আগামী লোকসভা ভোটে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির উপর বিশেষ ‘নজর’ দিতে চলেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের অন্তর্বর্তী বাজেট (ভোট-অন-অ্যাকাউন্ট) বক্তৃতা শুনে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
লোকসভায় নির্মলা বলেন, ‘‘আমরা দেশের পূর্বাঞ্চলকে বৃদ্ধির আওতায় আনতে চাই। পূর্বাঞ্চলের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।’’ আর্থিক উন্নয়নের নিরিখে মধ্য ও উত্তর ভারতের বিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যের চেয়েই পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এগিয়ে। তবে কেন হঠাৎ পূর্বাঞ্চলের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে এত উতলা নরেন্দ্র মোদী সরকার? আর সেখানেই আলোচনায় আসছে লোকসভা ভোটের অঙ্ক।
আরও পড়ুন:
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ওই অংশের মতে, এ ক্ষেত্রে ‘পূর্বাঞ্চল’ বলতে একত্রে পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারতকে বোঝাতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কারণ, বিজেপির সাংগঠনিক ‘পূর্বক্ষেত্রে’র মধ্যে বাংলা ছাড়াও রয়েছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, আন্দামান ও নিকোবর। এ ছাড়াও রয়েছে সিকিম, অসম, ত্রিপুরা-সহ উত্তর-পূর্বের সব রাজ্য। ‘মিশন ৪০০’ সফল করতে এই অঞ্চলকেই ‘পাখির চোখ’ করেছেন মোদী-অমিত শাহরা। কারণ, গত লোকসভা ভোটে উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম ভারতে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিলেন তাঁরা। ওই রাজ্যগুলিতে আসন বৃদ্ধির তেমন সুযোগ নেই। যা রয়েছে পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে।
আরও পড়ুন:
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্য এবং বিহার ও ঝাড়খণ্ডে বিজেপি আর তার সহযোগীরা অধিকাংশ আসনে জয় পেলেও ব্যতিক্রম ছিল বাংলা এবং ওড়িশা। এ রাজ্যের ৪২টির মধ্যে ১৮ এবং ওড়িশার ২০টির মধ্যে ৮টিতে জিতেছিল ‘পদ্ম’। দেশের ৫৪৩টি লোকসভার মধ্যে তাদের ঝুলিতে এসেছিল ৩০৩টি। ‘অব কি বার চারশো পার’ করে ‘তিসরি বার মোদী সরকার’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কেরলের পাশাপাশি তাই ‘পূর্বক্ষেত্র’কেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ওড়িশায় লোকসভা ভোটের সঙ্গেই বিধানসভার ভোট হবে।
আরও পড়ুন:
ঘটনাচক্রে, গত এক সপ্তাহে পূর্ব ভারতের দুই রাজ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির নাটকীয় বদল হয়েছে। বিহারে বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে এনডিএতে ফিরেছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ। ঝাড়খণ্ডে ‘ইন্ডিয়া’র নেতা হেমন্ত সোরেনকে দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করেছে ইডি। সেখানে বিধায়ক কেনাবেচার মাধ্যমে বিজেপি ক্ষমতা দখল করতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই।