(বাঁ দিক থেকে ডান দিকে) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অগ্নিমিত্রা পাল, হিরণ চট্টোপাধ্যায়ে এবং প্রণত টুডু। —ফাইল চিত্র।
ষষ্ঠ দফায় শনিবার ভোটগ্রহণ হয়েছে রাজ্যের আট কেন্দ্রে। কিন্তু দেখা গেল, চার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীকে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ‘উত্ত্যক্ত’ হতে হল দফায় দফায়। কোনও বুথে ভোট পরিদর্শনে গিয়ে কোনও প্রার্থী শুনলেন ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। কাউকে কাউকে আবার কোনও নির্দিষ্ট এলাকায় কার্যত ‘বোতলবন্দি’ হয়ে থাকতে হল।
ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী তথা অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের ভোটটা সারা দিন কেশপুরেই কেটে গেল। কখনও নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে কনভয়ে গাড়ি থাকার অভিযোগে হিরণকে থামাল পুলিশ। কখনও তাঁর কনভয়ের সামনে শুয়ে পড়ে পথ আটকে দিলেন মানুষ। হিরণের অভিযোগ, তাঁরা সবাই তৃণমূলের লোক। দিনের শেষে হিরণ বলেছেন, ‘‘কেশপুরে ভোট হয়নি। সারা দিন পাগলু ডান্স হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, ‘পাগলু’ দেব অভিনীত একটি ছবির নাম। যিনি ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী এবং গত দু’বারের সাংসদ।
ঝাড়গ্রামের বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডুকে দিনের বেশির ভাগ সময় ব্যস্ত থাকতে হল গড়বেতা নিয়েই। একদল লোকের (অভিযোগ, তাঁরা তৃণমূলের লোক) তাড়া খেয়ে ছুটতে হল তাঁকে। পাশাপাশি, তাঁর মাথাতে ইটের আঘাত লেগেছে বলে দাবি প্রণতের। মাথায় ব্যান্ডেজও করতে হয়েছে তাঁকে। আহত হয়েছেন এক জন সিআরপিএফ জওয়ানও। গড়বেতার ওই ঘটনার পর প্রণত বলেছেন, ‘‘প্রার্থী হিসাবে আমি এখানে এসেছিলাম। খবর ছিল, এখানে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ-প্রশাসন বলে কিছু নেই। আমাদের তরফে কোনও প্ররোচনা ছিল না। এরা ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রামকে সন্দেশখালি বানিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। এখানে আমাদের ভোটারেরা ভোট দিতে পারছেন না। নিরাপত্তারক্ষী ছিল বলে আমি বেঁচেছি। না হলে প্রাণ নিয়ে ফিরতে পারতাম না।’’
অন্য দিকে, মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল এবং তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কেও খড়্গপুর গ্রামীণ, হলদিয়ার মতো এলাকায় ঘিরে ধরে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়েছে দফায় দফায়। কখনও অভিজিৎ মেজাজ হারিয়ে বলেছেন, ‘‘মেরে হাড়গোড় ভেঙে দেওয়া হবে।’’ কখনও অগ্নিশর্মা হয়েছেন অগ্নিমিত্রা।
বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই তাঁদের প্রার্থীদের উত্ত্যক্ত করতে চেয়েছিল। এটা ছিল তৃণমূলের পরিকল্পিত কৌশল। বিজেপি মুখপাত্র তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, ‘‘তৃণমূল এ সব করে প্রার্থীদের ব্যতিব্যস্ত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। মানুষ ভোট দিয়েছে। তৃণমূল হারছে।’’
পাল্টা তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন বলেছেন, ‘‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ঘিরে যা বিক্ষোভ হয়েছে, তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর কুরুচিকর মন্তব্যের ফল। বাকি জায়গাতেও বিজেপি প্রার্থীরা বাংলা-বিরোধিতার জন্য সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন। এখানে তৃণমূলের কোনও পরিকল্পনা নেই।’’
ঘটনাচক্রে, অগ্নিমিত্রা, হিরণেরা কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও সরব হয়েছেন। সাতসকালেই কেশপুরে হিরণ বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূল, পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলে ম্যাচ ফিক্স করেছে।’’ তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার বলেছেন, ‘‘যতটুকু ভূমিকা পালন করার, তা করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীই।’’ তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, কাঁথি এবং পুরুলিয়া নিয়ে দিনভর কোনও বড় গোলমালের খবর পাওয়া যায়নি। যদিও শুভেন্দুর অভিযোগ, ইন্দাসে তৃণমূল ব্যাপক ভোট লুট করেছে। তবে এই চার কেন্দ্রের প্রার্থীদের কেউ বড় কোনও অভিযোগ তোলেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy