Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

উৎসবের মধ্যেই রাজনীতির আঁচে তেতে উঠল গ্রাম

মঙ্গলবার থেকে যোগ্যদা পুজো শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায় মাইক বাজছে বেশ কিছু জায়গায়। অভিজিতের বাড়ির কাছেই পুজো হচ্ছে।

দেহ উদ্ধারের পরে বিজেপির বিক্ষোভ।

দেহ উদ্ধারের পরে বিজেপির বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

সুদিন মণ্ডল
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৪ ০৮:৪৪
Share: Save:

একতলা ভাঙাচোরা বাড়ি। স্ত্রীয়ের তেলেভাজার দোকানের উপরেই মূলত সংসার চলে। যখন পেতেন, শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন বাড়ির কর্তা অভিজিৎ রায়। বৃহস্পতিবার মন্তেশ্বরের শেলিয়া গ্রামে বিজেপির বুথ সভাপতি অভিজিতের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। বিষয়টি আত্মহত্যা না খুন, তা নিয়ে চাপান-উতোরও দেখা যায় বিজেপি, তৃণমূলে। যদিও পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যের দাবি, আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক। তাঁর নেশা করার অভ্যাস, সংসার তা নিয়ে নিত্য ঝামেলার কথা জানয়েছেন তাঁরা। তবে ভোট মিটতে না মিটতেই এমন ঘটনার খুব একটা যেন প্রভাব নেই গ্রামে।

মঙ্গলবার থেকে যোগ্যদা পুজো শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায় মাইক বাজছে বেশ কিছু জায়গায়। অভিজিতের বাড়ির কাছেই পুজো হচ্ছে। বুধবার রাত ৩টে পর্যন্ত যাত্রাপালাও হয়। অভিজিৎ বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সেখানে যান, মদ্যপান করেন বলে জানা গিয়েছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, বুথ খরচ বাবদ টাকা পেয়ে নেশা করা বেড়ে গিয়েছিল অভিজিতের। মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি কুমারজিত পান বলেন, ‘‘এলাকার সবাই জানেন বিজেপির ওই কর্মী নেশা করতেন। লোকসভা ভোটের বুথ খরচ পেয়ে নেশা বেড়ে গিয়েছিল। বুধবার গ্রামে পুজো থাকায় বন্ধুবান্ধব জুটে যায়। এখন পরাজয় নিশ্চিত জেনে মিথ্যা খুনের অভিযোগ করছে বিজেপি।’’

বিজেপি নেতারা সকালে ঘটনাটিকে খুন বলে দাবি করে থানায় বিক্ষোভ দেখান। ছিলেন মণ্ডল সভাপতি ঝুলন হাজরা, বিজেপির বর্ধমান জেলার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পোদ্দার, জেলা সভাপতি (বর্ধমান সদর) অভিজিৎ তা। তাঁদের দাবি, এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন অভিজিৎ। লোকসভা ভোটেও তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করে গ্রামে ভোট করিয়েছেন। এর জন্য তাঁকে হুমকিও দিয়েছিল তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তারই মূল্য দিতে হল ছেলেটাকে। দেহটি মাটি থেকে যতটা উপরে ছিল, তাতে আত্মহত্যা হওয়া মুশকিল বলেও দাবি করেন তাঁরা। থানায় যান মৃতের বাবা অরুণ রায় ও ভাই বিশ্বজিৎ রায়। বাবা কলকাতায় একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। তিনি নেশার কারণে ছেলে-বৌমার অশান্তির কথা জানিয়েছেন। তবে খুনের কথা মানেননি। একই দাবি ভাইয়েরও। যদিও বিজেপির দাবি, অভিজিতের ভাই তৃণমূল করেন। দলকে বাঁচাতে ঘটনাটি চাপা দিতে চাইছেন তিনি।

মৃতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় একাদশ ও নবম শ্রেণির পড়ুয়া দুই নাতনিকে নিয়ে রয়েছেন অভিজিতের মা অর্পিতা রায়। তিনি জানান, আগেও অভিজিৎ বার দুয়েক আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। নিয়মিত নেশাও করতেন।

ওই গ্রামের বাসিন্দা অনুপম ঘোষ গত বিধানসভা ভোটে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘অভিজিৎ আমার বন্ধু ছিল। রাজনীতিই ওকে শেষ করে দিল।’’ তাঁর কথা চাপা পড়ে যায় পুজোর মাইকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Manteshwar BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy