নির্বাচন কমিশনের নজরবন্দি থাকার মধ্যেই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ালেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ রামপুরহাটে দলীয় প্রার্থী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ঢুকেছিলেন অনুব্রত। বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন কমিশনের পক্ষে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মৃন্ময় দাস। দশ মিনিট ভিতরে কাটানোর পরে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন অনুব্রত। তিনি বেরোতেই এগিয়ে যান মৃন্ময়বাবু। অনুব্রতকে ডেকে নিয়ে বলেন, ‘‘কমিশন থেকে নির্দেশ এসেছে, আপনি এ বার নিজের বিধানসভা এলাকায় ফিরে যান।’’ অনুব্রত অবশ্য সে কথা বিশেষ পাত্তা দেননি। তিনি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে সবার সামনেই বলেন, ‘‘আপনার কাছে এই সংক্রান্ত কী অর্ডার আছে, আমাকে দেখান। অর্ডার দেখালে আমি ফিরে যাব।’’ দৃশ্যতই বিব্রত মৃন্ময়বাবু অবশ্য অনুব্রতর ওই বক্তব্যের কোনও জবাব দিতে পারেননি। তখন অনুব্রত বেশ জোরের সঙ্গেই স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘‘আমি এখান থেকে সিউড়ি যাব। সেখান থেকে দুবরাজপুর হয়ে বোলপুর ফিরব।’’ কনভয়ে চেপে বেরিয়ে যান কেষ্ট। ঘটনার পরে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সংবাদমাধ্যমকে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি মৃন্ময়বাবু।
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারির মধ্যে থেকে কাজ করতে কোনও সমস্যা হবে না বলে অনুব্রত মণ্ডল এ দিন সকালেই জানান। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখন পার্টি অফিসে-পার্টি অফিসে ঘুরব। জেলার ১১টা পার্টি অফিসেই যাব। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাক না সঙ্গে। কোনও সমস্যা নেই। আমি কি কোনও অন্যায় কাজ করছি?’’
বাড়ি থেকে বেরিয়েই প্রথমে নানুর পার্টি অফিসের দিকে এ দিন রওনা দেন অনুব্রত মণ্ডল। সঙ্গে যান ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মৃন্ময় দাশ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৮ জওয়ান এবং ভিডিওগ্রাফার অমিত বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনভর অনুব্রত যেখানে যাবেন, যা করবেন, সব কিছুর উপর নজর রাখবেন তাঁরা। সব কিছুর ভিডিও রেকর্ডিং হবে। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদই এই নজরদারি দল পৌঁছে যায় বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের বাসভবনের সামনে। প্রথম কয়েক ঘণ্টা অবশ্য নজরদারি দলের সঙ্গে দেখা হয়নি অনুব্রতর। বাড়িতে ঢোকার আগে কমিশনের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন মৃন্ময় দাশ।
অনুব্রত মণ্ডল বাইরে আসার পর অবশ্য সর্বসমক্ষেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি নিজের মেজাজেই কাজ করবেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী থাক না, আমার কোনও অসুবিধা নেই। ভোট করতে কোনও অসুবিধা হবে না। ভোট বাড়বে, কমবে না।’’ নজরদারি সত্ত্বেও সর্বসমক্ষেই তিনি এ দিন আবার বলেন, ‘‘বুথে বুথে গুড়বাতাসা মজুত থাকছে। যখন যাকে প্রয়োজন হবে দেব। মিডিয়াকেও গুড়বাতাসা দেব।’’ এই মন্তব্যকে সরাসরি হুমকি হিসেবেই দেখছে বিভিন্ন মহল।
আরও পড়ুন:
‘কোচ কেষ্ট’কে নজরবন্দি কমিশনের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy