Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

লোকসভা ভোটের প্রচারে বাংলায় ২৩টি সভা নরেন্দ্র মোদীর, সেগুলির মধ্যে জয় কোথায়, কোথায় হার?

দেশে ভোটঘোষণার আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গে সভা করতে আসছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভোটঘোষণার পর সেই সভার সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। সব মিলিয়ে ২৩টি জনসভা করেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৪ ১৫:৩৩
Share: Save:

বাংলায় ভোটঘোষণার আগে থেকে ভোটের শেষ দফার প্রচার পর্যন্ত মোট ২৩টি সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যে একাধিক কেন্দ্রে জোড়া জনসভা করেছেন তিনি। ভোটের ফল প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, মোদী যাঁদের হয়ে জনসভা করেছিলেন, সেই বিজেপি প্রার্থীদের মধ্যে ভোটে জিতেছেন সাত জন। যে ২৩টি জনসভা মোদী করেছেন, তার মধ্যে এক একটি সভায় তিনি প্রচার সেরেছিলেন একাধিক কেন্দ্রের হয়ে। সেই নিরিখে মোদীর প্রচার করে যাওয়ার পরে ভোটে হার হয়েছে ১২টি কেন্দ্রে। আর বিজেপি জিতেছে সাতটি আসনে।

ভোটঘোষণার আগে মোদী জনসভা করেছেন আরামবাগ, কৃষ্ণনগর, বারাসত এবং দার্জিলিঙে। সন্দেশখালি-পরবর্তী পর্যায়ে বারাসতের সভাটি ছিল পুরোপুরি মহিলাকেন্দ্রিক। তাতে হাজির ছিলেন বসিরহাটের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র। এর পরে দেশে সাত দফায় ভোটঘোষণা হয়। তার পরে আবার বাংলায় সভা করতে আসতে থাকেন মোদী। সেই দফায় তিনি সভা করেন উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদহ উত্তর কেন্দ্রে। দক্ষিণবঙ্গের বর্ধমান-দুর্গাপুর, কৃষ্ণনগর, বোলপুর, হাওড়া, আরামবাগ, হুগলি, ব্যারাকপুর, বারাসত, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর, যাদবপুর এবং মথুরাপুর কেন্দ্রে সভা করেন মোদী। সব মিলিয়ে ২৩টি জনসভা।

ফলঘোষণার পরে দেখা যাচ্ছে আরামবাগ, কৃষ্ণনগর, বারাসত, কোচবিহার, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বোলপুর, হাওড়া, হুগলি, ব্যারাকপুর, ঝাড়গ্রাম, যাদবপুর এবং মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। অন্য দিকে, জিতেছেন জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদহ উত্তর, পুরুলিয়া এবং বিষ্ণুপুর আসনের বিজেপি প্রার্থীরা।

আরামবাগ আসনে গত লোকসভায় তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ব্যবধান ছিল সামান্যই। পদ্মশিবিরের বঙ্গবিজয়ের পরিকল্পনায় তাই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল ওই আসনের উপর। কিন্তু আরামবাগে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। জিতেছেন একেবারে আনকোরা মিতালি বাগ। পেশায় যিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। গত বারের পর এ বারেও কৃষ্ণনগরে জিতেছেন মহুয়া মৈত্র। সেখানে আবার জোড়া সভা করেছিলেন মোদী। ফোনে কথা বলেছিলেন বিজেপির প্রার্থী অমৃতা রায়ের সঙ্গে। সেই ফোনালাপও কার্যত প্রচারেরই শামিল। তবে অমৃতা জেতেননি।

দার্জিলিং আসনটির জন্য শিলিগুড়িতে জনসভা করেছিলেন মোদী। সভায় ভিড় দেখে প্রশংসা করেছিলেন। দার্জিলিং ‘মান’ রেখেছে মোদীর। ওই আসনটি এ বারও গিয়েছে পদ্মের ঝুলিতে। বারাসতে মোদী মহিলা সম্মেলন করেছিলেন ভোটঘোষণার আগে। ভোটঘোষণার পরে বারাসতের অশোকনগরে আরও একটি সভা করেন মোদী। সেই জোড়া সভাও জেতাতে পারেনি বিজেপি প্রার্থীকে। কোচবিহারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের হয়ে সভা করেছিলেন মোদী। কিন্তু ভোটে হেরে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘ডেপুটি’ নিশীথ। বস্তুত, তৃণমূল ওই আসনটি জিতেই এ বার উত্তরবঙ্গে তাদের খাতা খুলেছে।

উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে একটি সভা করেছেন মোদী। সেখানে অবশ্য এ বারেও জিতেছে বিজেপি। রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট আসনের জন্যে সভা করেছিলেন মোদী। দু’টি আসনই বিজেপি ধরে রেখেছে। এর মধ্যে বালুরঘাটে জিতেছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবে তাঁর জয়ের ব্যবধান খুব ‘স্বস্তিদায়ক’ নয়। গত বারের চেয়ে জয়ের ব্যবধান অনেকটাই কমেছে তাঁর।

মোদী সভা করতে এসেছিলেন মালদহ উত্তরেও। সেখানে বিজেপির প্রার্থী ভোটে জিতে মোদীর ‘মুখরক্ষা’ করতে পেরেছেন। কিন্তু বর্ধমান-দুর্গাপুরে মোদীর সভা দিলীপ ঘোষকে জেতাতে পারেনি। বোলপুর, হাওড়া এবং হুগলিতেও সভা করেছিলেন মোদী। এর মধ্যে হুগলি আসনটি ছিল বিজেপির হাতেই। সেটি হেরেছে বিজেপি। দেখা গিয়েছে, হুগলির সব ক’টি কেন্দ্রেই পরাস্ত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা।

বিজেপির হয়ে ভোটে জিতে সাংসদ হয়ে তৃণমূলে যোগ দেন অর্জুন সিংহ। কিন্তু গত বারের মতোই এ বারেও তৃণমূল তাঁকে টিকিট না দেওয়ায় অর্জুন ফিরে যান বিজেপিতে। বিজেপি তাঁকে আবার ব্যারাকপুরে টিকিট দেয়। মোদী নিজে প্রচারে এসেছিলেন ওই কেন্দ্রে। তবুও ব্যারাকপুর জিততে পারেননি অর্জুন। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুরেও জনসভা করেছেন মোদী। ওই তিন আসনের মধ্যে ঝাড়গ্রামে হেরে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। পুরুলিয়া, বিষ্ণুপুর এ বারও থেকে গিয়েছে বিজেপির হাতে। বারাসতে মহিলাদের নিয়ে সভার পর ওই কেন্দ্রের অশোকনগরেও পৃথক সভা করেন মোদী। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। বারাসতে আবার জিতেছেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তৃণমূলের ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলে পরিচিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার দু’টি আসন যাদবপুর এবং মথুরাপুরেও সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে মথুরাপুর নিয়ে ‘আশাবাদী’ ছিল রাজ্য বিজেপি। কিন্তু দুই আসনেই তারা হেরেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE