এলাকায় চাঞ্চল্য। — নিজস্ব চিত্র।
চার দিন আগে বাড়ির কাছে পুকুরের জলে ডুবে মৃত্যু হয় আট বছরের এক শিশুর। ময়নাতদন্ত না করিয়েই পরিবারের লোকজন শিশুটির দেহ কবরস্থ করেছিলেন। কিন্তু মৃত শিশুটির বাবার সন্দেহ, ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তাঁর আবেদনের ভিত্তিতেই চার দিন পর দেহ কবর থেকে তুলে পাঠানো হল ময়নাতদন্তের জন্য। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম থানার কাঁদরা গ্রামে বুধবার কবর থেকে শিশুটির দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। গোটা ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাঁদরা গ্রামের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা শরিফ শেখ ও রিম্পা বিবির একমাত্র ছেলে জিসান শেখ (৮)। শরিফ ভিন্ রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। জিসানকে নিয়েই বাড়িতে থাকতেন রিম্পা। পরিবার সূত্রে খবর, গত শনিবার তাঁদের এলাকায় একটি বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। রিম্পা সেখানে ব্যস্ত ছিলেন। অন্য দিকে, জিসান বাড়ির কাছেই একটি পুকুরের ধারে খেলা করছিল। কিন্তু দুপুর দুটো বেজে গেলেও জিসানের কোনও হদিস পাওয়া না গেলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন রিম্পা। এর পর প্রতিবেশীদের নিয়ে শুরু হয় খোঁজ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেলে তুফান নামে স্থানীয় এক বালক খবর দেয়, পুকুরের জলে জিসানের দেহ ভাসছে। প্রতিবেশীরা জল থেকে জিসানের দেহ উদ্ধার করে রামজীবনপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রবিবার ময়নাতদন্ত না করেই তাঁর দেহ কবরস্থ করা হয়।
ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে সোমবার তড়িঘড়ি গ্রামে ফিরে পুলিশের দ্বারস্থ হন শরিফ। তাঁর দাবি, জিসানকে খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “দেহটি কবর দেওয়ার সময় আমার ছেলের নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসছিল। কানের নীচে কালশিটের দাগও ছিল।”
পরিবার সূত্রে আরও খবর, যে ছেলেটির সঙ্গে জিসান খেলা করছিল সেই নাবালক ছেলেটি মূক ও বধির। জিসানের মৃত্যর পর ওই নাবালকই প্রথম জানায়, অজ্ঞাত পরিচয় দুই ব্যক্তিকে সে দেখেছিল জিসানকে মারধর করতে। সোমবার পুলিশে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি আদালতেও আবেদন করেন শরিফ, যাতে দেহটি কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্ত করানো হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই বুধবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহটি কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
এ প্রসঙ্গে কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy