এনডিএ-র বৈঠকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে জোটসঙ্গী চন্দ্রবাবু নায়ডু, নীতীশ কুমার, ও একনাথ শিন্দে। বুধবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। ছবি: হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যানেল থেকে।
দিল্লিতে এসেই সরকারকে সমর্থনের বিনিময়ে নরেন্দ্র মোদীর কাছে এক গুচ্ছ দাবিদাওয়া জানিয়ে রাখলেন এনডিএ-র সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দুই শরিক- নীতীশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নায়ডু। রাজ্যের জন্য বিশেষ প্যাকেজের পাশাপাশি নীতীশ আজ দলের জন্য চার পূর্ণমন্ত্রী ও একটি প্রতিমন্ত্রী পদ এবং চন্দ্রবাবু তিনটি পূর্ণমন্ত্রী ও দু'টি প্রতিমন্ত্রীর পদ চেয়ে তদ্বির করেছেন। শুধু তাই নয়, স্পিকার পদও চাইছেন চন্দ্রবাবু।
বিজেপির সমস্যা বাড়িয়ে বিহারের চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি, জিতনরাম মাঁঝির হাম, উত্তরপ্রদেশের আপনা দল, মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্দের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা নিজেদের প্রাপ্য বুঝে নিতে আস্তিন গোটাতে শুরু করে দিয়েছে। লক্ষ্য বিজেপিকে চাপে রেখে বেশি সংখ্যক মন্ত্রিত্ব আদায় করে নেওয়া।
ভোটের আগে নীতীশের সঙ্গে বিজেপির যে সমঝোতা হয়েছিল, তাতে এনডিএ ক্ষমতায় এলে নীতীশকে তিনটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে হাঁসফাঁস করা বিজেপির কাছে চারটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ চেয়েছেন নীতীশ। সূত্রের মতে, মূলত পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রকগুলির দিকে নজর নীতীশের। যার মধ্যে রয়েছে রেল, গ্রামোন্নয়ন, জলসম্পদের মতো মন্ত্রক। সূত্রের মতে, বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি ২০২৩ সালে বিহারে নীতীশ আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার পরে রাজ্যের প্রায় ৯৫ লক্ষ পিছিয়ে থাকা পরিবারকে দু'লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করার কথা ঘোষণা করেছেন। আগামী বছর বিহারে নির্বাচন। তাই পাঁচ বছরের ওই প্রকল্পে কেন্দ্র যাতে চলতি অর্থবর্ষে নিজেদের অংশের টাকা বাড়ায়, সেই দাবি জানিয়েছেন নীতীশ। সুত্রের মতে, ইউপিএ-র ধাঁচে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অন্য দিকে চন্দ্রবাবুর দাবি, তিনটি পূর্ণমন্ত্রী ও দু'টি প্রতিমন্ত্রী পদ। নীতীশের মতোই জলসম্পদ, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে নিজেদের সাংসদের দেখতে চাইছেন চন্দ্রবাবু। তালিকায় রয়েছে সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকও। এ ছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলঙ্গানা হওয়ায় রাজ্যের আর্থিক চাপ সামলাতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি করে প্রায় এক দশক ধরে সরব নায়ডু। সূত্রের মতে, এই মুহূর্তে রাজ্যের মাথায় সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকার দেনা। যা মেটাতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়েছেন নায়ডু।
ছোট দলগুলির মধ্যে বিহারে চিরাগ পাসোয়ানের পেয়েছে ৫টি আসন। তাঁদের দাবি, একটি পূর্ণ ও একটি প্রতিমন্ত্রী পদ। ওই রাজ্যেই একটি আসন পেয়েছে জিতনরাম মাঁঝির হাম। তাঁদেরও দাবি, একটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ। মহারাষ্ট্রে সাতটি আসন পেয়েছে একনাথ শিন্দের শিবসেনা। তারাও এক জন পূর্ণ ও এক জন প্রতিমন্ত্রীর দাবি জানিয়েছে। মন্ত্রিত্ব পেতে মুখিয়ে রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের আরএলডি দলের জয়ন্ত চৌধরী, আপনা দলের অনুপ্রিয়া পটেল, জেডিএসের এইচ ডি কুমারস্বামীরাও। অতীতে মোদী সরকারের যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল, এই সব ছোট দলকে গুরুত্ব দিতেই দেখা যায়নি বিজেপিকে। পরিস্থিতির ফেরে এখন ছোট দলের দাবি মানা ছাড়া রাস্তা নেই বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দাবি না মানা হলে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর ভয় রয়েছে। যদিও বিজেপির এক নেতার কথায়, "যদি নীতীশ বা নায়ডুর এক জনও বেরিয়ে যান, তা হলে সরকার পড়ার সম্ভাবনা নেই। তবে দু'জন যদি এনডিএ পরিত্যাগ করেন, সমস্যা তৈরি হবে।" যদিও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, একনায়কের ধাঁচে প্রথমে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ও পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দশ বছর দেশ চালানোর পরে শরিকি কাঁটা কি সামলাতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy