেকে শুরু করে ট্রলার থেকে কী নেই?’’ সোমবার নন্দীগ্রামের সভা থেকে হুঁশিয়ারির সুরও শোনা যায় মমতার গলায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খেলা খেলি ভদ্র ভাবে। কিন্তু আমার সঙ্গে কেউ লাগতে এসো না। আমাকে আঘাত করলে আমি আগুনের মতো ঝরে পড়ি, সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ি।’’
প্রসঙ্গত, রবিবারই মমতা ১৪ বছর আগে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চে নন্দীগ্রাম-কাণ্ডে পুলিশ ঢোকানোর দায় চাপান শুভেন্দু ও শিশির অধিকারীর উপর। জবাবে শুভেন্দু বলেন, ‘‘মমতার লেখা ‘নন্দী মা’ বইতে কী লেখা আছে মাননীয়া নিজে পড়ে দেখুন।’’ পায়ে জখম করা নিয়ে মমতার সোমবারের মন্তব্যের পরে অবশ্য শুভেন্দু কোনও মন্তব্য করেননি। তবে সোমবারই একটি সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘উনি বুঝতে পেরে গেছেন হেরে যাবেন। সঙ্গে লোকজনও নেই। তাই মাথার ঠিক নেই। যা পারছেন বলছেন। বেগম উড়ে এসেছেন, উড়ে যাবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy