প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে গত কাল ‘হিটলার’ বলে আক্রমণ করেছিল তৃণমূল। আজ সেই পথে হাঁটল কংগ্রেসও।
দিন দুয়েক আগে এক সাক্ষাৎকারে মোদী দাবি করেছিলেন, তাঁর সরকারের কাজের প্রভাব হাজার বছর থাকবে। তার পরেই তাঁর সঙ্গে হিটলারের তুলনা করে বিঁধেছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। প্রধানমন্ত্রীকে ‘নরেন্দ্র হিটলার মোদী’ সম্বোধন করেছিলেন তিনি। আজ কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনতে সংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, বিজেপি নেতারা সুপরিকল্পিত ভাবে প্রচার করে মোদীকে ঈশ্বরের অবতার হিসাবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বার মোদী নিজেও বলছেন তিনি পরমাত্মার প্রেরিত দূত। একই ভাবে হিটলারের প্রচারযন্ত্র তাঁকে ঈশ্বরের দূত বলত। বিশ্বের সমস্ত স্বৈরতান্ত্রিক নেতাদের এটা সাধারণ লক্ষণ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এ ভাবেই তাঁরা দেবত্ব
আরোপ করেন।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে মোদী বলেছিলেন, ‘‘যত দিন মা বেঁচেছিলেন, তত দিন আমার মনে হত আমি মাতৃগর্ভে জন্মেছি। কিন্তু মা চলে যাওয়ার পরে আমি নিশ্চিত হয়েগিয়েছি যে আমাকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন। আমার মধ্যে এই যে এত প্রাণশক্তি, তা ঈশ্বর আমাকে দিয়েছেন, কোনও কাজ করিয়ে নেবেন বলে।’’ গত কাল বিজেপি নেতা সম্বিত পাত্র, প্রভু জগন্নাথকে ‘মোদীর ভক্ত’ বলার পর বিতর্ক তৈরি হয়। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক-সহ বিভিন্ন মহল থেকে ক্ষোভ প্রকাশের পর সম্বিত বিষয়টিকে ‘মুখ ফস্কে’ বেরিয়ে গিয়েছে বলে ক্ষত মেরামতের চেষ্টা করেছেন। আজ শ্রীনতে বলেন, “এটা মুখ ফস্কে বেরিয়ে যাওয়া কথা নয়। পরিকল্পিত প্রচার। রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠার সময় বিজেপি একটি ছবি প্রকাশ করে, যেখানে দেখানো হয় রামলালার হাত ধরে মোদী মন্দিরে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে বিষ্ণু অবতার বলা হয় রামমন্দির ট্রাস্টের তরফে। গিরিরাজ সিংহও মোদীকে অবতার বলেন। কঙ্গনা রানাউত বলেছেন, ‘মোদী রামের অংশ’। সাক্ষী মহারাজের কথায়, ‘রামই মোদী’। এই একই জিনিস হিটলারের সময়েও হত। তাঁকেও ঈশ্বরের দূত বলা হত। গোয়েবলস সেই প্রচার চালাতেন।” এখানেই থামেননি শ্রীনতে। তাঁর কথায়, “শুধু হিটলারই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন স্বৈরাচারীদেরই এটা সাধারণ লক্ষণ। উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন বলতেন, তাঁর ভিতরে দৈবশক্তি রয়েছে। গত ১০ বছরে মোদী কী কাজ করেছেন তার হিসেব না দিয়ে আগামী ১ হাজার বছরের স্বপ্ন দেখানো, আসলে মানুষের নজর ঘোরানোর কৌশল।” কংগ্রেসের বক্তব্য, গত দশ বছরে উল্লেখ করার মতো কোনও কাজই মোদী সরকার করেনি। তাই, নির্বাচনে মেরুকরণকেই একমাত্র অস্ত্র করতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি নেতৃত্বকে।
আজ ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘‘আমরা এর আগে সংসদে দাঁড়িয়ে মোদী-অমিত শাহকে হিটলার এবং গোয়েবলস-এর সঙ্গে তুলনা করেছি। মোদী শুধুই সংখ্যার চমক দেখিয়ে মানুষকে ভোলাতে চেয়েছেন। কখনও বলেছেন বছরে ২ কোটি চাকরি হবে। কখনও বলেছেন, বিদেশ থেকে কালো টাকা এনে সকলের অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ নগদ দেওয়া হবে। আবার নোটবাতিলের পরে সমস্যা মেটাতে ৫০ দিন সময় চেয়েছিলেন। এমনকি কৃষকদের সমস্যা না বুঝেই ২০২২ সালের মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার কথা
বলেছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় প্রথমে ‘অমৃতকাল’ এবং তার পরে ‘ভিশন-২০৪৭’-এর গল্পকথা শুনিয়েছেন।’’ ডেরেকের মতে, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এ সবের কোনওটাই কাজ করেছে না। তাই একেবারে হিটলারের তৃতীয় রাইখের মতো হাজার বছরের কথা শুনিয়েছেন! তাঁর কথায়, ‘‘এ বার মানুষ মোদীর মিথ্যে ধরে ফেলেছেন। তাই তাঁর এই মিথ্যে স্বপ্নে তাঁরা ভুলবেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy