(বাঁ দিক থেকে) অধীর চৌধুরী, জীবনকৃষ্ণ সাহা, ইউসুফ পাঠান, অপূর্ব সরকার (ডেভিড)। —ফাইল চিত্র।
যত দিন যাচ্ছে, ততই তীব্র হচ্ছে বহরমপুরের ভোটযুদ্ধ। পঁচিশ বছরের গড় ধরে রাখার লড়াই করছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রার্থী ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান প্রচারে নেমে ঝড় তুলেছেন। অন্তত তাঁর সমর্থকদের তেমনই দাবি। এ ছাড়াও বিজেপি প্রার্থী চিকিৎসক নির্মলচন্দ্র সাহা প্রচারে নামায় ভাল সাড়া মিলছে বলে পদ্মসূত্রে খবর। এমন ত্রিমুখী যুদ্ধে নানা কৌশল অবলম্বন করছে সব রাজনৈতিক পক্ষ। বহরমপুর লোকসভার অন্তর্গত বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা বর্তমানে জেলবন্দি। বিধায়ক গ্রেফতার হয়ে থাকার ঘটনা একটু হলেও ‘চাপ’-এ রেখেছে শাসকদলকে। তাই সেই ‘চাপ’ কাটিয়ে যাতে বড়ঞা বিধানসভা থেকে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ ভাল ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারেন, সেই লক্ষ্যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের ডেভিডকে।
বহরমপুর এবং মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব জেলার রাজনীতিতে ডেভিড নামেই পরিচিত। বছর পাঁচ-ছয়েক আগে পর্যন্ত যিনি অধীর-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। মুর্শিদাবাদ জেলার রাজনীতিতে সেই অধীরের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই কংগ্রেস ছেড়েছিলেন ডেভিড। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অধীরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৮১ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি কান্দি বিধানসভার বিধায়ক। সেই ডেভিডকেই জেলার দু’টি লোকসভা আসনের পাশাপাশি বড়ঞা বিধানসভা এলাকায় পৃথক ভাবে নজরদারি করতে বলেছেন তৃণমূলের নেতৃত্ব। গত বছর ১৭ এপ্রিল নিজের বাসভবন বড়ঞা থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন জীবনকৃষ্ণ। লোকসভা নির্বাচনে নিয়োগ-দুর্নীতি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসুক, চাইছেন না তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই বহরমপুরের ভোটে জীবনকৃষ্ণের গ্রেফতার বিষয়টিও প্রচারে আনতে চাইছে না শাসকদল। বরং জেলা সভাপতিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে অধীরকে তাঁর দুর্গে পরাজিত করার লক্ষ্যই স্থির করেছে তৃণমূল।
এ প্রসঙ্গে অপূর্বকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “দু’টি লোকসভা ভোটের ভোট পরিচালনার দায়িত্ব আমাকে সভাপতি হিসেবে পালন করতে হবে। সঙ্গে কান্দি আমার নিজের বিধানসভা, সেখান থেকে যাতে ইউসুফ পাঠান ভাল ব্যবধানে এগিয়ে যেতে পারেন, আমাকে সেই বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে। পাশাপাশি বড়ঞার ক্ষেত্রেও আমাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। এর বেশি আমি কিছুই বলতে পারব না।” বড়ঞায় প্রচারে গিয়ে যাতে প্রার্থী ইউসুফকে জীবনকৃষ্ণ গ্রেফতারি নিয়ে যাতে কোনও অপ্রীতিকর প্রশ্নের মুখে না পড়তে হয়, সেই বন্দোবস্ত রাখতে হচ্ছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকেই। তা ছাড়া বড়ঞায় ভোটপ্রচারে নেমে যাতে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত জেলবন্দি বিধায়কের নাম উল্লেখ না করা হয়, সেই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy