প্রায় দু’দশক পরে ঠিকানা বদলাচ্ছে কংগ্রেসের ‘ওয়ার রুম’! লোকসভা নির্বাচন-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের ‘গোপন মন্ত্রণা কক্ষ’ দিল্লির ১৫, গুরুদ্বার রাকাবগঞ্জ রোড থেকে এ বার সরে আসছে খান মার্কেটের কাছে একটি বাংলোতে। ‘সৌজন্যে’, নরেন্দ্র মোদী সরকার।
২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ‘ওয়ার রুম’ ছিল ৯৯, সাউথ অ্যাভিনিউ। ২০০৬ সালে তা ১৫, গুরুদ্বার রাকাবগঞ্জ রোডে সরে আসে। সেখানেই হতে থাকে নির্বাচনী রণকৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ। সনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন পরিচালনা করেছিলেন এই সরকারি বাংলো থেকে।
২০২০ সালে জুলাই মাসে রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি সচিন পাইলট যখন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন তখন রাকাবগঞ্জের ‘ওয়ার রুমে’ই দফায় দফায় সমঝোতা বৈঠক করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পরে কংগ্রেসের নতুন সাংসদদের সঙ্গে সনিয়া গান্ধী এই বাংলোতেই প্রথম বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তৈরি করা হয়েছিল, অত্যাধুনিক কনফারেন্স রুম, একাধিক অস্থায়ী কেবিন এবং নির্বাচনী তথ্য- পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের পরিকাঠামো।
গুরুদ্বার রাকাবগঞ্জ রোডের ওই সরকারি বাংলো এত দিন কংগ্রেস বা কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ কোনও সাংসদের নামে বরাদ্দ থাকত। সাংসদেরা অবশ্য থাকতেন অন্য জায়গায়। বাংলোয় ‘ওয়ার রুম’ চলত। সেই তালিকায় সর্বশেষ নাম ছিল, পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের। অভিযোগ, গত অগস্টে প্রদীপের মেয়াদ ফুরোতেই ‘সক্রিয়’ হয় মোদী সরকার। তড়িঘড়ি বাংলোটি বিজেপির সমর্থনে হরিয়ানা থেকে রাজ্যসভায় জিতে আসা নির্দল সাংসদ কার্তিকেয় শর্মার নামে বরাদ্দ করা হয়।
কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর, প্রদীপের রাজ্যসভার মেয়াদ ফুরোতে কংগ্রেসের অন্য কারও নামে এই বাংলো বরাদ্দ করা যায় কি না, সেই চেষ্টা করা হয়েছিল। তা সফল হয়নি। রাজ্যসভার আবাসন সংক্রান্ত কমিটি দ্রুত বাংলো খালি করার নির্দেশ দেয়। এমন পদক্ষেপের পিছনে ক্ষমতাসীন বিজেপির ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র ছাপ স্পষ্ট বলে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের দলের দাবি।
প্রাথমিক ভাবে বিকল্প হিসাবে সি-১/১০, সুব্রহ্মণ্য ভারতী রোডের দোতলা সরকারি বাংলোটি চিহ্নিত করেছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। বাংলোটি এখনও তেলঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদ উত্তমকুমার রেড্ডির নামে বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু উত্তম গত ডিসেম্বরে তেলঙ্গানার বিধানসভা ভোটে জিতে সে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছেন। সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়েছেন। ফলে তাঁকে নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে বাংলো ছাড়তে হবে। দিল্লির কোটলা মার্গে কংগ্রেসের নতুন সদর দফতরের কাজ প্রায় শেষ হলেও সেখানে ‘গোপন নির্বাচনী কার্যকলাপ’ চালানোর অসুবিধা। ফলে ল্যুটেনস দিল্লির খান মার্কেটে ‘বিকল্প’ বাছতে হয়েছে। নতুন ‘ওয়ার রুম’-এর দায়িত্ব পেয়েছেন কর্নাটক ক্যাডারের প্রাক্তন আইএএস অফিসার শশীকান্ত সেন্থিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy