আব্বাস সিদ্দিকি।
আব্বাস সিদ্দিকিকে ‘কমরেড’ বলে আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিল তৃণমূল। ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা তথা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর প্রধান আব্বাসকে ওই ‘অস্ত্র’-এই ঘায়েল করার কৌশল নিয়েছে বাংলার শাসকদল। রবিবার বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর ব্রিগেড সমাবেশে ‘ঝোড়ো বক্তৃতা’ করে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন আব্বাস। এর পর তাঁকে ‘ফাঁকা মাঠ’ছেড়ে দিতে নারাজ শাসক শিবির। তাই ঠিক হয়েছে, মূলত তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতারাই আব্বাসকে ‘কমরেড’ বলে আক্রমণ করবেন। যার মারফতে তৃণমূল আক্রমণ শানাবে আব্বাস-সিপিএম সমঝোতার ‘অভ্যন্তরীণ সমীকরণ’ নিয়ে।
সোমবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘সিপিএমের লক্ষ্য আব্বাসকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসানো। কিন্তু আমরা ওদের সেই কাজে সফল হতে দেব না।’’ তাঁর মতে, সিপিএম একটি ধর্মনিরপেক্ষ দল। অন্য দিকে, আব্বাস ফুরফুরা শরিফের উত্তরাধিকারিদের অন্যতম। যিনি ইসলাম ধর্মের আশ্রয় নিয়ে সাম্প্রদায়িক প্রচারের দায়ে কাঠগড়ায়। ওই নেতার কথায়, ‘‘দু’পক্ষের আদর্শ ভিন্ন। অথচ তৃণমূলকে হারাতে এবং বিজেপি-কে সুবিধা করে দিতে সিপিএম-আইএসএফ উঠে পড়ে লেগেছে। সিপিএম তো আব্বাসকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতের পুতুলের মতো ব্যবহার করছে! সিপিএম-কংগ্রেস এবং আইএসএফের জোট আসলে সংখ্যালঘুদের বোকা বানাতেই তৈরি হচ্ছে। সেই সতর্কবার্তা পৌঁছতেই ‘কমরেড আব্বাস’ বলে আক্রমণ।’’
রবিবার ব্রিগেডের মঞ্চে আব্বাসের বক্তৃতার প্রতিটি শব্দকে বিশ্লেষণ করেছেন ত়ৃণমূল নেতৃত্ব। তারপরেই আক্রমণের রণনীতি তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, সিপিএম আব্বাসকে রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত আসনগুলি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ভাঙড়, ক্যানিং, বসিরহাটের বেশিরভাগ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে আব্বাসের দল। এমনকি, নন্দীগ্রাম আসনটিও বাম-শরিক সিপিআই আব্বাসকে ছেড়ে দিতে পারে জল্পনা। সেই নন্দীগ্রাম, যেখানে প্রার্থী স্বয়ং মমতা। অন্তত তিনি নিজে তেমনই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ফলে বাম-সমর্থিত আব্বাসকে নিয়ে তৃণমূলের মাথাব্যথা তৈরি হওয়ার কারণ রয়েছে বৈকি! সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় আব্বাসের প্রভাব ভেস্তে দিতে তৃণমূলের সংখ্যালঘু নেতারা মূলত সিপিএম জমানার সন্ত্রাসের কথাই তুলে ধরবেন বলে জানা গিয়েছে।
তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান তথা হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম সোমবার সরাসরিই বলেন, ‘‘ব্রিগেড সমাবেশের পর আমরা ওঁর নাম দিয়েছি ‘কমরেড আব্বাস’। ৩৪ বছর সিপিএম যখন সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করেছিল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আর কেউ তাঁদের পাশে দাঁড়াননি। তাই সিপিএমের করে যাওয়া সন্ত্রাস ও আব্বাসের নীতির মুখোশ আমরা একসঙ্গে খুলে দেব। কমরেড আব্বাসকে সংখ্যালঘুরা কখনওই মেনে নেবে না।’’ আরও একটি বিষয় নিয়ে সরব হতে চান তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ নাম নিলেই যে কেউ তা হয়ে যায় না, সে কথা তুলে ধরেও আব্বাসের দলকে আক্রমণ করবেন তাঁরা। আব্বাসের দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস দু’দলই যে তাঁদের ‘ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র’ হারিয়েছে, তা-ও তুলে ধরা হবে। সোমবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের প্রথমসারির নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগে আমাদের গর্ব হত বাংলায় রাজনীতি করা কংগ্রেস ও বামপন্থীরা কখনওই ধর্মীয় রাজনীতির সাহায্য নেবেন না। কিন্তু রবিবারের ব্রিগেড সমাবেশের পর আমরা আর সেকথা বলতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy