—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল। দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা কমিটির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।
সোমবার উজ্জ্বল তাঁর ফেসবুক পেজে হিন্দি ও বাংলা ভাষায় লেখেন, “তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলে যে পরিবর্তন করা হয়েছে, সে বিষয়ে আমার সঙ্গে বিন্দুমাত্র আলোচনা করা হয়নি। স্পষ্ট করে একটা কথাই বলছি, যদি কোনও রকম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, তা হলে যিনি যুক্ত এবং যিনি তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন একমাত্র তাঁরাই দায়বদ্ধ থাকবেন। কুলটিতে দল এই বিষয়ে কোন দায়িত্ব নেবে না।” ফেসবুক পোস্টে কারও নাম না করলেও তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন উজ্জ্বল আসলে নিশানা করেছেন সংখ্যালঘু সেলের কুলটি ব্লকের সদ্য মনোনীত সভাপতি নাদিম আখতার ওরফে বাবলুকে। আসানসোল পুরসভার এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। নির্দল প্রার্থী হিসাবে পুর নির্বাচনে জেতা নাদিম কবে তৃণমূলে যোগ দিলেন, তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে দলের একাংশের মধ্যে।
এই বিষয়ে দলের প্রাক্তন বিধায়কের ক্ষোভের কথা জানতে পেরে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু বলেন, “নাদিম আখতার-সহ কয়েক জনকে নিয়ে কুলটিতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। নাদিম তৃণমূলে যোগদান করেছেন কি না আমার জানা নেই, আমি রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “পার্টিতে কেউ যোগদান করতে চাইলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেন, এটাই পার্টির নিয়ম। এখন যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা কার কথায় হয়েছে, তা আমার জানা নেই। যা হয়েছে তা এখন সবাইকে মেনে নিতে হবে।”
এই প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মাহফজুল হাসান মনু বলেন, “২০ দিন আগে এই তালিকা সবাইকে দেওয়া হয়েছিল, তখন কেউ কোনও প্রতিবাদ জানাননি, এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। নির্বাচনের আগে এটা মোটেই ঠিক নয়। উচ্চ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা-ই করা হবে।” যাঁকে নিয়ে এত অভিযোগ, সেই নাদিম আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় যখন তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন, তখন কুলটি এলাকায় দলের কাউকে জিজ্ঞাসা না করেই করা হয়েছিল। এটা কোন বিষয়ই নয়। আসলে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে, যা আমি হতে দেব না।”
জেলায় দলের অন্দরের এই কোন্দল নিয়ে শাসক তৃণমূলকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী দলগুলি। বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় জানান, আসলে এটা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ঝামেলা। আসানসোল পুরনিগমের ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাদিম আখতারের নামে এফআইআর হয়েছে। তার কাগজ আমি দেখেছি। ওঁর বিরুদ্ধে ৯০ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ আছে। এখন এলাকাছাড়া উনি পলাতক। তৃণমূল মানেই যে চোর, তা প্রতি মুহূর্তে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে।”
কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূল দলটা যে একটা চোরের দল, তা আরও এক বার প্রমাণিত। তৃণমূল কাউন্সিলর নাদিমের বিরুদ্ধে আসানসোল উত্তর থানায় এফআইআর হয়েছে। সেখানে তাঁকে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই রকম এক জন ব্যক্তিকে তৃণমূল কুলটি ব্লকের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি করেছে। এদেরকে দিয়েই ভোট লুটের চেষ্টা করবে তৃণমূল।” সিপিএম অবশ্য এই নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি দু’দলকেই আক্রমণ করেছে। সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল দলে চুরি- ডাকাতির অভিযোগ থাকবে, এটা নতুন কিছু নয়। দেশ এবং বাংলা জুড়ে তৃণমূল এবং বিজেপির প্রতিযোগিতামূলক অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে মানুষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy