Advertisement
Back to
Lok Sabha Election 2024

লোকসভা ভোটে সারা দেশে বাংলার জন্যই সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী! জম্মু ও কাশ্মীরও অনেক পিছনে

কমিশনের এই সিদ্ধান্তে খুশি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। কংগ্রেস বা বামেদের বক্তব্য, শুধু বাহিনী মোতায়েন করলেই হবে না, তারা যাতে সক্রিয় থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সাথী চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:০৭
Share: Save:

লোকসভা ভোটে বাংলার জন্যই সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে পাঠানো চিঠিতে কমিশন জানিয়েছে, লোকসভা ভোটে বাংলায় তারা ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে চায়। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। অন্য দিকে, কংগ্রেস বা বামেদের বক্তব্য, শুধু বাহিনী মোতায়েন করলেই হবে না, তারা যাতে সক্রিয় থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। শাসকদল তৃণমূল অবশ্য এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ।

বাংলার পরেই যে রাজ্যের জন্য সবচেয়ে বাহিনী চেয়েছে কমিশন, তা হল— জম্মু ও কাশ্মীর। সেখানে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন করানোর জন্য ৬৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের জন্য কমিশন চেয়েছে ২৫২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিহার এবং ছত্তীসগ়ঢ়ের জন্য যথাক্রমে ২৯৫ ও ৩৬০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, ওড়িশা এবং সিকিমে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। কমিশন কেন্দ্রকে জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার জন্য ২৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় তারা। অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমের জন্য যথাক্রমে ৭৫ ও ১৭ কোম্পানি বাহিনী হলেই চলবে। ঝাড়খণ্ড ও পঞ্জাবের জন্য ২৫০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। এই দু’টিই অ-বিজেপি রাজ্য। গোষ্ঠীহিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুরের জন্য কমিশন চেয়েছে ২০০ কোম্পানি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের জন্য ওই পরিমাণ বাহিনীই চাওয়া হয়েছে।

আসন্ন ভোটের জন্য দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে কত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা প্রয়োজন, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের মতামত জানতে চেয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, আধিকারিকেরা যা রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বাহিনীর জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশন কেন্দ্রকে জানিয়েছে, দেশ জুড়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করাতে অন্তত ৩ হাজার ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাজে লাগাতে চায় তারা। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জন্যই ৯২০ কোম্পানি বাহিনী চেয়েছে কমিশন। নির্বাচন কমিশন এখনও ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করেনি। ফলে এ রাজ্যে কত দফায় ভোট হবে, তা এখনও অজ্ঞাত। কমিশন জানিয়েছে, যত দফাতেই ভোট হোক না কেন, সব দফাতেই ওই ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। গোটা ভোট পর্ব মিটলেই রাজ্য ছাড়বে তারা।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দেওয়া জাতীয় নির্বাচন কমিশনের চিঠি।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দেওয়া জাতীয় নির্বাচন কমিশনের চিঠি।

হিসাব মতো, গত লোকসভায় যত কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে বাংলায় ভোট হয়েছিল, এই সংখ্যাটা তার চেয়ে অনেকটাই বেশি। গত লোকসভায় রাজ্যে মোতায়েন করা হয়েছিল ৭৪০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিরোধীদের অভিযোগ, তার পরেও নানা জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। পরে বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে হাজার কোম্পানিরও বেশি বাহিনী দিয়ে ভোট হয়েছিল। পঞ্চায়েত ভোট সাধারণ রাজ্য পুলিশ দিয়েই করিয়ে থাকে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোট তার ব্যতিক্রম। বিরোধীদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অন্তত ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করানোর কথা হয়েছিল। আসন্ন লোকসভা ভোটে বাংলার জন্য যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে কমিশন, তাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, ‘‘স্বাভাবিক ভাবেই বাংলায় অন্য রাজ্যের তুলনায় বেশি বাহিনী লাগবে। কারণ বাংলা চালায় তৃণমূল। সেখানে আইনশৃঙ্খলার কী পরিস্থিতি, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। গত বিধানসভা ভোট মিটতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে যাওয়ার পর আমরা ভোট পরবর্তী হিংসা দেখেছি। রাজ্যের মানুষ যাতে সুষ্ঠু ভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বেশি বেশি বাহিনী প্রয়োজন।’’

অন্য দিকে, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের যা অবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাতে নিজের ভোট নিজে দিতে পারাটা মুশকিলের ব্যাপার। কত কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে, সেটা বড় কথা নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল, তারা যেন এসে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। বুথে লুট হচ্ছে আর বাহিনী গাছতলায় বসে সরবত খাচ্ছে, সেটা হলে চলবে না।’’ একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, ‘‘বাহিনীকে বাহিনীর মতো করে কাজ করতে হবে। তৃণমূলের দলদাস হয়ে যাওয়া পুলিশের নির্দেশে বাহিনী কাজ করলে চলবে না।’’ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অবশ্য এখনই বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক বিষয়। এখনই এটা নিয়ে বলার মতো সময় আসেনি। যখন বলার হবে, তৃণমূল তার প্রতিক্রিয়া জানাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy