ভাঙা হয়েছে টোটো। নিজস্ব চিত্র।
রং খেলাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অশান্তি বাধল বর্ধমানের কাঞ্চননগর-রথতলা এলাকায়। সোমবার বিকেল থেকে দফায়-দফায় গোলমাল পাকে ওই এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গায়। দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন জখম হন বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে দু’জনের চোট গুরুতর। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের বড় বাহিনী ও র্যাফ নামে। পুলিশ জানায়, রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে দু’পক্ষের ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তৃণমূল ও বিজেপি, দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। বাজেপ্রতাপপুরের সুভাষপল্লিতেও তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়।
বিজেপির অভিযোগ, মত্ত অবস্থায় তৃণমূলের এক কর্মী এক মহিলাকে রং দিতে যান। মহিলা বাধা দিলে তাঁকে চড় মারা হয়। বিষয়টি নিয়ে ওই মহিলার এক আত্মীয় ওই তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে নালিশ করতে গেলে লোকজন জড়ো করে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের বেশ কয়েকজন আমাকে একা পেয়ে মারধর করে। আমি বিজেপি করি, এই ভেবে মারধর করেছে। আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।’’
তন্ময় দাস নামে ওই এলাকারই এক যুবকের অভিযোগ, ‘‘রং খেলে বাড়ি ফিরছিলাম। একা পেয়ে তৃণমূলের লোকেরা মারধর করে।’’ বিজেপির দাবি, কাঞ্চননগর-রথতলা এলাকার মধ্যে আমবাগান, পদ্মপুকুরে তাদের আধিপত্য রয়েছে। তাই তৃণমূল সেখানে বারবার হামলা চালানোর চেষ্টা করে। আরও অভিযোগ, এ দিন বর্ধমান শহরের ৫ নম্বর মণ্ডলের ওই এলাকার নেতাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। স্কুটার, টোটো পর্যন্ত ভাঙচুর করা হয়েছে।
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, গত কয়েকদিন ধরে শ’খানেক ‘বহিরাগত’ যুবক মোটরবাইক নিয়ে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘুরছে। পাড়ায় আতঙ্ক তৈরি করছে, হুমকি দিচ্ছে। প্রতিবাদ করলে মারধরও করছে। ভয়ে দোকানপাট খুলতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। এলাকার বাসিন্দা কৃশানু সিংহরায়ের দাবি, ‘‘পাড়ার বাসিন্দা খোকন দাস তৃণমূলের প্রার্থী। তাঁকে আমাদের এলাকার মানুষ সমর্থন করছেন। তাই গাড়িতে তেল ভরতে যাওয়ার সময়ে আমাকে একা পেয়ে বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। আমি ছাড়াও, আরও সাত-আট জনকে মারধর করেছে।’’ স্থানীয় যুবক তাপস মালিকের অভিযোগ, “আমরা সবাই রং খেলছিলাম। তখন বিজেপির লোকেরা এসে গেরুয়া রং মাখতে বলে। আমরা তা অস্বীকার করায় ১০-১২ জন মিলে আমাকে মারধর করে।’’
বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী খোকনবাবুর অভিযোগ, ‘‘রং খেলা নিয়ে বিজেপি এলাকায় উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করেছে। লোক জড়ো করে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলা চালিয়েছে।’’ তা মানতে চাননি বিজেপির এই বিধানসভার আহ্বায়ক কল্লোল নন্দন। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘যেখানে তৃণমূল হামলা চালাবে, সেখানেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধ হবে। সোমবার বিকেলে আচমকা তৃণমূল হামলা চালায়। তার রেশ কাঞ্চননগর-রথতলা এলাকার সাতটি জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল।’’ পুলিশ জানায়, টানা অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। টহল বাড়ানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy